সেনাবাহিনী দুর্বল হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সেনাবাহিনী দুর্বল হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না

সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না। সেই সময়ে প্রতিবেশী দেশ হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিই চাচ্ছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা।

 

সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার সম্পর্কে এমন কথা বলেন তারা। সামরিক বিশেষজ্ঞ রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) আব্দুল হক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সময় এখন খুবই স্পর্শকাতর। ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেখে যাওয়া প্রেতাত্মারা খুব সরব। দক্ষতার সঙ্গে তারা পরিস্থিতি পাল্টে ফেলতে চাচ্ছে।

বিভিন্নভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তারা কিন্তু গত ১৬ বছর বসে ছিল না। অর্থবিত্ত চুরি-ডাকাতি করেছে, দেশের সম্পদ পাচার করেছে। কিছু লোক বাইরে চলে গেছে; আর যারা দেশে আছে, তারা সম্মিলিতভাবে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে সেনাবাহিনীকে সাধারণ মানুষের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাচ্ছে।
জনগণকেও সরকারের মুখোমুখি করাতে চাচ্ছে। ত্রিমুখী একটি সংঘর্ষ লাগানোর অপচেষ্টায় তারা লিপ্ত। এই অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের বন্ধুরা তাদের পরামর্শ দিচ্ছে, উৎসাহ দিচ্ছে এবং সর্বোপরি সাহায্য করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেনাবাহিনী হচ্ছে একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়লে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব টিকে থাকবে না।

সেই সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশ হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে। এই পরিস্থিতিই চাচ্ছে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসররা। শুধু ফ্যাসিস্ট না, ফ্যাসিস্টের চেয়ে যদি কঠিন শব্দ থাকে সে শব্দ হাসিনা ও তার দোসরদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়। শুধু অর্থ লুটপাট না, এ দেশের মানুষের চরিত্রও ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে ওরা। এই চরিত্র ধ্বংস শুধু নিজেদের দলের মধ্যে না, প্রশাসনের চরিত্র ধ্বংস করেছে, পুলিশের চরিত্র ধ্বংস করেছে, রাষ্ট্রের যত স্টেকহোল্ডার রয়েছে, সবার চরিত্র ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। তারা জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। তারাই এখন চাচ্ছে দেশের পরিস্থিতি নানাভাবে অস্থিতিশীল করতে। এ জন্য দুর্বল লোকজন খুঁজে বের করছে। পরিস্থিতি বোঝার জন্য ম্যাচুরিটি লাগে। বুঝতে হবে রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভিতে নাড়া দিতে হয় না। এতে নিজেদেরই ক্ষতি হয়। পরিপক্বতার অভাবে তাদের দলকে দুর্বল ভাববে মানুষ। দলটার প্রতি সাধারণ মানুষ আগ্রহ দেখিয়েছিল; কিন্তু সেনাবাহিনী প্রধান, সেনাবাহিনীর প্রতি রুখে দাঁড়ানোর হুমকি, দেশকে টালমাটাল করার চেষ্টা যারা করে, তাদের প্রতি তো মানুষ আস্থা রাখতে পারবে না। তারা ভুল করেছে। যেকোনো মূল্যে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি সামরিক ও সামাজিক বিশেষজ্ঞ হিসেবে বলব, এখনো যদি পরিস্থিতির অবনতি হয়, মানুষ আর্মির কাছে চলে যাবে। এখন যদি আর্মি উঠিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি কী হতে পারে আপনারা কল্পনা করতে পারছেন? রাস্তায় হাঁটার মতো পরিস্থিতি থাকবে না। এই বিষয়টি অনেকে বোঝেন না। যদি গণ্ডগোল লাগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসই বলবেন, আর্মি নামাও। তখন বাধ্য হয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে। আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা এই পরিস্থিতিই সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। সামরিক বাহিনী সম্পর্কে ঘরোয়াভাবে যে কথা বলা যায়, প্রকাশ্যে তা বলা উচিত না। সেনাবাহিনী প্রধান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তাঁর মর্যাদার সঙ্গে সেনাবাহিনীর মর্যাদাও জড়িত। কেউ যদি ঘরোয়া আলোচনায় কিছু বলে থাকেন, সেটা প্রকাশ করা ঠিক না। কেউ কি তাদের ঘরের কথা বাইরে প্রকাশ করেন? কোনো ব্যক্তির নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। সেই মতামত তো বাইরে প্রকাশ করা ঠিক হয়নি। উনি তো কাউকে ডেকে নিয়ে যাননি। যাঁরা এই অপরিপক্ব কাজটি করেছেন, তাঁরাই  এখন বলছেন, আমাদের ভুল হয়ে গেছে।’

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. বায়েজিদ সরোয়ার বলেন, ‘ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পক্ষে একাত্ম থাকে। ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বা জুলাই বিপ্লবের সময় সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী বাঁকবদলকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আন্দোলনকারী জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল। পরবর্তী সাত মাসে পুলিশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্বল অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা ও অন্তর্বর্তী সরকারের শক্তিশালী কার্যকর শক্তি হলো সেনাবাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বিষোদগার অত্যন্ত দুঃখজনক  ও অনভিপ্রেত ঘটনা। আমরা জটিল ও কঠিন সময় পার করছি। এই সময় জুলাই বিপ্লবের অসাধারণ সাহসী ও বীরত্বসুলভ ভূমিকা পালনকারী কিছু তরুণ নেতার (বর্তমানে এনসিপি নেতা)  সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনীবিরোধী আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেশে বিভাজন তৈরি করতে পারে এবং কৌশলগতভাবে রাষ্ট্রকেই দুর্বল করতে পারে। এখন সব পক্ষের ধৈর্য ও বিচক্ষণতা কাম্য। এই ক্রান্তিলগ্নে প্রয়োজন ঐক্যের।’

মেজর জেনারেল (অব.) মো. নাঈম আশফাকুর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের একটাই উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, ইন্টিগ্রেশন। আমাদের অবজেক্টিভ হওয়া দরকার ঐক্য। ভিন্নমত থাকতেই পারে। একেকজনের একেক ধরনের মতামত হবে—এটাই বিউটি অব ডেমোক্রেসি। কিন্তু দেশের ইউনিটিকে ধ্বংস করা কারোরই উচিত না। বিশেষ করে যাঁরা কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নেতৃত্বে আছেন। তিনি স্টুডেন্ড লিডার অথবা পলিটিক্যাল লিডার হলে তাঁর প্রতিটি বক্তব্যের প্রতিটি শব্দ জনগণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ জনগণ তাঁর প্রতিটি শব্দ তাঁর অনুপস্থিতিতে ইন্টারপ্রিটেশন করবে এবং নিজেদের মতো করে বুঝে নেবে। এ জন্য তিনি কী বাক্য, শব্দ ব্যবহার করবেন, তার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, কী কী পদ্ধতিতে হতে পারে, এসব দিক বিবেচনা করে মন্তব্য করা উচিত।  বিশেষ করে পোস্ট জুলাই রেভল্যুশনের পরের যে অবস্থা, আমরা একটি জটিল সময় পার করছি, রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ চলছে, সব সংস্কার তো আর এত দ্রুত করা যাবে না। রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে, সেগুলোর সংস্কার দরকার। নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। এই সময় সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক এবং ঐক্যবিনষ্টকারী বক্তব্য অপ্রত্যাশিত।  কারো প্ররোচনায় এ ধরনের বক্তব্য এসেছে কি না সেটাও জানার বিষয়। আমার মতে, আমাদের ঐক্যের দিকেই এগিয়ে যাওয়া উচিত। অনৈক্যের দিকে নয়। ‘আমি’ ও ‘আপনি’ এই সব শব্দ বাদ রেখে এখন ‘আমরা’ বলতে হবে। ‘আমরা’ কখন, কিভাবে বলতে পারব তার ওপর কাজ করা উচিত। যা ঘটেছে তা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত। সেনাবাহিনীকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য সাধারণ জনগণও মেনে নিচ্ছে না। আপনি একদিকে বলবেন সেনাবাহিনীই হচ্ছে জাতীয় ঐক্য ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য শেষ ভরসা, আবার এই সংস্থার দিকে আঙুল তুলছেন। এটা শুধু সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল তোলা নয়, রাষ্ট্রের দিকেও আঙুল তুলছেন।”

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শিক্ষার্থীদের বিবৃতি : মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে নেই চারুকলার ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শিক্ষার্থীদের বিবৃতি : মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে নেই চারুকলার ২৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা
সংগৃহীত ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ২৬তম ব্যাচের (চারুকলা ৭০তম) শিক্ষার্থীরা বুধবার (২৬ মার্চ) ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ বিষয়ে স্পষ্ট বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, এবারের বৈশাখের আয়োজনের সঙ্গে তাঁদের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই। 

শিক্ষার্থীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মূলত বৈশাখ প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যাচের তত্ত্বাবধায়নে এবং সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের যৌথ প্রয়াসে আয়োজিত হয়ে থাকে। যে আয়োজনের সম্পূর্ণ অর্থ অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের শিল্পকর্ম বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

চারুকলার রীতি অনুযায়ী যা এ বছর আমাদের ব্যাচের দায়িত্ব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এবারের আয়োজন একেবারেই চারুকলা অনুষদের পূর্বাপর রীতির ব্যতিক্রমীভাবে কোনোরকম শিক্ষার্থীদের সম্মতি ও সম্পৃক্ততা ছাড়া শুধু শিক্ষকদের সিদ্ধান্তে করা হচ্ছে, যা আমাদের বিশ্বাস ও ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ ছাড়া এবার একাডেমিকভাবে বৈশাখ আয়োজন করার এই সিদ্ধান্ত অনুষদে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ছাত্রপ্রতিনিধি কারো সঙ্গে কোনোরকম পূর্ব–আলোচনা ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট ছাত্র-শিক্ষক গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততায় খুবই অতর্কিতভাবে নেওয়া হয়েছে।’

শিক্ষার্থীরা বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, ‘শোভাযাত্রার জন্য বানানো স্ট্রাকচারের ডিজাইন এবং আইডিয়া সম্পূর্ণ শিক্ষকদের দেওয়া, চারুকলার আপামর সাধারণ শিক্ষার্থী এর সঙ্গে কোনোভাবেই সংযুক্ত ও অবগত নন।

শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে স্ট্রাকচার সম্পর্কেও আমরা অবগত ছিলাম না এবং কারো ব্যক্তিগত মতাদর্শে আঘাত দেওয়ার পক্ষেও নন তাঁরা। এহেন কুরুচিপূর্ণ ও প্রহসনমূলক সিদ্ধান্ত চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নেওয়া হয়নি এবং চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ছিল না।’

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই অবস্থায় অনলাইনে তৈরি বিরূপ প্রতিক্রিয়ার দায় সমগ্র চারুকলার নয় বরং দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট কতিপয় আয়োজক এবং ব্যবস্থাপনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর বর্তায়।’

এবারের বৈশাখ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বৈশাখ।

শিক্ষার্থীরা বিবৃতিতে আরো বলেছেন, ‘এ আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের চাটুকারিতাপূর্ণ মনোভাবের কারণে আমরা শিক্ষকদের আয়োজন করা বৈশাখের আনুষ্ঠানিকতা ও শোভাযাত্রা সমর্থন করছি না। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা এটুকু স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে, আমরা মোটাদাগে প্রতিবছর চারুকলা অনুষদে আয়োজিত হয়ে আসা বৈশাখের আয়োজন নয় বরং স্বজনপ্রীতিদুষ্ট ও দেশের পরিবর্তনকালীন রাজনৈতিক স্বার্থান্বেষী এবারের ‘বৈশাখ ১৪৩২’-এর আয়োজন ও আয়োজক কমিটিকে আমরা, চারুকলার সাধারণ শিক্ষার্থীরা বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করি আমাদের এই সিদ্ধান্তকে সবাই সমর্থন ও সম্মান জানাবে।’

মন্তব্য

নোয়াবের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা, নেতাদের প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নোয়াবের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে চরম নিষ্ঠুরতা, নেতাদের প্রতিবাদ
সংগৃহীত ছবি

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ‘নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) সংবাদপত্রে তিন দিন ছুটির ঘোষণার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিল (ডিএসইসি)।

বুধবার (২৬ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, ইআরএফের সভাপতি দৌলত আখতার মালা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং ডিএসইসির সভাপতি মোক্তাদির অনীক ও সাধারণ সম্পাদক জাওহার ইকবাল খান বলেন, সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নোয়াবের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে ঈদের ছুটি বৃদ্ধির দাবি জানায়। কিন্তু নোয়াব এখনো সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করায় এবং সাংবাদিকদের দাবি আমলে না নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ ও নিন্দা জানায়। 

আরো পড়ুন
চীনে বোয়াও সম্মেলনে কাল বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

চীনে বোয়াও সম্মেলনে কাল বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

 

উল্লেখ্য, নোয়াবের ঘোষণা অনুযায়ী, ৩০ ও ৩১ মার্চ এবং ১ এপ্রিল ছুটি থাকবে।

তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদুল ফিতর ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হলে সে ক্ষেত্রে পরদিন ২ এপ্রিল সংবাদপত্র বন্ধ থাকবে। নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বলেন, এবার ঈদে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছেন। ঈদে টানা পাঁচ দিন সরকারি ছুটির সঙ্গে আগে-পরেও মিলছে স্বাধীনতা দিবস, শবেকদর ও সাপ্তাহিক ছুটি। সব কিছু মিলিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মার্চের শেষ সপ্তাহ ও এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ যাবে ছুটির মধ্যে।
অথচ সংবাদমাধ্যম কর্মীদের কথা বিবেচনায় না নিয়ে নোয়াবের মাত্র ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা চরম নিষ্ঠুরতা ছাড়া কিছু নয়। আমরা নোয়াবের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ছুটি বৃদ্ধির দাবি করছি। 

কারণ, সারা জাতি যখন বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন নোয়াব গণমাধ্যমকর্মীদের নতুন করে বৈষম্যের দিকে ঠেলে দেওয়া অমানবিক নিষ্ঠুরতা বৈ কিছু না। সাংবাদিক সমাজের যৌক্তিক দাবিকে আমলে নিয়ে ছুটি বৃদ্ধির পুনঃ দাবি জানায় সাংবাদিক নেতারা।

মন্তব্য

চীনে বোয়াও সম্মেলনে কাল বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে বোয়াও সম্মেলনে কাল বক্তব্য দেবেন প্রধান উপদেষ্টা
ফাইল ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামীকাল চীনে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেবেন বলে তার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন।

লাওসের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সাই সিফানডোন, চীনের স্টেট কাউন্সিলের নির্বাহী উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং শুয়েশিয়াং, বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার চেয়ারম্যান বান কি-মুন এবং এর মহাসচিব ঝাং জুন হাইনানের বিএফএ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠেয় এই অধিবেশনে বক্তব্য করবেন।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কু দোংইউ আগামীকাল স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

অধ্যাপক ইউনূস এবং জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। এ ছাড়া রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আগামীকাল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

অধ্যাপক ইউনূস আজ চার দিনের সরকারি সফরে চীনে পৌঁছেছেন।

প্রধান উপদেষ্টাসহ তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী সাউদার্ন এয়ারলাইনসে একটি বিশেষ ফ্লাইট বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে হাইনানের কিয়োংহাই বোয়াও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।

চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম এবং হাইনান প্রদেশের ভাইস গভর্নর বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান।

বোয়াও ফোরামের পাশাপাশি তিনি বিশ্বখ্যাত এবং চীনের বড় বড় কম্পানির প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

অধ্যাপক ইউনূস এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।

২৯ মার্চ অধ্যাপক ইউনূস পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিকেইউ) বক্তৃতা দেবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে।

তিনি চীনের হাসপাতাল চেইনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন, যাতে তারা যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসার সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং হাসপাতাল স্থাপনের জন্য উৎসাহিত হয়।

প্রধান উপদেষ্টার আগামী ২৯ মার্চ দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

মন্তব্য

একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ মারা গেছেন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
একুশে পদকপ্রাপ্ত লোকশিল্পী সুষমা দাশ মারা গেছেন

একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য লোকসংগীতশিল্পী সুষমা দাশ মারা গেছেন। 

বুধবার (২৬ মার্চ) সিলেট নগরীর হাওলাদারপাড়ার নিজ বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন এই গুণী শিল্পী।

পরিবার জানায়, গত ১৩ মার্চ অসুস্থ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যান তিনি। এরপর অবস্থার অবনতি হলে বাসাতেই রাখা হয়।

লোকসংগীতে অবদানের জন্য ২০১৭ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন সুষমা দাশ। এ ছাড়া অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন লোকসংগীতের এই সাধক শিল্পী।

সুষমা দাশ ১৯২৯ সালে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার শাল্লা থানার পুটকা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই মহীয়সীর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত লোককবি রসিকলাল দাশ এবং মাতা লোককবি দিব্যময়ী দাশ।

ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সুষমা দাশ ছিলেন সবার বড়। তার ছোট ভাইও একুশে পদকপ্রাপ্ত পণ্ডিত রামকানাই দাশ।

উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীতের এক মহাপুরুষ ছিলেন তিনি। এ ছাড়া পরিবারের অনেক সদস্যই সংগীতের সঙ্গে জীবন যাপন করছেন।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের নাগরিকদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার লাশ আনা হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ