গাজা পুনর্গঠনে ৫ হাজার ৩ কোটি ডলারের একটি পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে মিসর। এর আওতায় নতুন আবাসন, একটি বাণিজ্যিক বন্দর এবং একটি বিমানবন্দর নির্মিত হবে। এদিকে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল মিসরের রাজধানী কায়রোয় আরব দেশগুলোর নেতারা বৈঠকের জন্য জড়ো হয়েছেন।
গতকাল কায়রোর স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় আরব দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ ও ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের বিতাড়নের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তার বিকল্প নিয়ে আলোচনা করতে কায়রোয় জড়ো হয়েছেন তাঁরা।
ফিলিস্তিনসহ আরব বিশ্বের দেশগুলো ট্রাম্পের গাজা নিয়ন্ত্রণ ও এর বাসিন্দাদের উত্খাতের প্রস্তাবের ব্যাপক নিন্দা করেছে। কায়রোয় সম্মেলন ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে আরব নেতাদের একটি ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরবে বলে আশাবাদী গাজার ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। গাজার বাসিন্দা আহমেদ ঘাজাল বলেন, যদি আরব দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে গাজা থেকে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
গাজার দেইর আল বালাহর বাসিন্দা খাদির তালাল বলেন, ‘আমরা গাজার মাটি আঁকড়ে ধরে আছি। আমরা এখান থেকে কোথাও যাব না।’
আরব লীগের একটি সূত্র জানায়, কায়রোয় গত সোমবার আরব দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছে। রুদ্ধদুয়ার বৈঠকটিতে আরব নেতারা গাজার জনগণকে উচ্ছেদ না করেই ভূখণ্ড পুনর্নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সূত্রটি জানায়, পরিকল্পনাটি মঙ্গলবারের শীর্ষ সম্মেলনে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য শর্ত চাপাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাডিয়েন সার বলেছেন, গাজাকে সম্পূর্ণ সামরিক শক্তিহীন করা এবং জিম্মিদের ফেরত আনার শর্তে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করবে।
গতকাল মঙ্গলবার জেরুজালেমে সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে আমাদের কোনো সমঝোতা হয়নি। আমরা গাজার সম্পূর্ণ অসামরিকীকরণ দাবি করছি।
হামাস ও ইসলামিক জিহাদ থাকতে পারবে না। সেই সঙ্গে জিম্মিদের ফেরত দিতে হবে। এই শর্তে রাজি হলে কাল থেকেই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়ন করব।’
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে নাজুক যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ গত শনিবার শেষ হয়েছে। যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায় শুরু করার কথা থাকলেও ইসরায়েল তা নিয়ে টালবাহানা করছে। এদিকে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায় শেষ হওয়ায় রোজার মধ্যে গাজায় সব ধরনের ত্রাণবাহী গাড়ির প্রবেশ আটকে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে গাজাবাসী আবারও অনাহারের মুখে পড়ার ভয়ে রয়েছে। সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা