এক পরিচালকের জন্য আদালতের মুখোমুখি কেন্দ্রীয় ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এক পরিচালকের জন্য আদালতের মুখোমুখি কেন্দ্রীয় ব্যাংক
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) পরিচালক মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতৃপক্ষের দায়িত্ব প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশের সমস্ত ঋণগ্রহীতার তথ্য সংরক্ষিত হয় ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি)। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ।

ঋণ তথ্যের গোয়েন্দা বিভাগও বলা হয় এটিকে। ব্যাংকিং খাতের ঋণ শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এই বিভাগ ভূমিকা রাখে। এটি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পরিচালক এবং নিয়োগের ক্লিয়ারেন্স প্রদান করে। জাতীয় নির্বাচনের সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নমিনেশনের ক্লিয়ারেন্সও এই বিভাগ থেকেই দেওয়া হয়।
আর এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ, অর্থাৎ সিআইবিতে গত ২৩ বছর স্বপদে বহাল রয়েছেন মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক ব্যক্তি একই বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করলে বিভিন্ন সংকট দেখা দেয়। ওই ব্যক্তির মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাবও তৈরি হতে পারে। আর যখন বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকে আদালত তলব করেন, তখন এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরের দীর্ঘদিনের অনিয়ম, জবাবদিহিতার অভাব এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততার বিরুদ্ধে এক কঠোর সতর্কবার্তা হিসেবেও প্রতিধ্বনিত হয়।

রিট পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছে, মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদ গত বছরের ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ১৪৪০৭/২০২৪-এর আদেশ ইচ্ছাকৃতভাবে অমান্য করেছেন। পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে চরম অবহেলা দেখিয়েছেন। এতে আদালতের প্রতি অবজ্ঞা ও আইনের প্রতি  ‍ধৃষ্টতা প্রকাশ পেয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

প্রধান বিচারপতি রিফাত আহমেদ এবিষয়ে রুল জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কেন ওয়াকিদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ৬ এপ্রিল লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তিনি যেন উক্ত তারিখে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজিরা দেন।

পিটিশনারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আবু খালেদ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খ. বাহার রুমি, নূর মোহাম্মদ আজামী, মো. আব্দুল জব্বার জুয়েল, সুমাইয়া বিনতে আজিজ ও মো. তানভীর প্রধান।

আদালতের নির্দেশ অনুসারে, পিটিশনারকে রেজিস্ট্রার্ড ডাকযোগে এবং প্রচলিত নিয়মে সংশ্লিষ্ট সকল বিবাদীকে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই আদেশ দেশের সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে একটি শক্ত বার্তা। যে কোনো সংস্থা বা কর্মকর্তা যদি আইনের ঊর্ধ্বে উঠতে চান, তাহলে তাদেরকেও জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তবে এই পরিস্থিতি এখন শুধু ওয়াকিদের ব্যক্তিগত দায় নয়। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।

অভিযোগ রয়েছে, মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ একদিনের নয়। অতীতেও বহুবার তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ এবং দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। একাধিক জাতীয় দৈনিকে এসব বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সিআইবিতে ঋণের তথ্য হালনাগাদের নিয়মে পরিবর্তন আনার নির্দেশ দেন তৎকালীন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। মুন্সী মুহাম্মদ ওয়াকিদের পরামর্শে ও তৎকালীন গভর্নরের নির্দেশনা অনুযায়ী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকের ঋণের তথ্য সরাসরি সিআইবির ড্যাশবোর্ডে আপলোড করার ক্ষমতা পায়। সেই সুযোগে আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট অনেকেই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চাপ দিয়ে সিআইবি রিপোর্টে পরিবর্তন করে খেলাপি ঋণকে নিয়মিত দেখিয়েছেন। এমনকি প্রকৃত ঋণখেলাপি হয়েও সিআইবির রিপোর্ট পরিবর্তন করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের বিগত সরকারের অধীনে ডামি নির্বাচনকে সামনে রেখে মুন্সী ওয়াকিদকে একটি বিশেষ এসাইনমেন্ট দিয়ে বর্তমান পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ সিআইবিতে পোস্টিং করান। এসাইনমেন্টটি ছিলো বহির্বিশ্বে যেন ডামি নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখানো যায় সেজন্য বেশি সংখ্যক প্রার্থী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ঋণ খেলাপিদের সিআইবি রিপোর্টে বিশেষ সুবিধা দিয়ে খেলাপী মুক্ত দেখিয়ে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া। এজন্য পলাতক সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার তাকে এই নতুন দায়িত্ব দিয়ে তৎকালীন সিআইবি পরিচালককে সরিয়ে দেন।

এর আগে, গভর্নর রউফ তালুকদার ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারের লঙ্ঘন করে সিআইবি তথ্যের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাত থেকে সরিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে দিয়ে দেন, যেন তারা প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য পরিবর্তন ও সংশোধন করতে পারে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ফের বাড়ল সোনার দাম, ভরি এখন ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ফের বাড়ল সোনার দাম, ভরি এখন ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা
সংগৃহীত ছবি

দেশের বাজারে আরো বেড়েছে সোনার দাম। নতুন করে প্রতি ভরিতে ভালো মানের সোনা (২২ ক্যারেট) দাম এক হাজার ১৫৫ টাকা বেড়ে এক লাখ ৫৬ হাজার ৯৯ টাকা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২৬ মার্চ) থেকে সারা দেশে সোনার নতুন এ দর কার্যকর হবে।

আজ মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার এ মূল্য বৃদ্ধির তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবী (পিওর গোল্ড) সোনার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণে সোনার দাম সমন্বয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাজুস।

আরো পড়ুন
আলোচিত-১০ (২৫ মার্চ)

আলোচিত-১০ (২৫ মার্চ)

 

নতুন মূল্য অনুযায়ী ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম বেড়ে এক লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ২৭ হাজার ৭০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৫ হাজার ৩০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
২০২৭ সাল পর্যন্ত সিমন্সই বাংলাদেশের কোচ

২০২৭ সাল পর্যন্ত সিমন্সই বাংলাদেশের কোচ

 

অপরিবর্তীত রয়েছে রুপার দাম। ক্যাটাগরি অনুযায়ী বর্তমানে ২২ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৫৭৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ৪৪৯ টাকা এবং ১৮ ক্যারেটের রুপার দাম ভরি দুই হাজার ১১১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম এক হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মন্তব্য

ঈদে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
শেয়ার
ঈদে টানা ৯ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল স্থলবন্দর
ছবি: কালের কণ্ঠ

ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা নয়দিন অর্থাৎ ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বেনাপোল স্থলবন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে এ সময় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। ৬ এপ্রিল থেকে যথারীতি বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম চলবে।

এদিকে, ঈদের দিন ছাড়া প্রতিদিন খোলা থাকবে দেশের সব কাস্টমস হাউস ও শুল্ক স্টেশন।

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দ্বিতীয় সচিব (কাস্টমস নীতি) মুকিতুল ইসলাম এক পত্রে এ তথ্য জানান। পত্রে টানা ৯ দিন কাস্টমস ও বন্দর বন্ধ থাকলেও (ঈদের দিন ব্যতিত) সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিন আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম সীমিত আকারে চলমান রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। চট্রগ্রাম কাস্টমস হাউজে এ নির্দেশ পালন করা হলেও বেনাপোলসহ অন্যান্য কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনে তা পালন করা হয় না।

এখানে বন্দর ব্যবহারকারীরা সবাই ছুটিতে চলে যাওয়ায় সব কিছু বন্ধ থাকে।

আরো পড়ুন
২২ বছরের অপেক্ষা ফুরানোর মিশনে নামবে বাংলাদেশ

২২ বছরের অপেক্ষা ফুরানোর মিশনে নামবে বাংলাদেশ

 

দেশের অর্থনীতিতে বেনাপোল বন্দরের ভূমিকা অপরিসীম। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ৯০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। মাত্র সাত দিনের এলসিতে পণ্য আনা যায় এ বন্দর দিয়ে।

বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। আড়াই ঘন্টায় চলে আসা যায় চেকপোস্টে। সে কারণে আমদানিকারকরা পণ্য আমদানির জন্য বেনাপোল বন্দর ব্যবহার করে থাকেন। লম্বা ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে বিরুপ প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই বেনাপোল বন্দরে পণ্যজট লেগেই আছে।
লম্বা ছুটির কারণে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাঁচামালের সংকট দেখা দিতে পারে। সীমান্তের দু‘পাশের ট্রাকজট আরো বাড়বে বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা। তবে এ ছুটিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টযাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

বেনাপোলের সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শামসুর রহমান বলেন, আগামী ২৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বিকেল থেকে বন্ধ হয়ে যাবে বেনাপোল-পেট্রাপোলের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ। অনেক আমদানিকারক ঈদের ছুটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে দেশের বাড়িতে যাবেন। তারা ফিরে না আসা পর্যন্ত কোন পণ্যও খালাস নিবেন না। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে পুনরায় বন্দর ও কাস্টমসের কার্যক্রম সচল হবে বলে তিনি জানান।

এদিকে টানা ছুটির কারনে সীমান্তের দু‘পাশের বন্দরে ট্রাকজট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। বেনাপোলের মতোই পেট্রাপোল বন্দরেও ট্রাকজট রয়েছে। বন্দরে স্থান সংকুলান না হওয়ায় বন্দরের ট্রাক টার্মিনাল, পেট্রাপোল বন্দর টার্মিনালে কয়েকশ পণ্য বোঝাই ট্রাক অপেক্ষা করছে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইব্রাহিম আহম্মদ জানান, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর ও সাপ্তাহিক ছুটির কারনে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক থাকবে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। আগের বছরগুলোতে ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার পাসপোর্টযাত্রী ভারতে গেলেও এ বছর কোন চাপ নেই। 

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন জানান, আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বিকেল থেকে ঈদের ছুটি হয়ে যাবে। ছুটিতে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে যাতে কোন ধরনের নাশকতামূলক বা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী ও আনসার সদস্যরা দিনে রাতে বন্দর এলাকায় টহল দিবে। পাশাপাশি বেনাপোল পোর্ট থানা কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি বলা হয়েছে। আগামী ৬ এপ্রিল থেকে বন্দরের কর্মতৎপরতা বাড়বে।

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বলেন, ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দর এলাকায় যাতে কোনো অপ্রীতিকর ও দুর্ঘটনা না ঘটে সে জন্য বিশেষ নজরদারি নেওয়া হয়েছে। বন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে আমাদের পুলিশ সদস্যরা টহল দিবে গোটা বন্দর এলাকায়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সিগারেটে মূল্যস্তর তিনটি হলে রাজস্ব বাড়বে, ব্যবহার কমবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সিগারেটে মূল্যস্তর তিনটি হলে রাজস্ব বাড়বে, ব্যবহার কমবে
সংগৃহীত ছবি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা ৪টি থেকে কমিয়ে ৩টি করার দাবি জানিয়েছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা।

সিগারেটে ৪টি মূল্যস্তর (নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম) থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করে না। নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে নিরুত্সাহিত হবে।

সোমবার (২৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন অর্থবছরের জন্য তামাক কর ও মূল্য সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে সংগঠন দুটি।

সংবাদ সম্মেলনে তামাক কর ও মূল্য বিষয়ক বাজেট প্রস্তাব সমর্থন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মাহফুজ কবীর বলেন, ‘বর্তমানে আশি শতাংশের অধিক সিগারেট ব্যবহারকারী নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের ভোক্তা। এই দুই স্তরকে একত্রিত করে দাম বৃদ্ধি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং সিগারেটের ব্যবহার কমবে। বর্ধিত রাজস্ব চলমান বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।’

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা বলেন, ‘সরকারের উচিত হবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবধরনের তামাকপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত ৭টি মহানগরীর (ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল এবং রংপুর) নিত্যপণ্যের গড় খুচরা মূল্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয় যে, ২০২১ সালের (৪ জুলাই) তুলনায় ২০২৩ সালে (৪ জুলাই) খোলা চিনির দাম বেড়েছে ৮৯ শতাংশ, আলু ৮৭ শতাংশ, খোলা আটা ৭৫ শতাংশ, পাঙ্গাস মাছ ৪৭ শতাংশ, ডিম ৪৩ শতাংশ, সয়াবিন তেল ৩৪ শতাংশ, গুঁড়ো দুধ ৩০ শতাংশ এবং ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। অথচ একইসময়ে বিভিন্ন স্তরের সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।

সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যে কর ও মূল্যবৃদ্ধির যেসব দাবি তুলে ধরা হয় সেগুলো হচ্ছে, নিম্ন স্তর এবং মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করা; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা; এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ করা। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭% সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।

ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। এ ছাড়া সকল তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তামাকবিরোধীদের কর ও মূল্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে ধূমপান হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে। একইসাথে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আত্মার কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন, কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

উল্লেখ্য, তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা একই সময়ে তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের (২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা) চেয়ে অনেক বেশি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ব্যাংক ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ৯ দিনের ছুটির কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে, তাই গ্রাহকদের নির্বিঘ্ন লেনদেনের জন্য এটিএম বুথে যথেষ্ট টাকা রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

এ ছাড়া পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস), অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে এবং মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সার্বক্ষণিক চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঈদে ব্যাংকগুলোকে এটিএম, পিওএস, কিউআর কোড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং এমএফএসে নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে।

এর পাশাপাশি, এটিএম বুথে সার্বক্ষণিক সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বুথ পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে। গ্রাহকদের সুরক্ষার জন্য পিওএস এবং কিউআর কোডের সেবা সচল রাখা, এবং জালিয়াতি রোধে সতর্কতা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আরো পড়ুন
গরমে বিচারক-আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরতে হবে না

গরমে বিচারক-আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরতে হবে না

 

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, কার্ডভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং এমএফএসে পর্যাপ্ত নগদ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

এ ছাড়া, গ্রাহকদের হয়রানি রোধে ব্যবস্থা এবং হেল্পলাইন সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ