উত্তর ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা

  • অনেক রাজ্যে ১০-১১ দিন পর্যন্ত চলতে পারে তাপপ্রবাহ
বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
উত্তর ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর উত্তর ভারতের কিছু অঞ্চলে এই সপ্তাহে তীব্র তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী নয়াদিল্লিও রয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাটসহ উত্তর ও মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। পাশাপাশি তারা তাপপ্রবাহ নিয়ে একটি ‘হলুদ সতর্কতা’ জারি করেছে, যার অর্থ এই তাপমাত্রা সাধারণ মানুষের জন্য সহনীয় হলেও শিশু, বৃদ্ধ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তদের জন্য মাঝারি ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

ভারতের উত্তরাঞ্চলে সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে তাপপ্রবাহ দেখা যায়, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই চরম তাপমাত্রা আরো আগেই দেখা দিচ্ছে এবং দীর্ঘ সময় ধরে বিরাজ করছে।

আইএমডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছতে পারে। দিল্লিতে রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মানুষকে তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে রোদে বের হলে শরীর ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হালকা ও আরামদায়ক সুতি পোশাক পরিধান এবং ছাতা বা কাপড় দিয়ে মাথা ঢাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

গত সপ্তাহে আইএমডির প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, চলতি গ্রীষ্মে ভারতের বেশির ভাগ অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে। উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় ও ওড়িশার মতো রাজ্যগুলোতে ১০ থেকে ১১ দিন পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলতে পারে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে উত্তর ও পূর্ব ভারত, মধ্য ভারত ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সমতল এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে চার দিন বেশি তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।’

আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রতিষ্ঠান স্কাইমেটের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মহেশ পালাওয়াত বলেন, ‘উত্তর ভারতে তাপপ্রবাহ সাধারণত এপ্রিলের শেষ দিকে শুরু হয়, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এটি এখন আরো তীব্র ও আগেভাগেই দেখা দিচ্ছে।

আমরা শীত থেকে সরাসরি গ্রীষ্মে চলে যাচ্ছি; বসন্ত মৌসুম উত্তর ভারতে কমে এসেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আগামী দিনে আমরা দেখব বাতাসের গতি ধীর হয়ে আসছে এবং আকাশ পরিষ্কার থাকবে। এতে স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা বাড়বে।’

২০২৪ সালে ভারতের রাজস্থান রাজ্যে সে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। সেই বছর ৪০ হাজারেরও বেশি সন্দেহভাজন হিটস্ট্রোকের ঘটনা রেকর্ড হয়েছিল।

দিল্লির একটি আবহাওয়া স্টেশন গত মে মাসে সর্বোচ্চ ৫২.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছিল, যদিও পরে সরকার জানায় এটি সেন্সরজনিত ভুল ছিল এবং সংশোধিত হিসেবে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রি কম দেখানো হয়। এ ছাড়া সরকারি তথ্যমতে, ২০২৪ সালে তাপপ্রবাহে প্রায় ১৫০ জন মারা গিয়েছিল, তবে স্বাধীন গবেষকরা বলছেন, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গাজার অধিকাংশ অঞ্চলে অভিযান আরো বিস্তৃত করবে ইসরায়েল

    আইডিএফের নিয়ন্ত্রণে ‘মোরাগ করিডর’ খান ইউনিস খালি করার নির্দেশ
বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
গাজার অধিকাংশ অঞ্চলে অভিযান আরো বিস্তৃত করবে ইসরায়েল
বিনা মূল্যে খাবার বিতরণ কেন্দ্রে গরম খাবারের ভাগ পেতে অপেক্ষা করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবিটি ১২ এপ্রিল গাজার নুসেইরাত শরণার্থীশিবির থেকে তোলা। ছবি : এএফপি

গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শিগগিরই ‘জোরালোভাবে’ অভিযান সম্প্রসারণ করবে। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফা ও খান ইউনিস শহরের মাঝখানে একটি ‘নিরাপত্তা এলাকা’ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ শনিবার এক ঘোষণায় এসব তথ্য জানিয়েছেন।

অন্যদিকে গাজা থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় হামলার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসরায়েল খান ইউনিস ও আশপাশের এলাকায় বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে।

এই হামলার দায় স্বীকার করেছে হামাস।

১৮ মার্চ দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতি ভেঙে হামাসের বিরুদ্ধে পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তার পর থেকে গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করেছে তারা এবং আবারও লক্ষাধিক মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে গাজার পুরো সীমানা ঘিরে একটি ‘বাফার জোন’ বা সুরক্ষা অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে, যাতে ভবিষ্যৎ আক্রমণ প্রতিহত করা যায় বলে দাবি করা হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান অভিযানের লক্ষ্য হলো গাজায় হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা, যাদের মধ্যে ২৪ জন এখনো জীবিত বলে ধারণা করা হয়।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ শনিবার জানান, ‘মোরাগ করিডর’ এখন আইডিএফের নিয়ন্ত্রণে, যা রাফা ও খান ইউনিসের মাঝখানে এক সময়কার একটি ইহুদি বসতির নাম। তিনি বলেন, ‘আইডিএফ এখন রাফা ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী মোরাগ করিডর দখল করেছে এবং পুরো ফিলাডেলফি করিডর থেকে মোরাগ পর্যন্ত অঞ্চল এখন ইসরায়েলি নিরাপত্তা এলাকার অংশ।’

এই করিডরের দখল কার্যত গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাকে খান ইউনিস থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

গাজার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা রাফার মধ্যে পড়ে।

কাটজ আরো হুঁশিয়ারি দেন, ‘আইডিএফের অভিযান শিগগিরই গাজার অধিকাংশ এলাকায় জোরালোভাবে সম্প্রসারিত হবে’ এবং এসব এলাকার বাসিন্দাদের ‘যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরে যেতে হবে’।

তিনি বলেন, ‘এটাই শেষ সময় হামাসকে নির্মূল করা, জিম্মিদের মুক্ত করা ও যুদ্ধের অবসান ঘটানোর।’

ইসরায়েলি মন্ত্রী আরো জানান, গাজার উত্তরের কিছু এলাকাও, যেমন বেইত হানুন ও কেন্দ্রীয় গাজা ভেদ করে যাওয়া নেতজারিম করিডর খালি করা হচ্ছে, যাতে সেখানে নিরাপত্তা এলাকা সম্প্রসারণ করা যায়। তিনি বলেন, ‘উত্তর গাজাতেও বেইত হানুন ও অন্যান্য এলাকায় বাসিন্দারা সরছে, এলাকা দখল করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তা অঞ্চল সম্প্রসারিত হচ্ছে, এর মধ্যে রয়েছে নেতজারিম করিডরও।

বিবিসি এ বিষয়ে আইডিএফের কাছে জানতে চাইলে তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে যেতে বলে।

এএফপি হামাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি অভিযানে ‘নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে’ এবং জিম্মিদের ভাগ্য ‘অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে’।

গত মাসে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর অভিযোগ করেছিল, ইসরায়েল যেসব এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে তা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বৈধ নয় এবং এতে ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসন, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বা খাদ্য সরবরাহের কোনো নিশ্চয়তা নেই। অন্যদিকে ইসরায়েল সরকার বলেছে, তারা সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য তাদের সরিয়ে নিচ্ছে, যাতে তারা হামাসের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহৃত না হয়, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

এদিকে কাটজের ঘোষণার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা গাজার থেকে ছোড়া গোলার জবাবে খান ইউনিস ও আশপাশের এলাকায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আইডিএফ আরো জানায়, গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া তিনটি গোলা তাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভূপাতিত করেছে। হামলার দায় পরে হামাসের সামরিক শাখা স্বীকার করে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

হামাস চালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন নিহত ও ৬৪ জন আহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার জবাবে ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করতে সামরিক অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জন জিম্মি হয়। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তখন থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫০ হাজার ৯৩৩ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া নতুন অভিযানে প্রাণ গেছে এক হাজার ৫৬৩ জনের।

মন্তব্য

নেতানিয়াহুর ছবি পেটানোর সংবাদ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নেতানিয়াহুর ছবি পেটানোর সংবাদ ইসরায়েলি গণমাধ্যমে
ছবি: ফোকাস বাংলা

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশিরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সব ধর্মবর্ণের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এ সময় ফিলিস্তিনি পতাকা বহন করে এবং ‘ফ্রি, ফ্রি ফিলিস্তিন’ স্লোগান দেয় তারা।

বাংলাদেশিদের এই বিক্ষোভের সংবাদটি বার্তাসংস্থা এপির বরাত দিয়ে পুনরায় প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল। সেখানে নেতানিয়াহুর ছবিতে পেটানোর বিষয়টি মূল শিরোনামে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এপির শিরোনামে এ বিষয়টি নেই। তারা শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশের রাজধানীতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রায় ১ লাখ মানুষের র‌্যালি।

’ অপরদিকে টাইমস অব ইসরায়েল একই খবরের শিরোনামে লিখেছে, ‌‌‘বাংলাদেশে প্রায় ১ লাখ মানুষের গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, পিটিয়েছে নেতানিয়াহু ও তার মিত্রদের ছবি।’

আরো পড়ুন
‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’

‘অচিরেই জি এম কাদের তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করবেন’

 

এই প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানাতে বাংলাদেশের রাজধানীতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী র‌্যালি করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সোহরাওয়ার্দী পার্কে প্রায় ১ লাখ বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিল। তাদের সঙ্গে ছিল কয়েকশ ফিলিস্তিনি পতাকা।

সেখানে তারা ‘ফ্রি ফ্রি, ফিলিস্তিন’ স্লোগান দেয় তারা। বিক্ষোভকারীদের অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি পিটিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, তারা ইসরায়েলের সহযোগী। র‌্যালিতে তারা প্রতীকী কফিন এবং হতাহত বেসামরিক মানুষের প্রতীকী পুত্তলি নিয়ে এসেছিলেন।

আরো পড়ুন
রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

রোটেশনাল পদ্ধতি অনুসরণ না হলে গুচ্ছতে থাকবে না শেকৃবি

 

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও ইসলামিক দল এই র‌্যালিতে সংহতি জানায়।

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ১৭ কোটি মানুষের একটি মুসলিম প্রধান দেশ। ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এবং তারা একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে সমর্থন করে।

মন্তব্য

‘ট্রাম্প শুল্ক’র বাইরে থাকছে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার

বিবিসি, এএফপি
বিবিসি, এএফপি
শেয়ার
‘ট্রাম্প শুল্ক’র বাইরে থাকছে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার
নিউইয়র্কের অ্যাপল স্টোরে উদ্বোধনের সময় প্রদর্শিত হচ্ছে অ্যাপলের আইফোন ১৬। ফাইল ছবি : এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সমহারে শুল্কারোপের আওতা থেকে স্মার্টফোন ও কম্পিউটারকে বাদ দিয়েছে, যার মধ্যে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত ১২৫ শতাংশ শুল্কও অন্তর্ভুক্ত। এতে জনপ্রিয় প্রযুক্তিপণ্যের দাম নিয়ে মার্কিন ভোক্তাদের ওপর সম্ভাব্য চাপ কিছুটা কমবে।

শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন এক নোটিশ প্রকাশ করে জানায়, এসব পণ্যকে ট্রাম্পের অধিকাংশ দেশের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ বৈশ্বিক শুল্ক ও চীনের পণ্যের ওপর আরোপিত আরো উচ্চ হারে শুল্ক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ফলে যেসব ইলেকট্রনিক পণ্য চীন থেকে আমদানি হয় এবং বর্তমানে ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্কের আওতায় রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলোই এবার ছাড় পাচ্ছে।

এ ছাড়া শুল্ক মওকুফ পাওয়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের মধ্যে রয়েছে সেমিকন্ডাক্টর, সোলার সেল ও মেমোরি কার্ড। এসব পণ্য বাদ পড়েছে বেশির ভাগ বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত ১০ শতাংশ ‘মূল শুল্ক’ ও চীনের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ১২৫ শতাংশ শুল্ক থেকে।

এই ছাড়ের ফলে ট্রাম্পের চলতি মাসে ঘোষিত ১০ শতাংশ বিস্তৃত শুল্ক ও চীনা পণ্যের ওপর নতুনভাবে আরোপিত শাস্তিমূলক শুল্কের পরিধি কিছুটা সংকুচিত হলো। এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন মার্কিন প্রযুক্তি কম্পানিগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করছিল, শুল্কারোপের কারণে অনেক ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম হঠাৎই কয়েক গুণ বেড়ে যেতে পারে।

কারণ এসব পণ্যের বেশির ভাগই চীনে উৎপাদিত।

সমহারে শুল্কারোপের মাধ্যমে ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন, যেটিকে ওয়াশিংটন ‘অন্যায্য বাণিজ্যচর্চা’ বলে মনে করে। সম্প্রতি চীনা পণ্যের ওপর নতুন ১২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হয়েছে, যার লক্ষ্য বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। এই নতুন হারে যুক্ত হয়েছে আগের ২০ শতাংশ শুল্ক, যা চীনের ফেন্টানিল সরবরাহে ভূমিকার অভিযোগে আরোপ করা হয়েছিল।

এর সঙ্গে আগের প্রশাসনগুলোর সময় থেকে আরোপিত অন্যান্য শুল্কও যোগ হয়ে অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে মোট শুল্কের হার পৌঁছেছে অন্তত ১৪৫ শতাংশে।

কিছু অনুমান বলছে, শুল্কের বাড়তি খরচ ক্রেতাদের ওপর চাপিয়ে দিলে মার্কিন বাজারে আইফোনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম তিন গুণ বেড়ে যেত। যুক্তরাষ্ট্র অ্যাপলের একটি বড় বাজার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের অর্ধেকের বেশি ছিল অ্যাপলের তৈরি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য নির্ধারিত অ্যাপলের আইফোনের প্রায় ৮০ শতাংশ চীনে ও বাকি ২০ শতাংশ ভারতে উৎপাদিত হয়।

চীনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো অন্য স্মার্টফোন নির্মাতারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সরবরাহব্যবস্থা বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে। এ ক্ষেত্রে বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে ভারত ও ভিয়েতনাম এগিয়ে এসেছে। শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর অ্যাপল ভারতে তাদের ডিভাইসের উৎপাদন বাড়াতে আরো তৎপর হয় বলে জানা গেছে।

এই সপ্তাহে ট্রাম্প বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে বুধবার হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি ঘোষণা দেন, চীন বাদে মার্কিন শুল্কের পাল্টা জবাব না দেওয়া অন্যান্য দেশের জন্য ৯০ দিনের বিরতি কার্যকর হবে। এ সময়ের মধ্যে তারা মাত্র ১০ শতাংশ শুল্কের আওতায় থাকবে। এ সিদ্ধান্ত জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ মূলত অন্যান্য দেশের কাছ থেকে আরো ভালো বাণিজ্য চুক্তি আদায়ের একটি কৌশল। এ ছাড়া বাদ দেওয়া অনেক পণ্যের উৎপাদন সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রে হয় না, যেমন হার্ড ড্রাইভ ও কম্পিউটার প্রসেসর। যদিও ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন ফিরিয়ে আনা যাবে, কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে এখনো বহু বছর সময় লাগবে।

মন্তব্য

ইউক্রেনীয় এফ-১৬ পাইলট নিহত

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
ইউক্রেনীয় এফ-১৬ পাইলট নিহত
এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। ফাইল ছবি : এএফপি

ইউক্রেন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি মূল্যবান এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিয়োজিত এক ইউক্রেনীয় পাইলট নিহত হয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনী শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী জানায়, ‘২০২৫ সালের ১২ এপ্রিল ২৬ বছর বয়সী পাভলো ইভানভ একটি এফ-১৬ যুদ্ধমিশনে অংশ নেওয়ার সময় নিহত হন। তিনি মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

তবে ইভানভের মৃত্যুর বিস্তারিত তথ্য সেনাবাহিনী প্রকাশ করেনি। একটি কমিশন ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার সব দিক’ তদন্ত করছে বলে জানানো হয়েছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ইউক্রেনীয় পাইলটরা তাদের মানবিক ও প্রযুক্তিগত সামর্থ্যের সর্বোচ্চ সীমায় কাজ করেন, প্রতিটি যুদ্ধমিশনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশ নেন। পাভলো তাদেরই একজন ছিলেন!’

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি পাভলো ইভানভের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেন, ‘আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’

দুই বছর ধরে অনুরোধ জানানোর পর ২০২৪ সালের গ্রীষ্মে ইউক্রেন প্রথমবারের মতো এফ-১৬ পায়। গত মাসে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি নতুন করে আরো কিছু এফ-১৬ পাওয়ার কথা জানান, তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করেননি।

২০২৪ সালের আগস্টে ইউক্রেন জানায়, একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে একটি এফ-১৬ বিধ্বস্ত হয় ও পাইলট নিহত হন।

সেটাই ছিল ইউক্রেনের ঘোষণা দেওয়া প্রথম এফ-১৬ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ