দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচনের পথে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
দ্রুত সংস্কার ও নির্বাচনের পথে সরকার

আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনী প্রস্তুতি ও রাষ্ট্রের সংস্কারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলেছে। অন্তর্বর্তী সরকার সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ বাস্তবায়নের দিকে যাবে নাকি বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ নিয়ে এগোবে তা রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপরই নির্ভর করছে। তবে সরকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ বাস্তবায়ন করে দ্রুত নির্বাচনে যেতে পারে সরকার। কারণ রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যেসব প্রস্তাব রেখেছে, তাতে ইতিবাচক জবাবের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশও ঘটছে।

সে ক্ষেত্রে সংস্কার প্যাকেজ সংক্ষিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

গত ১৭ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা এরই মধ্যে সাত মাস পার করে এসেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে।

কাজেই কী কী সংস্কার করতে চাই করে ফেলতে হবে। এ ছাড়া নির্বাচন আসন্ন উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, যেহেতু নির্বাচন আসছে, নানা রকম সমস্যা হবে, নানা রকম চাপ আসবে।

এ ছাড়া গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে তিনি জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা আগামী বছরের জুনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে।

তবে তারা যদি বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেও প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আগামী ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের কথা বলেছেন। কখনো আগামী বছরের জুনের বদলে মার্চের কথাও বলেছেন।

এদিকে নির্বাচন কমিশন চলতি বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন করার সময়সীমা অতিক্রম করতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। গত ১০ মার্চ ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এই সময়সীমা যাতে পার না হয় সে জন্য ইসি প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে অক্টোবরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে জানতে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরাও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন।

এদিকে নির্ধারিত সময়ের (২০ সেপ্টেম্বর) আগেই সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে তিনটি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেছে। রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবগুলোতে মতামত জানানোর পাশাপাশি নতুন প্রস্তাবও দিতে পারবে। প্রস্তাব বাস্তবায়নের কৌশল সম্পর্কেও মতামত চাওয়া হয়েছে। যেসব প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছবে, সেগুলো বাস্তবায়নে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।

আজ বিএনপি ও এনসিপি লিখিত মতামত জমা দেবে : গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে খেলাফত মজলিস ১৪০টি এবং বাংলাদেশ লেবার পার্টি ১৪৭টি প্রস্তাবের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছে। আজ রবিবার সংলাপে অংশ নেবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এ ছাড়া আজ দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) লিখিত মতামত জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে স্বল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সংস্কার আগে, নির্বাচন পরে কিংবা নির্বাচন আগে, সংস্কার পরেএ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া; তাই সংস্কার এবং নির্বাচন দুটিই একসঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি চার্টার অব রিফর্ম (সংস্কার সনদ) তৈরি হতে পারে। নির্বাচিত সরকার পরে এটা বাস্তবায়ন করবে।

তিনি বলেন, এখন অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ হচ্ছে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা। এরপর নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার প্রথম দিন গত বৃহস্পতিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনা হয়। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এরই মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন সংস্কার বিষয়ে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই সুপারিশের আলোকে ৩৮টি রাজনৈতিক দলকে ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হলেও অর্ধেক দল এখনো মতামত দেয়নি।

গত ১০ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের ডিসেম্বরের টাইমলাইন অতিক্রম করতে চায় না।

দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঐকমত্য চায় কমিশন : গতকাল সকালে জাতীয় সংসদের এলডি হলে প্রথমে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে ও পরে লেবার পার্টির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সংলাপে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। সংলাপে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল এবং খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

সংলাপে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আপনারা মতামতগুলোর অনেক ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছেন, অনেক ক্ষেত্রে আপনাদের কিছু ভিন্নমত আছে, বক্তব্য আছে, সেগুলো আমরা শুনব। আমরা মনে করি, আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা একটা জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে পারব।

তিনি বলেন, অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই আলোচনা শুরু করেছি। দীর্ঘ সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে আপনারা আন্তরিকভাবে মতামত দিয়েছেন। এসব মতামতের ভিত্তিতেই আমাদের আলোচনা এগিয়ে যাবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা চলবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানোই আমাদের লক্ষ্য।

বৈঠক শেষে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৪০টিতে আমরা একমত হয়েছি। ১০টিতে মতৈক্য হয়নি, আর ১৫টিতে আংশিকভাবে সম্মত হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, প্রয়োজনীয় সংস্কার ১০ মাসে করা সম্ভব। এটা অধ্যাদেশ জারি করে করা উচিত। সংস্কার নির্বাচনের আগেই সম্ভব।

গণপরিষদের পক্ষে নয় খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিস গণপরিষদের পক্ষে নয় বলে জানান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, আমরা ৪০০ আসনে নারীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছি। সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর রাখার পক্ষে রয়েছি। এ ছাড়া উচ্চকক্ষে (সিনেটে) সংখ্যালঘুদের ১ শতাংশ ভোটের ভিত্তিতে আসন বণ্টনের অনুরোধ জানিয়েছি। তিনি বলেন, সংবিধানে মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা বিশ্বাস রাখতে হবে। বহুত্ববাদ (সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব) বাদ দিতে হবে। আমরা বলেছি গণতন্ত্রই এনাফ, বহুত্ববাদের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি আরো বলেন, ইসলামের স্পষ্ট বিরোধী কোনো আইন করা যাবে না, তা সংবিধানে বিধান থাকতে হবে। সংবিধান সংশোধন অধ্যাদেশের মাধ্যমে করা সম্ভব, তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের মতামত নেওয়া যেতে পারে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর যারা, আগামী নির্বাচনে তাদের আসার সুযোগ নেই। তাদের বিচার করতে হবে। বিচারের পরে কেউ নিরপরাধ প্রমাণিত হলে, তখন আসতে পারে। অনেকের মতো আমরাও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার বিষয়ে রাজি না। কারণ তারা গণহত্যার বিষয়ে ক্ষমা চায়নি।

সাতটিতে মতপার্থক্য লেবার পার্টির : বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, তাঁরা ১৪৭টি সুপারিশে একমত হয়েছেন, সাতটিতে মতপার্থক্য রয়েছে এবং ১২টিতে আংশিকভাবে সম্মত হয়েছেন। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের পক্ষে মত দিলেও তাঁর দল দেশকে চারটি প্রদেশে ভাগ করার বিপক্ষে, কারণ এতে নানা সমস্যা তৈরি হবে। এ ছাড়া জেলা পরিষদ কার্যকর করার প্রস্তাবও তাঁরা দিয়েছেন। স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদে মেম্বারদের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচনের পরিবর্তে, আগের নিয়মে সরাসরি ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পাঁচ বছর পর একজন ব্যক্তি নির্বাচনে যাওয়ার উপযুক্ত হবেন এমন বিধান করার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লেবার পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চাই। শুধু দলটি নয়, তাদের দোসর জাতীয় পার্টি সমানভাবে দোষী। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন সম্ভব হয়েছে জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি দল সঙ্গে থাকার কারণে। যে দোষে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানাচ্ছি, একই দাবিতে জাতীয় পার্টিসহ দোসরদের বিচারের আওতায় আনতে বলেছি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফের ক্ষমতায় বসানোর জন্য বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এটা রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।

গত বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের সংলাপে অংশ নেয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)। কমিশনের উত্থাপিত ১২০টি প্রস্তাবের সঙ্গে একমত প্রকাশ ও ৪২টিতে অসম্মতি জানায় তারা। ওই দিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সংস্কার প্রস্তাবের ওপর লিখিত মতামত দিয়েছে। জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চায় না। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দলটির। এ ছাড়া তাদের প্রস্তাবে সংবিধানের মূলনীতি প্রসঙ্গে আল্লাহর প্রতি অবিচল ঈমান এবং আস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনের সময় সম্পর্কে জামায়াতের বক্তব্য, ১৫ বছর যদি একটা অবাধ-নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি, তাহলে সেই নির্বাচনের জন্যই মিনিমাম সংস্কার করা প্রয়োজন, সে জন্য যৌক্তিক সময় দিতে আমরা প্রস্তুত। দু-এক মাস আগে-পিছের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নির্বাচনটা নিরপেক্ষ হওয়া। সে জন্য আমরা কোনো রোডম্যাপ ও ডেটলাইন বলিনি। নির্বাচনের রোডম্যাপ ও ডেটলাইন দেওয়া উচিত সরকারের।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পোশাক শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

শেয়ার
পোশাক শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
গাজীপুরের টঙ্গীতে গতকাল সকালে বেতন-বোনাসের দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে সেনা ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করে কারখানার সামনে নিয়ে যান। তখন মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি : ফোকাস বাংলা
মন্তব্য
মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাঁপ

পুনর্বিবেচনার আবেদন পদোন্নতিবঞ্চিত শতাধিক কর্মকর্তার

উবায়দুল্লাহ বাদল
উবায়দুল্লাহ বাদল
শেয়ার
পুনর্বিবেচনার আবেদন পদোন্নতিবঞ্চিত শতাধিক কর্মকর্তার

গত বৃহস্পতিবার রাতে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন প্রশাসনের ১৯৬ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে বিসিএস ২৪তম ব্যাচের পদোন্নতিযোগ্য ৩২০ জনের মধ্যে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৩৭ জন। বাদ পড়েছেন ১৮৩ জন। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্তত ১০০ জনই রবিবার সকালে দল বেঁধে মন্ত্রিপরিষদসচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে দেখা করে পদোন্নতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন দিয়েছেন।

এ সময় উভয় সচিবই বঞ্চিতদের দাবি মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে বঞ্চিতদের অনেকে কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রশাসনে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পান ১৯৬ জন উপসচিব। এর মধ্যে স্বাস্থ্য, খাদ্য ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপদেষ্টার একান্ত সচিবসহ (পিএস) ২১ জন জেলা প্রশাসকও (ডিসি) রয়েছেন।

এ ছাড়া পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তালিকায় সালমান এফ রহমানের পিএস ও শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী সাবেক কয়েকজন ডিসিও রয়েছেন। প্রজ্ঞাপন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, পদোন্নতি পাওয়া শেখ হাসিনা আমলের প্রভাবশালীদের মধ্যে রয়েছেন সালমান এফ রহমানের পিএস আবু সালেহ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ; দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা এ কে এম মনিরুজ্জামান, সাবেক ডিসি সাহেলা আক্তার, শ্রাবস্তী রায় ও অলিউর রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া পদোন্নতি পেয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা পিএস আবুল হাসান, খাদ্য উপদেষ্টার পিএস মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পিএস ড. মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম। এ ছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক ও এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদের পিএস কামরুল হাসান ও আওয়ামী লীগ নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর পিএস আমিনুর রহমানও।
তবে আগের সরকারের মন্ত্রীদের পিএস ও ডিসিসহ এই ব্যাচের অন্তত ১৮৩ জন কর্মকর্তা এবার পদোন্নতি পাননি।

পদোন্নতির পর প্রথম কর্মদিবস রবিবার সকাল ৯টায় বঞ্চিত কর্মকর্তারা দল বেঁধে প্রথমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পরে মন্ত্রিপরিষদসচিবের কাছে যান। তাঁরা এসএসবির প্রভাবশালী দুই কর্মকর্তার কাছেই যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি তাঁরা প্রত্যেকে আলাদাভাবে পদোন্নতি পুনর্বিবেচনার আবেদন দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

একাধিক বঞ্চিত কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, দুই স্যারই আমাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনেছেন।

মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেছেন, তিনিও একসময় বছরের পর বছর বঞ্চিত ছিলেন। বঞ্চনার বেদনা তিনি বোঝেন। বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে জানাবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৪ ব্যাচের একজন বঞ্চিত কর্মকর্তা জানান, যেখানে অন্যান্য ব্যাচের যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার হার কমবেশি ৭০ শতাংশ, অথচ আমাদের ব্যাচের এই হার মাত্র ৪২.৮১ শতাংশ। সালমান এফ রহমানের পিএস যদি পদোন্নতি পান, তাহলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পিএস কি দাবি করতে পারেন না? সে ক্ষেত্রে আমাদের অপরাধটা কী? যে বৈষম্যের অবসানের জন্য জুলাই বিপ্লব হলো, এ সরকারের আমলে তা যদি আরো প্রকট হয়, তাহলে তা হবে চরম হতাশার। আমরা শুধু ন্যায়বিচার চাই। আমরা বলেছি যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা নেই, দুর্নীতির মামলা তো দূরের কথা, কোনো অভিযোগও নেই, এসিআরের নম্বর ভালো ও বিরূপ কোনো মন্তব্য নেই, শিক্ষাগত যোগ্যতায় রেজাল্ট ভালো, তাঁরা কেন বঞ্চিত হবেন? তাঁদের যেন সঠিক জাজমেন্ট হয়।

 

 

 

মন্তব্য

সুন্দরবনে ১৯ বছরে ৩০ বার আগুন, জ্বলছে নতুন এলাকা

    নাশকতা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে
বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী, বাগেরহাট
বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্ত্তী, বাগেরহাট
শেয়ার
সুন্দরবনে ১৯ বছরে ৩০ বার আগুন, জ্বলছে নতুন এলাকা

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের টেপার বিলে জ্বলতে থাকা আগুন নেভার আগেই নতুন করে শাপলার বিল এলাকা আগুনে পুড়ছে। নতুন স্থানে আগুনের ভয়াবহতা অনেক বেশি।

গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাগেরহাট জেলাধীন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর টহল ফাঁড়ির শাপলার বিল এলাকায় গহিন বনে আগুন দেখতে পায় বন বিভাগ। কলমতেজি ক্যাম্পের টেপার বিল এলাকায় যেখানে শনিবার সকালে আগুন দেখা গেছে, সেখান থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে এই শাপলার বিল এলাকা।

তবে টেপার বিল এলাকায় জ্বলতে থাকা আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ করা হয়েছে বলে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানান। এক দিনের ব্যবধানে সুন্দরবনের সাত কিলোমিটারের মধ্যে পৃথক স্থানে আগুনের ঘটনায় নাশকতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে বন অধিদপ্তর।

 

১৯ বছরে ৩০ বার আগুন

বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবনে গত ১৯ বছরে ৩০ বার আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পুড়েছে প্রায় ৯০ একর বনভূমি।

এর আগে ২০২৪ সালের ৪ মে চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া ফরেস্ট ক্যাম্পের লতিফের ছিলা নামক স্থানে আগুনে ৭.৯৮ একর বনভূমি পুড়ে যায। তখনকার কমিটি আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে পারেনি। ২০২১ সালের ৩ মে দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগে। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছিলায় আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির ছোট গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় প্রতিবারই বন বিভাগ তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু কমিটির প্রতিবেদন সুপারিশ কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ থাকে, কাজের কাজ কিছুই হয় না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গত ২০২৪ সালের মে মাসের আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি সুন্দরবনের ২৪, ২৫ এবং ২৭ নম্বর কম্পার্টমেন্টে মধু আহরণের পাস (অনুমতি) বন্ধ রাখার জন্য সুপারিশ করেছে। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হবে।

এবারও টেপার বিল এলাকায় আগুনের পর গতকাল তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ।

এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভায়ীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও)।

গত দুই দিনের দুটি অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে বন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানিয়েছেন।

 

শাপলার বিলে আগুন

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, আগুন যাতে বনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এ জন্য ফায়ার লাইন কাটা হচ্ছে। কাছাকাছি পানির উৎস না থাকায় প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের ভোলা নদী থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি এনে আগুন নেভানো হবে।

চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, আগুনের খবর পাওয়ার পর ড্রোনের মাধ্যমে বনের গহিনে তারা আগুন দেখতে পান। এরপর তাঁরা দ্রুত ফায়ার লেন কাটতে থাকেন। কিন্তু এর মধ্যেই কয়েকটি স্থানে আগুন ফায়ার লেন অতিক্রম করে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ফায়ার লেন কাটার কাজ চলছে। লেন কাটা শেষ হলেই ভোলা নদী থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হবে। কিভাবে আগুন লেগেছে তার কারণ জানাতে পারেননি তিনি।

বাগেরহাট ফায়ার স্টেশনের ডিএডি সাকরিয়া হায়দার জানান, আগুন নেভানোর কাজে অংশ নিতে তাঁরা সুন্দরবনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেননি। খুলনা, বাগেরহাট, মোরেলগঞ্জ, মোল্লাহাট এবং শরণখোলার ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।

 

টেপার বিলের আগুন নির্বাপণ

বাগেরহাট জেলার শরণখোলায় সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি ক্যাম্পের টেপার বিল এলাকার আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করা হয়েছে। ভোলা নদী থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর আগেই ওই এলাকায় প্রায় চার একর বনভূমি পুড়ে গেছে। 

বাগেরহাট ফায়ার স্টেশনের ডিএডি সাকরিয়া হায়দার জানান, গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপণ করা হয়।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, সুন্দরবনের টেপার বিলে এখন আগুনের অস্তিত্ব নেই। কোথাও ধোঁয়াও দেখা যাচ্ছে না। এর পরও বন বিভাগের স্টাফরা আগামী ২৪ ঘণ্টা সেখানে পর্যবেক্ষণে থাকবেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুনের সূত্রপাত এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

ডিএফও নুরুল করিমের ধারণা, মৌসুম শুরুর আগেই অবৈধভাবে কোনো মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারেন। মৌয়ালের মশাল অথবা বিড়ি-সিগারেটের অংশ থেকে সুন্দরবনে আগুন ধরতে পারে। এ ছাড়া আইন ভঙ্গ করে কোনো কোনো রাখাল ভোলা নদী পাড়ি দিয়ে তাদের গবাদি পশু নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ওই রাখালদের ফেলে রাখা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে।

 

নাশকতার আশঙ্কা

প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, এক দিনের ব্যবধানে দুটি পৃথক স্থানে আগুনের ঘটনায় নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। নাশকতামূলকভাবে কেউ সুন্দরবনে আগুন দিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

 

মন্তব্য

জি এম কাদের ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জি এম কাদের ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
জি এম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) ও তাঁর স্ত্রী শেরিফা কাদেরের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। গতকাল রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) দেশের সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে তাঁদের হিসাব জব্দ করতে বলা হয়েছে।

সিআইসি সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখায় পরিচালিত হিসাবগুলো থেকে অর্থ উত্তোলন বা স্থানান্তর স্থগিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ জন্য দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আরেকটি চিঠিতে জি এম কাদের, তাঁর স্ত্রী শেরিফা কাদের, মেয়ে ইশরাত জাহান কাদের ও ভাই মাহফুজ আহমেদের ব্যাংক হিসাব বিবরণী পাঠাতে বলা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে করদাতার একক বা যৌথ নামে অথবা তাঁর মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিচালিত যেকোনো মেয়াদি আমানত হিসাব, এফডিআর, এসটিডি, যেকোনো মেয়াদের সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, ঋণ হিসাব, ফরেন কারেন্সি অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, লকার বা ভল্ট, সঞ্চয়পত্র বা অন্য কোনো ধরনের সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট, ইনভেস্টমেন্ট স্কিম বা ডিপোজিট স্কিমের হালনাগাদ বিবরণী ও ঋণের বিপরীতে রক্ষিত জামানতের বিবরণী সাত দিনের মধ্যে পাঠানোর অনুরোধ করা হলো। এই সময়ের মধ্যে বা আগে হিসাব শুরু হয়ে তা বন্ধ হয়ে গেলে অথবা শেষ হয়ে গেলে বা সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও তথ্য পাঠাতে হবে।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে বিভিন্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এনবিআরকে সহযোগিতা করেনি বলে উল্লেখ করেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।

এবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তথ্য না দিলে এবং তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে আয়কর আইনের বিধান অনুযায়ী এককালীন ৫০ হাজার টাকা ও পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ৫০০ টাকা হারে জরিমানা আরোপ করা হবে। এ ছাড়া অর্থদণ্ডের ও কারাদণ্ড আরোপের জন্য প্রয়োজনীয় ফৌজদারি কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিআইসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, রাজনৈতিকভাবে জাতীয় পার্টি সব সময়ই একটি সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। ভোট কারচুপি ও আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে এই দলটি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।

এখন তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ