<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক দেরি হয়ে গেছে। অনেক মূল্যবান জীবন ঝরে গেছে। অনেক পরিবার হারিয়েছে তাদের অমূল্য সম্পদ। কোনো পরিবার হারিয়েছে তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে। পরিবারের স্বপ্নপূরণে উচ্চশিক্ষা নিতে আসা তরুণের রক্ত ঝরেছে রাজপথে। ছাত্রদের অহিংস আন্দোলন শেষ পর্যন্ত গড়িয়েছে সহিংসতায়। তৃতীয় একটি পক্ষ ঢুকে গেছে আন্দোলনের অন্দরমহলে। কোটাবিরোধী থেকে কোটা সংস্কার হয়ে বৈষম্যবিরোধী নামে পরিচিতি পাওয়া আন্দোলন এখন সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। একটি পক্ষ চাইছে এই সরকার বিদায় নিক। আন্দোলনের সমন্বয়করা বিষয়টি স্পষ্ট করে না বললেও তাদের আচরণ বলে দিচ্ছে তারা এখন সরকারের বিদায় চাইছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তিনি বসতে চান, তাদের কথা শুনতে চান। তিনি কোনো সংঘাত চান না। এর আগে সমন্বয়কদের সঙ্গে বসার জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও করে আওয়ামী লীগ। ওদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক জানিয়েছেন, সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা তাঁদের নেই। তাহলে তাঁদের পরিকল্পনা কী? </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওদিকে জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবির নিষিদ্ধঘোষিত হয়েছে। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার ফলে তারা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে সহিংসতার চেষ্টা করতে পারে। এ কারণে রাজপথে বড় জমায়েত কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রমাণ দেখাতে চায় তারা।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোটাবিরোধী আন্দোলনের শুরুতে সরকারের একাধিক কৌশলগত ভুল হয়ে গেছে। এ কারণে শুনতে খারাপ শোনালেও এটা বোধ হয় সত্য যে সরকার সত্যিকার অর্থেই একটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়েছে। এমন অবস্থায় এখন তাড়াহুড়া করে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে ভেবেচিন্তে পা ফেলা দরকার। সরকার ও আওয়ামী লীগ কোনো উসকানিতে পা না দিয়ে সর্বোচ্চ সহনশীলতা দেখিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলে সেটাই হবে বিচক্ষণতার কাজ। কারণ একই সঙ্গে দ্বিমুখী বড় চাপ সামাল দিতে হচ্ছে সরকারকে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এটা এখন স্পষ্ট যে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মুখোমুখি কোনো সংঘর্ষে যেতে চায় না আওয়ামী লীগ। দেশের অর্থনীতির দিকে তাকালে দেখা যাবে, কোটা সংস্কারের দাবিতে কর্মসূচির ফলে দেশের অর্থনীতিতে কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ক্ষতির পরিমাণ। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানার জন্য এক বড় ধরনের আঘাত হয়ে এসেছে। অবশ্যই দেশের অগ্রযাত্রাকে অনেকটা পিছিয়ে দিয়েছে। গত একটি মাস অনেকটাই অনিশ্চিত অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রায় স্থবির ছিল সারা দেশ। ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দেয় মন্দা। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। দেশজুড়ে সৃষ্টি হওয়া অস্থিরতায় ক্ষুদ্র ব্যবসার উদ্যোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্রদের নিরীহ নির্দোষ কর্মসূচিতে রাজনৈতিক অপশক্তির অনুপ্রবেশ ঘটেছে। শুরু হয়েছে সন্ত্রাস-নাশকতা। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা আশা করব, উভয় পক্ষের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।</span></span></span></span></p>