শরীয়তপুরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, পালাতে গিয়ে ছেলের মৃত্যু

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
শরীয়তপুরে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা, পালাতে গিয়ে ছেলের মৃত্যু
নিহত মকবুল হোসেন মোল্ল্যা

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় গাছ কাটার জেরে ছেলের হাতে বাবার নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাবাকে কুপিয়ে হত্যার পর পালানোর সময় ছেলের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রবিবার (২৩ মার্চ) রাত ৮টার দিকে উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের চেরাগ আলী ব্যাপারী কান্দি এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- মকবুল হোসেন মোল্ল্যা (৬৫) এবং তার ছেলে রুবেল মোল্ল্যা (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক মকবুল হোসেন মোল্ল্যা জীবিকা নির্বাহের জন্য কৃষিকাজ করতেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। এরপর থেকেই প্রথম স্ত্রীর ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী রুবেল মোল্ল্যার সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। রুবেল মোল্লা সম্প্রতি মালয়েশিয়া থেকে দেশে এসেছেন।

এরপর থেকেই বাবা-ছেলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় এবং রুবেল আলাদা হয়ে বাবার বাড়ির পাশে নিজের জন্য একটি ঘর তৈরি করেন। রুবেল তার বাড়ির আশপাশে বেশ কিছু গাছ লাগিয়েছিলেন।

সম্প্রতি মকবুল ছেলের অনুমতি ছাড়াই তার কয়েকটি গাছ কেটে ফেলেন। রবিবার রাতে এ বিষয়ে জানতে পেরে রুবেল বাবার বাড়িতে গিয়ে এর কারণ জানতে চান।

একপর্যায়ে বাবা-ছেলের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। পরে রুবেল রাগের মাথায় দেশীয় তৈরি দা দিয়ে বাবার মাথায় এলোপাতাড়ি কোপান। এরপর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে বাড়ির পাশের ক্ষেতের মধ্যে পড়ে থাকা গাছের ডালের সঙ্গে তার লুঙ্গি আটকে যায়। এতে রুবেল হোঁচট খেয়ে পড়ে যান এবং সেখানেই হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। এদিকে, গুরুতর আহত মকবুলকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে মুক্তারের চর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নিউ মাইকেল কালের কণ্ঠকে জানান, রুবেলের মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করলে বাবা-ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। সম্প্রতি রুবেল মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। 

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, তার বাবা কিছু গাছ কেটে ফেলেছিলেন, যা নিয়ে রুবেল ক্ষুব্ধ ছিল। এ নিয়েই সে উত্তেজিত হয়ে বাবাকে কুপিয়ে আহত করে। পরে পালানোর সময় সে ফসলি জমিতে পড়ে যায়, অজ্ঞান হয়ে যায় এবং সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে জানতে নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বাবাকে হত্যার পর পালানোর সময় মাঠে পড়ে গিয়ে রুবেলের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য উভয়ের মরদেহ শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

গোপালগঞ্জে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের হেলথ কার্ড প্রদান

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
গোপালগঞ্জে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের হেলথ কার্ড প্রদান
ছবি: কালের কণ্ঠ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলায় মোট ৩৮জন তালিকাভুক্ত আহতদের মধ্যে আজ ৬ জনকে চেক প্রদান করা হয়। তাদের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে চারজনকে ২ লাখ, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ২ জনকে ১ লাখ টাকা করে চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে আহতদের মাঝে এসব চেক বিতরণ করা হয়।

এ সময় পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবীতেষ বিশ্বাস, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হারুন অর রশিদ, গণমাধ্যম কর্মী ও আহত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

দীঘিনালায় দুস্থদের ঈদসামগ্রী দিল সেনাবাহিনী

দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
শেয়ার
দীঘিনালায় দুস্থদের ঈদসামগ্রী দিল সেনাবাহিনী
সংগৃহীত ছবি

খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় অসহায় দুস্থ পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করেছে সেনাবাহিনী। বৃহষ্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় কবাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোনের পক্ষ্য থেকে এসব উপহার দেওয়া হয়। 

দেড় শতাধিক পরিবার এসব ঈদ সামগ্রী পেয়েছেন। 

সেনাবাহিনীর দীঘিনালা জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ওমর ফারুক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আগত পরিবারদের হাতে ঈদসামগ্রী তুলে দেন।

ঈদসামগ্রীর মাঝে ছিল সেমাই, চিনি, দুধ, নুডুলস, চাল, ডাল ও তেল।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জোন উপ অধিনায়ক মো. মেহেদী হাসান, এ্যাডজুটেন্ট ক্যাপ্টেন মো. আহনাফ হোসেন, কবাখালি ইউপি চেয়ারম্যান নলেজ চাকমা ও কবাখালি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউজ্জামান।

মন্তব্য

সাবেক যুবদল নেতার পোস্টারে শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক আখ্যা

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
সাবেক যুবদল নেতার পোস্টারে শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক আখ্যা
সংগৃহীত ছবি

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় যুবদল নেতা রোকনুজ্জামান রাজিব শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করায় চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ভাঙ্গুড়া পৌর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। এর আগে তিনি ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

গতকাল বুধবার (২৬ মার্চ) ওই পোস্টটি দেন তিনি।

তার এই পোস্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীরা ব্যাপক সমালোচনা করছেন।

আরো পড়ুন
২৬ মার্চ গৌরব ও অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস : সেনাপ্রধান

২৬ মার্চ গৌরব ও অনুপ্রেরণার চিরন্তন উৎস : সেনাপ্রধান

 

জানা যায়, রাজিব পেশায় একজন পিকআপ চালক। তবে তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে রাজনীতিতেই বেশি সময় দেন। বিভিন্ন তদবির ও সালিশ বাণিজ্য করে অর্থ আয় করেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এসব ঘটনায় তাকে নিয়ে রয়েছে নানা সমালোচনা।

বুধবার রাতে রাজিব ফেসবুকে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত একটি পোস্টারের ছবি পোস্ট করেন। এতে লেখা, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।’ তার ওই ফেসবুক পোস্টে অনেকেই তাকে ‘অল্প বিদ্যা ভয়ংকর’ বলে মন্তব্য করেন।

ছবিটি পোস্টের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর রাজীব সমালোচনার মুখে ওই পোস্টটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেন।

রোকনুজ্জামান রাজিব বলেন, ‘কম্পিউটার ম্যান পোস্টারটি লিখতে ভুল করেছে। এ বিষয়ে আমি বিব্রত বোধ করছি। তবে বিষয়টি জানার পরে ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’

আরো পড়ুন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের পদত্যাগ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক ও সদস্যসচিবের পদত্যাগ

 

ভাঙ্গুড়া পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

যমুনা সেতুতে ৩৩ হাজার যান পারাপার, প্রায় ৩ কোটি টাকা টোল আদায়

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
শেয়ার
যমুনা সেতুতে ৩৩ হাজার যান পারাপার, প্রায় ৩ কোটি টাকা টোল আদায়
সংগৃহীত ছবি

ঈদুল ফিতর আসন্ন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো যানজট নেই।

এদিকে বাড়ছে যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের পরিমাণ। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর বিপরীত যানবাহন পারাপার হয়েছে ৩৩ হাজার ৭৬৬ টি।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ তথ্য জানান।

সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বুধবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৭৬৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৮ হাজার ২৩৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ৪৫০টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৫২৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

এর বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখ ৫১ হাজার ৪৫০ টাকা।

সেতু কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, মঙ্গলবারের চেয়ে বুধবার যমুনা সেতু দিয়ে ৪ হাজার ৫৩৩টি যানবাহন বেশি পারাপার হয়েছে। গত ৩ দিনে সেতুর ওপর দিয়ে মোট ৮৭ হাজার ৯৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৬২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, 'মহাসড়কে যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে।

মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। আশা করছি ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।'

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, 'মহাসড়কে ৭ শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্বপালন করছেন। এরমধ্যে মোবাইল টিম ও মোটরসাইকেল টিম কাজ করছে। মহাসড়ককে চারটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। মহাসড়কে যাতে কেও অতিরিক্ত ভাড়া নিতে না পারে সেদিকে নজরদারি রয়েছে।'

উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এ মহাসড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের অংশ ৬৫ কিলোমিটার। ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের যানবাহনের ভিড়ে এই মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। 
প্রতিবছর ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি হয়। এ সড়ক দিয়ে  উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করে। গড়ে প্রতিদিন ১৮/২০ হাজার যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু ঈদে এর সংখ্যা ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে যায়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ