মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এক শ্রমিকদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি নিহতের পক্ষের। রবিবার (২৩ মার্চ) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার নতুন মাদারীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত শাকিল মুন্সি (৩২) মাদারীপুর সদর উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি ও নতুন মাদারীপুর গ্রামের মোফাজ্জেল মুন্সির ছেলে।
মাদারীপুর
আধিপত্য নিয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতিকে কুপিয়ে হত্যা
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, মাদারীপুর

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় লিটন হাওলাদার নামে একজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তিনি শহরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার মফেজ হাওলাদারের ছেলে। অপর অভিযুক্ত লিটনের ভাতিজা আল আমিন হাওলাদার। তার বাবার নাম আলমগীর হাওলাদার।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শ্রমিকদল নেতা শাকিল মুন্সির সঙ্গে এলাকার আধিপত্য নিয়ে শহরের বিসিক শিল্পনগরী এলাকার লিটন হাওলাদারের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে নতুন মাদারীপুর এলাকায় একা পেয়ে শাকিলের ওপর হামলা চালায় লিটন ও তার ভাতিজা আল আমিনসহ ১৫-২০ জন। শাকিলকে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকেন।
তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে।
নিহত শাকিলের ভাই রনজু মুন্সিসহ পরিবারের সদস্যদের দাবি, লিটন হাওলাদারকে মাদারীপুর পৌরসভা শ্রমিক দলের সভাপতি হিসেবে সম্প্রতি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর প্রতিবাদ করে সদর উপজেলার শ্রমিক দলের সভাপতি শাকিল মুন্সি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন লিটন।
পরে তিনি ও তার ভাতিজা আল আমিনকে সঙ্গে নিয়ে শাকিলের ওপর হামলা চালায়। তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে শাকিলের মারা যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই বিএনপির সমর্থকরা হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। ঘটনায় পরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, 'আধিপত্য নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।'
সম্পর্কিত খবর

যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় প্রায় ৩ কোটি টাকা
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

ঈদুল ফিতর আসন্ন। ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন ঘরমুখো মানুষ। ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) পর্যন্ত সড়কে যানজট নেই।
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৭৬৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাত ১২টা থেকে বুধবার (২৬ মার্চ) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৭৬৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
সেতু কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, মঙ্গলবারের চেয়ে বুধবার যমুনা সেতু দিয়ে ৪ হাজার ৫৩৩টি যানবাহন বেশি পারাপার হয়েছে। গত ৩ দিনে সেতুর ওপর দিয়ে মোট ৮৭ হাজার ৯৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে৷ এতে টোল আদায় হয়েছে ৭ কোটি ৬২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, ‘মহাসড়কে যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। আশা করছি ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হবে।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘মহাসড়কে ৭ শতাধিক পুলিশ সদস্য দায়িত্বপালন করছেন। এরমধ্যে মোবাইল টিম ও মোটরসাইকেল টিম করছে। মহাসড়ককে চারটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। মহাসড়কে যাতে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে না পারে সেদিকে নজরদারি রয়েছে।’
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়ক পথে উত্তরবঙ্গের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম এ মহাসড়কটি দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক। ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলে অংশ ৬৫ কিলোমিটার। ঈদের সময় ঘরমুখো মানুষের যানবাহনের ভিড়ে এই মহাসড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। প্রতিবছর ঈদে এ মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি হয়। এ সড়ক দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২৩ জেলার যানবাহন চলাচল করে। গড়ে প্রতিদিন ১৮/২০ হাজার যানবাহন সেতু দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু ঈদে এর সংখ্যা ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে অর্ধ লক্ষ অতিক্রম করে।

ময়মনসিংহে কথা-কাটাকাটির জেরে যুবককে হত্যার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহ নগরীর কাচিঝুলি এলাকায় কথা-কাটাকাটির জেরে এক যুবককে শরতা দিয়ে বুকে আঘাত করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতের নাম সাজিদ মিয়া (২৩)।
গতকাল বুধবার (২৬ মার্চ) রাত পৌনে ১২টায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। তিনি নগরীর কাচিঝুলি হামিদ উদ্দিন রোডের আবুল কালাম আজাদ মিয়ার ছেলে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘শফিক মিয়ার ছেলে মন্টি মিয়া ও নিহত সাজিদ মিয়া একই এলাকার বাসিন্দা। তাদের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মন্টি মিয়া সাজিদকে সুপারি কাটার শরতা দিয়ে বুকের মধ্যে আঘাত করেন। এতে গুরুতর আহত হন সাজিদ।
তিনি আরো বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ঘাতক পালিয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে নিহত সাজিদের চাচা নূরু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

জবির ৩৫০ কর্মচারীকে ঈদ উপহার দিল ছাত্রশিবির
জবি প্রতিনিধি

মহান স্বাধীনতা দিবস ও আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫০ কর্মচারীকে ঈদ সামগ্রী উপহার দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। বুধবার (২৬ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে কর্মচারীদের এ ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
তিনি বলেন, 'ইসলামী ছাত্রশিবিরের মানবিক ও কল্যাণমূলক কাজের অংশ হিসেবেই আমরা বছরজুড়ে নানা উপলক্ষ্যে এমন উপহার সামগ্রী প্রদানের কর্মসূচি পালন করে থাকি।
তিনি আরো বলেন, 'স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং আয় বৈষম্যরোধে যাকাতভিত্তিক অর্থনীতির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।'
শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এবং দৈনিক কাজ করেন তারা আসলে খুবই কম টাকা বেতন পান।
উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, 'ক্যাম্পাসে যারা নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করেন তারা নিম্ন বেতনের। আমরা তাদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করেছি। ক্যাম্পাসে কর্মচারীদের শীতবস্ত্র, রোজার ইদে উপহার সামগ্রী ও কুরবানীর গোশত বিতরণ এর আগেও আমরা করেছি। কিন্তু এবছর ছাত্রলীগ না থাকায় প্রকাশ্যে করার সুযোগ হয়েছে।'
অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আবু মুসা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ডক্টর আব্দুল মান্নান, জবি শিবিরের সাবেক সেক্রেটারি সুলতান আহমেদ, অফিস সম্পাদক রবিউল ইসলামসহ বর্তমান শাখা সেক্রেটারিয়েটবৃন্দ।

ফেনীতে উদ্বোধন হলো জুলাই ২৪ শহীদ চত্বর
ফেনী প্রতিনিধি

জুলাই-আগস্ট এর গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যায় ফেনীতে নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে ‘জুলাই ২৪ শহীদ চত্বর’। ফেনী সদর হাসপাতালের সামনে চৌরাস্তা মোড়ে নির্মিত এই শহীদ চত্বরে ফেনীতে আন্দোলনে নিহত ১০ জনের স্মৃতিফলক স্থাপন করে ফেনী পৌরসভা।
শহীদ চত্বরে ‘জেনারেশন জি’ (ZG) ইংরেজি বর্ণের মাঝে বাংলাদেশের সবুজ মানচিত্র শোভা পাচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন এই চত্বরটি নির্মাণে প্রায় ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে করেছে ফেনী পৌরসভা।
এ সময় পৌর পরিষদের প্রশাসক স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন, শহীদদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, আহত ও বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে এই চত্বরটি ‘শহীদ একরাম চত্বর’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৪ সালের নৃশংসভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি একরামুল হক একরামকে গুলি করে, কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে নিজ দলীয় লোকজন হত্যা করেছিল।