আগে জানতে হবে গুণিতক এবং গুণনীয়ক কাকে বলে। কোনো সংখ্যার সঙ্গে যেকোনো পূর্ণসংখ্যার গুণফলকে গুণিতক বলে। যেমন ৩ এর গুণিতকগুলো হলো ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫...ইত্যাদি। সহজভাবে আমরা বলতে পারি গুণিতক হলো পূর্ণসংখ্যার নামতা।
আগে জানতে হবে গুণিতক এবং গুণনীয়ক কাকে বলে। কোনো সংখ্যার সঙ্গে যেকোনো পূর্ণসংখ্যার গুণফলকে গুণিতক বলে। যেমন ৩ এর গুণিতকগুলো হলো ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫...ইত্যাদি। সহজভাবে আমরা বলতে পারি গুণিতক হলো পূর্ণসংখ্যার নামতা।
৩-এর গুণিতকসমূহ ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫...
৬-এর গুণিতকসমূহ ৬, ১২, ১৮, ২৪...
এখন এ দুটি সংখ্যার গুণিতকগুলোর মধ্যে মিল আছে এমন সংখ্যা হলো ৬ ও ১২। তাহলে ৬ ও ১২ হলো, ৩ ও ৬ এর সাধারণ গুণিতক।
এবার জেনে নিই লসাগু কাকে বলে।
৪-এর গুণিতকসমূহ ৪, ৮, ১২, ১৬, ২০, ২৪
৬-এর গুণিতকসমূহ ৬, ১২, ১৮, ২৪
১২-এর গুণিতকসমূহ ১২, ২৪
এখানে দেখা যাচ্ছে ৪, ৬ ও ১২-এর সাধারণ গুণিতক ১২ ও ২৪।
৩-এর গুণিতকসমূহ ১, ৩
৪-এর গুণিতকসমূহ ১, ২, ৪
৫-এর গুণিতকসমূহ ১, ৫
অতএব ৩, ৪ ও ৫ এর লসাগু হবে = ৩ী৪ী৫ = ৬০। এ থেকে আমরা বলতে পারি, যদি একাধিক সংখ্যার কোনো মৌলিক সাধারণ গুণনীয়ক না থাকে, তাহলে তাদের লসাগু হবে সংখ্যাগুলোর গুণফল।
এবার আসা যাক গুণনীয়কে। যে সকল সংখ্যা দ্বারা কোনো সংখ্যাকে ভাগ করলে কোনো ভাগশেষ থাকে না সেগুলোকে ওই সংখ্যার গুণনীয়ক বলে।
এখন বলো গসাগু কাকে বলে? একাধিক সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়কের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংখ্যাকে গসাগু বলে। একটি উদাহরণ দেখা যাক। ৪, ৬ ও ১২ এর গসাগু নির্ণয় করি—
৪-এর গুণনীয়ক হলো ১, ২, ৪।
৬-এর গুণনীয়কগুলো হলো ১, ২, ৩, ৬।
১২-এর ১, ২, ৩, ৪, ৬, ১২।
এখানে দেখা যায় যে, ৪, ৬ ও ১২-এর সাধারণ গুণনীয়ক হল ১ ও ২। তাহলে গসাগুর সংজ্ঞা অনুযায়ী এ রাশির গসাগু = ২। আবার যদি ৩, ৪ ও ৫ এর গসাগু নির্ণয় করতে বলা হয়? চলো দেখা যাক—
৩-এর গুণনীয়কগুলো ১, ৩
৪-এর গুণনীয়কগুলো হলো ১, ২, ৪
৫-এর গুণনীয়কগুলো হলো ১, ৫
তাহলে ৩, ৪ ও ৫ এর গসাগু হবে = ১। এই উদাহরণ থেকে এটা বোঝা যায় যে যদি একাধিক সংখ্যার কোনো মৌলিক সাধারণ গুণনীয়ক না থাকে তবে তাদের গসাগু হবে ১।
এখন জিজ্ঞেস করতে পারো এই ‘মৌলিক সংখ্যা’ আবার কী? সহজ কথায় যে সংখ্যাটাকে ১ ও সেই সংখ্যা ছাড়া আর কোনো সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা যায় না, তাকেই মৌলিক সংখ্যা বলে। অর্থাৎ মৌলিক সংখ্যার মাত্র দুটি গুণনীয়ক। একটি ১ ও অন্যটি হলো সেই সংখ্যা। ১ কিন্তু মৌলিক সংখ্যা নয়, কারণ ১ এর দুটি গুণনীয়ক নেই।
এবার এই অধ্যায় থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক সমস্যা দিলাম।
১। তিনটি ভিন্ন রঙের ঘণ্টা আছে। লাল রংয়ের ঘণ্টা ১৮ মিনিট পর পর, হলুদ রঙের ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর পর এবং সবুজ রঙের ঘণ্টা ১২ মিনিট পর পর বাজে। ঘণ্টাগুলো সন্ধ্যা ৬টায় একসঙ্গে বাজল। আবার কখন একসঙ্গে বাজবে?
২। একটি স্টেশন থেকে ‘ক’ কম্পানির বাস ২০ মিনিট পর পর এবং ‘খ’ কম্পানির বাস ৩০ মিনিট পর পর ছাড়ে।
(ক) ২০ ও ৩০-এর মৌলিক উৎপাদকগুলো লেখো।
(খ) ক ও খ কম্পানির বাস দুটি প্রথমে একত্রে ছাড়ার পর সর্বনিম্ন কত সময় পর আবার একত্রে ছাড়বে?
৩। চারটি বাতি প্রথমে একসঙ্গে জ্বলার পর লাল রঙের বাতিটি ৬ মিনিট, হলুদ রঙের বাতি ৯ মিনিট, নীল রঙের বাতি ১২ মিনিট এবং সবুজ বাতিটি ১৫ মিনিট পর পর জ্বলে।
(ক) ন্যূনতম কত মিনিট পর বাতিগুলো একসঙ্গে জ্বলবে?
(খ) বাতিগুলো সন্ধ্যা ৭টায় একসঙ্গে জ্বললে এর ঠিক পরবর্তী কয়টায় আবার একত্রে জ্বলবে?
৪। ফরহাদ তার বাগানের জন্য কিছু চারাগাছ কিনল। প্রতি সারিতে যথাক্রমে ১০, ১২ ও ১৫টি চারা রোপণ করে। তবে—
(ক) কমপক্ষে কতটি চারা রোপণ করলে প্রতি ক্ষেত্রে কোনো চারা অবশিষ্ট থাকবে না?
(খ) যদি চারার সংখ্যা ৬৮টি হতো, তাহলে কয়টি চারা অবশিষ্ট থাকত?
(গ) যদি প্রতি ক্ষেত্রে ২টি চারা অবশিষ্ট থাকত, তা হলে চারার সংখ্যা কত হতো?
গ্রন্থনা : মো. জামাল হোসেন
সম্পর্কিত খবর