সাক্ষাৎকার : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

কিংস পার্টি বানিয়ে টিকে থাকা কঠিন, এক-এগারোও পারেনি

শেয়ার
কিংস পার্টি বানিয়ে টিকে থাকা কঠিন, এক-এগারোও পারেনি
গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। সাম্প্রতিক রাজনীতি, আগামী নির্বাচন ও দলের নানা নীতিনির্ধারণী বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হাসান শিপলু

 

প্রশ্ন : অন্তর্বর্তী সরকারকে কেমন দেখছেন?

উত্তর : ছাত্র-জনতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্ব দেওয়ার পর তিনি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন।

এটা নির্দলীয় সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার। বলা যায়, বন্ধুবান্ধবের সরকার। এনজিও সরকার। কিছু আমলাও আছে।

প্রশ্ন : দল গঠনের পর জাতীয় নাগরিক পার্টি সেকেন্ড রিপাবলিক ও গণপরিষদ নির্বাচন চেয়েছে, এর উদ্দেশ্য কী মনে হয়?

উত্তর : দেশের স্বাধীনতা অস্বীকার করা। নতুন করে সংবিধান লিখতে চায় তারা। কিন্তু এটি তো এখন আর ’৭২-এর সংবিধানে নেই। এটি অনেকবার সংশোধন হয়েছে।

ধর্মগ্রন্থ ছাড়া সবই সংশোধন করা যায়। তাই এটি নতুন করে লেখার কোনো প্রয়োজন নেই।

 

প্রশ্ন : নাগরিক কমিটি তো সংস্কারের পর নির্বাচন চাইছে, আপনারা তো ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার চান না, কেন?

উত্তর : দেশে অনেক সমস্যা আছে। এই রাষ্ট্রকে মূল জায়গায় আনতে অনেক সময় লাগবে। কাল বিএনপি বা যেকোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গেলেও রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে না।

একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে করতে হবে। আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, দুর্নীতি ঢুকছে—এসব কোনোটা এক মাসে যাবে, কোনোটা ১২ মাস, কোনোটা এক বছর ও ১০ বছরও সময় লাগবে। সুতরাং সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু সংস্কারের জন্য তো নির্বাচন থেমে থাকতে পারে না। শুধু সংস্কার সংস্কার শব্দ, এই জারি গান নিয়ে ব্যস্ত থাকা যাবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা দরকার। বাকি সংস্কার নির্বাচিত সরকার করবে।

 

প্রশ্ন : নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে হবে তা তো স্পষ্ট নয়। নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামও বলেছেন, বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব নয়। সরকার যদি এই বছর নির্বাচন না দেয় তাহলে কী করবেন?

উত্তর : সরকার অরাজনৈতিক, এটি অন্তর্বর্তী সরকার, আমরা তো এখন বিরোধী দলে নই। এখন আমি নিরপেক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে কী সমালোচনা করব? আমরাও তো তাদের আস্থায় নিয়ে সহযোগিতা করছি। আমার কাজটা হচ্ছে নির্বাচনটা আদায় করা। সেটা রাজপথের মাধ্যমে হতে পারে, আবার আলোচনার মাধ্যমে হতে পারে। এখনো আমরা তো ধৈর্য ধরছি। কিন্তু অনন্তকাল তো ধৈর্য ধরব না।

 

প্রশ্ন : আপনারা বলছেন, সরকার নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করছে, আবার বলছেন, তাদের ওপর আস্থা রাখছেন।

উত্তর :  সরকার কী চায় সরকার নিজেও সেটা বুঝে কি না আমি বুঝি না। তার পরও আমাকে তো ধৈর্য একটু ধরতেই হবে।

প্রশ্ন : আপনারা বারবার ওয়ান-ইলেভেনের মতো ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন কেন?   

উত্তর : ওয়ান-ইলেভেনের যারা কুশীলব ছিল তারাই তো এখনো ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন পদে আছে। তারাই তো সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছে। কেউ যদি ওয়ান-ইলেভেনের ধারাবাহিকতাকেই কার্যকর করতে চায়, তাহলে আমাকে যেকোনো অবস্থাতেই আন্দোলনে নামতে হবে।

 

প্রশ্ন : সরকারের বিরুদ্ধে আপনাদের নেতা-কর্মীদের এত অভিযোগ কেন?

উত্তর : অন্তর্বর্তী সরকারসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আমাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আলোচনায় বলেন, দেশে নাকি ঘুষ-দুর্নীতি কমেনি; বরং অনেক জায়গায় বেড়েছে। তাহলে সংস্কারটা কোথায় হচ্ছে? ঘৃণিত এক দুর্নীতিবাজ সরকার হটানোর পরও যদি দুর্নীতি চলমান থাকে, তাহলে আমরা পাপীকে ঘৃণা করলাম, পাপকে ঘৃণা করলাম না। এই কথাগুলো কানে আসছে।

 

প্রশ্ন : নির্বাচনের দাবিতে জেলায় জেলায় সমাবেশ করেছে বিএনপি। এই আন্দোলন কী আরো হবে?

উত্তর : ১৭ বছরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমি মরিনি। কিন্তু অনেকে মারা গেছেন। আমার অনেক ভাই-বোন নিখোঁজ হয়েছেন, গুম হয়েছেন। ১৭ বছরের মূল দাবিটা ছিল একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। এই দাবি থেকে সরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমার মাথায় ২৮টি সেলাই আছে। অনেকে বলেন, টুপি পরেন কেন? যার মাথায় ২৮টি সেলাই থাকে, তার মাথায় কি চুল থাকে? আমি রক্ত দিয়েছি নির্বাচনের জন্য। সে নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হতে পারি, না-ও পারি। কিন্তু আমরা একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আর নির্বাচনের দাবিতে এই সরকারের আমলের না, এই দাবি এই সরকার জন্মানোরও আগে। আমরা এ থেকে সরে যাব কেন? রোজার আগে আমরা কতগুলো কর্মসূচি করলাম। দ্রবমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পাশাপাশি আমরা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারকে বলছি। যথাসম্ভব শিগগিরই নির্বাচন চেয়েছি। আমরা কিন্তু বলিনি আজকের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে, আলটিমেটামও দিইনি। এ কথাও বলছি যে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার করা দরকার ততটুকু করেন। তাই নির্বাচনের দাবি রোজার পরও করব। এখন তো আমি অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিইনি। আমি তো এখনো প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা দিইনি। আমরা তো সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছি। নির্বাচন যতই দেরি হবে ততই জটিলতা বাড়বে। ষড়যন্ত্রকারীরা তত শক্তিশালী হবে। সেই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার ক্ষমতা সরকারের আছে কি না?

 

 

প্রশ্ন : জাতীয় নাগরিক পার্টিকে নিয়ে বিএনপি নানা সমালোচনা করছে, কিন্তু কেন? নতুন দলের পেছনে কোনো শক্তি আছে বলে কী মনে করছেন?

উত্তর : নতুন দলের শক্তি সরকারের মধ্যেই লুকায়িত আছে। সরকার নতুন দলের জন্য অনেক কিছু করছে, অনেক কিছু করার চেষ্টা করছে। এই চেষ্টার কারণে সরকার নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে। ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিন এ রকম দল তৈরি করেছিল। বিভিন্ন দলের নেতাদের সংস্কারবাদী বানিয়েছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অনেক নেতাকে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু ফাইনালি ফেল করেছে। ওয়ান-ইলেভেনের আগে সিঙ্গাপুরের একটা পত্রিকা বাংলাদেশের অর্থনীতি ইমাজিং টাইগার বলেছিল। তখন অর্থনীতির অবস্থা ভালো ছিল। ওই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে ২০ টাকার চাল ৪০ টাকা করল। সেটি তারা আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না। এখন তো আর অর্থনীতিটা ছুটন্ত বাঘ না। অর্থনীতি এখন ঘুমন্ত বাঘ। সুতরাং ওয়ান-ইলেভেনের এই খেলা, কিংস পার্টি বানানো এবং দল বানিয়ে টিকে থাকা খুব কঠিন।

 

প্রশ্ন : সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক করেছেন। কেন তাঁর এই সতর্কবাণী?

উত্তর : ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটাতে সেনাপ্রধানের ভূমিকা আছে। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। উনি বারবার বলেছেন, আপনারা নিজেরা নিজেরা কাদা ছোড়াছুড়ি করে পরিবেশ বিনষ্ট করবেন না। তিনি তো নির্বাচনের বিপক্ষে বলেননি। নিজেদের মতো রেষারেষি থাকলে কী হতে পারে সেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এটা থেকে অনেক কিছু বোঝার আছে। যার বোঝার তারা বুঝবেন।

 

প্রশ্ন : তাহলে নির্বাচন নিয়ে আপনাদের চূড়ান্ত অবস্থান কী?

উত্তর : আমরা যখন ১৭ বছর ধৈর্য ধরতে পেরেছি, আর কয়টা দিন করতে পারব না? এ জন্য যে অনন্তকাল বসে থাকব তাও তো না। আমি বলতে না চাইলেও নির্বাচন দিতে হবে—এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমার ইচ্ছা না থাকলেও আমাকে আন্দোলন করতে হতে পারে। তারা যদি ওয়ান-ইলেভেনের মতো মাইনাস করতে চায়, কেউ যদি মনে করে, একজন বিদেশে চলে গেছেন। আর কাউকে যদি মাইনাস করা যায়, এ রকম মনোভাব যদি থাকে তাহলে কী আন্দোলন হবে না? কারণ তারা কে আমাকে মাইনাস করার?

 

প্রশ্ন : আপনারা কী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে?

উত্তর : আমি আওয়ামী লীগ বুঝি না। কোনো দলই নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি নই। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করবে জনগণ। দেশে কত ধরনের রাজনৈতিক দল আছে। তাদের নামধাম কিছু আছে। তারা তো একসময় অনেক বড় দল ছিল। তাদের সমাবেশে ২০০ লোকও হয় না। কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের প্রাচীন দল। ১৯২১ সালে জন্ম নিয়েছে। তার মানে বাংলাদেশের অনেক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশের জনগণের থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিলীন হয়ে গেছে। বাংলাদেশে মুসলিম লীগকে কি এখন খুঁজে পাওয়া যায়? ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি সেটা কি নিষিদ্ধ হয়েছে? কিন্তু তারা কোথায়? ইউনাইটেড পিপলস পার্টি অনেক বড় দল ছিল। জাসদ খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে গেছে।

 

প্রশ্ন : আওয়ামী লীগের পরিণতি কী হতে পারে?

উত্তর : এখন আওয়ামী লীগের ‘এ’ গ্রেডের নেতা দেশে নেই। কিন্তু ‘বি’ কিংবা ‘সি’ গ্রেডের নেতা তো আছে। তাদেরও তো কোনো নড়াচাড়া নেই। আর শেখ হাসিনা তো দেশে আসবেই না। সাহস থাকলে তিনি আসুক দেশে। আমরা তো দাবিই করছি তাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে।

 

প্রশ্ন : জামায়াত ও ছাত্রদের সঙ্গে বিএনপির কী জোট হতে পারে?

উত্তর : সম্ভাবনা কম। জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের জোট হতে পারে। অতীতেও হয়েছিল। দেশের ক্রান্তিকালে জামায়াত জনগণের বিরুদ্ধে ছিল। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে যদি জামায়াত না যেত তখন এরশাদের পতন হয়। ১৯৯৬ সালে তাদের অবস্থানও জনগণ জানে।

 

প্রশ্ন : ভারতের সঙ্গে এখন আপনাদের সম্পর্ক কেমন?

উত্তর : আগে যা ছিল এখনো তাই আছে। দেশের বাইরে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নেই। এটা আমাদের দলের বিদেশনীতি। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তো কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকতেই হবে। এখন আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নেই। পরবর্তী সময়ে কারা ক্ষমতায় আসবে তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন ভারতকেই করতে হবে। ভারতের মনে রাখা উচিত, বাংলাদেশের মানুষ যাদের পছন্দ করত না, তাদের সঙ্গে তারা সম্পর্ক তৈরি করেছিল। অর্থাত্ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতকে সম্মান রাখতে হবে। দেখতে হবে জনগণ কী চায়।

 

প্রশ্ন : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরতে পারেন?

উত্তর : যেকোনো সময় আসতে পারেন। তারেক রহমান তো সব কিছু বিবেচনা করেই দেশে ফিরবেন।

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা

খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল

দুই দশক আগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে পৃথক আবেদন (লিভ টু আপিল) করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এসব আবেদন গতকাল বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির জন্য ছিল বলে সাংবাদিকদের জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এ মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরের আইনজীবী ছিলেন তিনি। 

গত বছর ১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতের রায় অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায়ে বলা হয়, আইনের ভিত্তিতে মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়নি। ফলে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ। তাই বিচারিক আদালতের ডেথ রেফারেন্স নাকচ এবং আসামিদের আপিল মঞ্জুর করা হলো। এ রায়ের ফলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরসহ বিচারিক আদালত যাঁদের সাজা দিয়েছিলেন, তাঁদের সবাইকে খালাস দেওয়া হয়।

খালাসের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা উচিত বলে সেদিন মন্তব্য করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি, এ হামলা ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক, সাবেক রাষ্ট্রপতি (প্রয়াত) জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতাকর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলার রায় হয়। রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত।
সেই সঙ্গে ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল-জেল আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানির পর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় দেন উচ্চ আদালত।

 

মন্তব্য
সংস্কারে এখনো লিখিত মতামত দেয়নি বিএনপিসহ বড় দলগুলো

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু আজ

সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। লিখিত মতামত পাওয়ার পর অন্য দলগুলোকে সংলাপে ডাকবে কমিশন। তবে এখনো বিএনপিসহ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অনেকে লিখিত মতামত জমা দেয়নি বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার থেকে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে। সংসদ ভবনের এলডি হলে এই সংলাপে প্রথম দিনে অংশ নেবে এলডিপি। আগামী শনিবার দুটি এবং রবিবার একটি দল সংলাপে অংশ নেবে। পর্যায়ক্রমে সব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস সংলাপে থাকছেন না। সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরো জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে। আজ সকাল ১০টায় লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অন্য দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। দ্রুতই তারা মতামত জমা দেবে বলে জানিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লিখিত মতামত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর আমাদের দলীয় মতামত প্রস্তুত করা হচ্ছে। যুগপত্ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে যেকোনো দিন সেগুলো কমিশনে জমা দেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বিভ্রান্তি এড়াতে বিস্তারিত আকারে মতামত জানানো হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সংস্কার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে আমাদের পার্টি ফোরামে আলোচনা হয়েছে। আমরা দলীয়ভাবে মতামত দেওয়ার বিষয়ে এরই মধ্যে কমিশনকে জানিয়েছি। জোটগতভাবে সংলাপে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সুপারিশগুলোর বিষয়ে লিখিতভাবে মতামত জানানো হবে।

সূত্র মতে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। তারা সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের দেওয়া প্রতিবেদনগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ চিহ্নিত করে। এর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন-সংক্রান্ত ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। ওই সুপারিশগুলো ছক আকারে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ওই ছকগুলো গত ৬ মার্চ ৩৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১২টি দল নিবন্ধিত নয়। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯। কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে তাদের মতামত জানানোর জন্য বলা হয়। তবে নির্ধারিত সময়ে সাতটি দল মতামত দিলেও পরবর্তী সময়ে আরো আটটি দল মতামত জমা দিয়েছে। অন্যরা অতিরিক্ত সময় নিয়েছে।

কমিশন সূত্র জানায়, ঐকমত্য কমিশনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে এখনো কিছুই জানানো হয়নি। এ পর্যন্ত মতামত জমা দেওয়া ১৫টি দল হলো এলডিপি, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), আমজনতার দল, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), নাগরিক ঐক্য, জাতীয় গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ জাসদ।

মতামত দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ১২ দলীয় জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট।

 

মন্তব্য
অর্থ উপেদষ্টা

দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দেশীয় শিল্প সুরক্ষার বাজেট দেওয়া হবে
সালেহউদ্দিন আহমেদ

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় নজর দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা ভাতা বাড়ানো হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আগামী বাজেটে ব্যক্তি খাতের করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকার করার প্রস্তাব দিয়েছেন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও টেলিভিশনের শীর্ষ নির্বাহীরা। একই সঙ্গে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বাজেট বক্তব্যের কলেবর কমানো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং নির্ভুল ডাটা-পরিসংখ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছেন তাঁরা।

গণকাল বুধবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় তাঁরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। সভা পরিচালনা ও শুভেচ্ছা বক্তব্যের সময় অর্থসচিব ড. খায়েরুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে আগামী জুনে। আমাদের রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা এমন একটি বাজেট দিয়ে যেতে চাই যেটি পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সরকার যে-ই আসুক, যেন ছুড়ে ফেলে দিতে না পারে, আমরা সেভাবেই একটি বাজেট দিতে চাই। আগামী বাজেটে আমরা প্রবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছি না, বরং আমরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকেই প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। আমরা দেশীয় শিল্প সুরক্ষার একটি বাজেট দিতে চাই। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনমুুখিতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ বলেন, সামনেই তো নির্বাচন। আর জুনে নতুন বাজেট। ফলে আপনারা যে বাজেট দিতে যাচ্ছেন সেটা পরবর্তী সরকারের জন্য কতটা সহায়ক হবে? যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার বলেন, বিপর্যস্ত অর্থনীতি সামলাতে আপনি সফল হয়েছেন। এ জন্য ধন্যবাদ আপনি পেতেই পারেন। আগামী বাজেট সত্যিই আপনার জন্য চ্যালেঞ্জ।

কেননা অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি। এটা আপনি কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এবারের রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে যে ধরনের ভয় বা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তা হয়নি। অনেকাংশে বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। আসছে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো, টিসিবি কার্যক্রমের আওতা ও বাজেট বাড়ানো, আবার রেশনিং সিস্টেম ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন তিনি।

সিনিয়র সাংবাদিক শওকত হোসেন মাসুম বলেন, একটি অর্থবছরে প্রকৃতপক্ষে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয় সে হিসাবটা কখনো আমরা পাইনি। এবার আপনারা সে হিসাব দেবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা। ১৫ বছরে গণমানুষের প্রকৃত আয় বাড়েনি। আপনারা একটা মেকানিজম করে এই হিসাবটা বের করুন যে এক অর্থবছরে কতসংখ্যক কর্মসংস্থান হয়। সবখানে সংস্কার হচ্ছে, আপনারা বাজেট বত্তৃদ্ধতার আকারে সংস্কার আনুন। ঢাউস আকৃতির বাজেট বত্তৃদ্ধতার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কমিয়ে আনুন। বাস্তবমুখী বাজেট দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে যে বাজেট দেওয়া হতো সেটা ছিল অহেতুক। বাজেট উপস্থাপনের নামে দেখানো হতো এক রকমের প্রামাণ্যচিত্র।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অ্যাসোসিয়েট এডিটর শামীম জাহেদী বলেন, কালো টাকা বৈধ করার ক্ষেত্রে কর সমান হবে কি না সেটায় আপনারা নজর দেবেন। দেশে এতগুলো টেলিভিশন আছে, দেড় হাজার কেবল অপারেটর আছে, সারা দেশে সাড়ে তিন কোটি বাড়ি আছে। এর ৫৪ শতাংশ বাড়িতে টেলিভিশন দেখা যায়। প্রত্যেকে ৩০০/৫০০ টাকা দিয়ে সংযোগ নেন। এখানকার টাকাটা আমরা এক টাকাও পাই না। সরকার পায় কি না আমি জানি না। এখানে একটা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাহলে আমরা কিছু টাকা পাব। সরকারও রাজস্ব পাবে।

সময়ের আলোর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহনেওয়াজ করিম বলেন, সবার জন্য সুখবর ও স্বস্তিদায়ক বাজেট দিন। করদাতাদের জন্য ট্যাক্স কার্ড প্রবর্তন করা যায় কি না ভেবে দেখুন। এটা করতে পারলে তাঁরা সম্মানিত বোধ করবেন।

ডিবিসি নিউজের সম্পাদক লোটন একরাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিফলন বাজেটে থাকবে বলে আমার প্রত্যাশা। করমুক্ত আয়সীমা বাড়িয়ে পাঁচ লাখ করা হোক। বেকারত্ব কমনোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। এ জন্য এসএমই উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতা বাড়ানো প্রয়োজন। নয়তো বন্ধ করে দিন। এটা মিনিমাম পাঁচ হাজার টাকা হওয়া উচিত। টেলিভিশনে কোনো ওয়েজ বোর্ড নেই। একটি ওয়েজ বোর্ড এখানেও থাকা প্রয়োজন। ভারতীয় চ্যানেলগুলো এখানে দেদার চলছে, আমাদের কোনো চ্যানেল ভারতে চলে না। এখানেও কাজ করা প্রয়োজন।

এটিএন বাংলার হেড অব নিউজ মনিউর রহমান বলেন, করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখ করা হোক। বাজেট বাস্তবায়ন কতটুকু হলো সেটা দেখা দরকার।

মন্তব্য
নাহিদ ইসলাম

আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা তা প্রত্যাশা করি না
মো. নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ চান না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা চাই না আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিক। প্রথমত, দলের ভেতরে যারা অন্যায়ের জন্য দায়ী, তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। গত ১৭ মার্চ দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, নতুন দলের চ্যালেঞ্জ নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্ নিয়ে।

আন্দোলন থেকে সরকারে, তারপর আবার রাজনীতিতে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাটকে নাহিদ ইসলাম বলেন, একটি সরকারকে বাইরে থেকে দেখা আর ভেতর থেকে দেখা সম্পূর্ণ আলাদা অভিজ্ঞতা। অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব নেয়, তখন বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ সময় ছিল। এটি আমার জন্যও চ্যালেঞ্জিং ছিল। আমি সময়ের দাবিতেই পদত্যাগ করে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরেছি।

এখন আমি এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পথচলা গঠন করতে চাই। নতুন রাজনৈতিক দল চালানো অবশ্যই কঠিন, তবে আমি প্রস্তুত।

নিজের দল এনসিপি সম্পর্কে নাহিদ বলেন, এনসিপি একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক দল এবং আমরা এই আদর্শ বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো নতুন কণ্ঠস্বর, বিশেষ করে তরুণ এবং সব সামাজিক শ্রেণির ব্যক্তিদের জন্য জায়গা তৈরি করা, যারা বছরের পর বছর ধরে ঐতিহ্যবাহী রাজনীতি থেকে বাদ পড়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, এনসিপি এবং জামায়াতে ইসলামী সম্পূর্ণ ভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং আমাদের এজেন্ডাও সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। কিছু দাবিতে মিল থাকতে পারে, যেমন আমরা সাংবিধানিক সংস্কার ও গণপরিষদ গঠনের পক্ষে। কিন্তু আমাদের আদর্শিক অবস্থান ভিন্ন এবং উগ্রবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো আগের শাসনামলের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। দেশে একটি স্থিতিশীল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করা এবং একটি গণপরিষদ গঠন করা। তাই নির্বাচন এনসিপির তাত্ক্ষণিক অগ্রধিকার নয়। বর্তমানে আমরা নির্বাচনের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করছি না।

সূত্র : বাংলাদেশ ডিপ্লোম্যাট

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ