মার্কিন সামরিক চ্যাট গ্রুপ থেকে ফাঁস হওয়া ৫ তথ্য

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মার্কিন সামরিক চ্যাট গ্রুপ থেকে ফাঁস হওয়া ৫ তথ্য
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ। ছবি : এএফপি

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা সিগন্যাল অ্যাপে একটি গ্রুপ চ্যাটে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করছিলেন, তবে ভুলবশত সেই গ্রুপে একজন সাংবাদিককেও যুক্ত করে ফেলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এই গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়টি ওয়াশিংটন ডিসি এখনও হজম করার চেষ্টা করছে। এই ভুলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পরিকল্পনার গোপন তথ্য ফাঁস হয়েছে।

সাধারণত এ ধরনের গোপন সামরিক আলোচনা কেবল নির্দিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।

সাংবাদিক জেফরি গোল্ডবার্গ প্রথমে ভেবেছিলেন, এটি কোনো ভুয়া গ্রুপ। কিন্তু গ্রুপে সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হতে দেখে তিনি সন্দিহান হয়ে ওঠেন। পরে, যখন ইয়েমেনে হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে, তখন তিনি নিশ্চিত হন যে, সেই গ্রুপটি আসল।

সিগন্যাল প্ল্যাটফর্মের ওই গ্রুপে ভুলবশত যুক্ত হন আটলান্টিক ম্যাগাজিনের জেফ্রি গোল্ডবার্গ।

যেখানে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ছাড়াও ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এবং প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথও ছিলেন। আলোচনার বিষয় ছিল ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর ওপর আক্রমণ।

সাংবাদিক গোল্ডবার্গ বলেছেন, ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠীর ওপর বোমা হামলার দুই ঘন্টা আগেই তিনি হামলার গোপন সামরিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ওই গ্রুপ থেকে জানতে পেরেছিলেন। যার মধ্যে অস্ত্র প্যাকেজ, লক্ষ্যবস্তু এবং সময় সম্পর্কে বলা হয়েছিল।

 

ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা নিয়ে ভ্যান্সের প্রশ্ন 

সামরিক পদক্ষেপ সম্পর্কে গোল্ডবার্গ প্রতিবেদন করেছেন, জেডি ভ্যান্স নামের অ্যাকাউন্টটি লিখেছেন, ‘আমি মনে করি আমরা ভুল করছি।’

ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘সুয়েজ খালে জাহাজ আক্রমণকারী হুতি বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করা আমেরিকার চেয়ে ইউরোপীদের স্বার্থ বেশি জড়িত। কারণ ইউরোপ খালের মধ্য দিয়ে বেশি বাণিজ্য পরিচালনা করে।’

ভ্যান্স আরো যোগ করেছেন, তার বস সম্ভবত জানেন না যে, মার্কিন পদক্ষেপ কীভাবে ইউরোপকে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, ‘তার বার্তার সঙ্গে ইউরোপ এখন কতটা অসঙ্গতিপূর্ণ, আমি নিশ্চিত নই যে প্রেসিডেন্ট বিষয়টি জানেন কি না।

তেলের দামে মাঝারি থেকে আরো বাড়ার ঝুঁকি রয়েছে।’

আরো পড়ুন
হুতিদের ওপর হামলা পরিকল্পনার গোপন চ্যাটে ঢুকে পড়লেন সাংবাদিক!

হুতিদের ওপর হামলা পরিকল্পনার গোপন চ্যাটে ঢুকে পড়লেন সাংবাদিক!

 

গোল্ডবার্গের মতে ভাইস প্রেসিডেন্ট আরো জানান, তিনি ঐকমত্যকে সমর্থন জানাবেন তবে এক মাস বিলম্বিত করতে হলে ভালো।  গোল্ডবার্গ তার প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, জেডি ভ্যান্সের মুখপাত্র পরে তাকে একটি বিবৃতি পাঠিয়েছিলেন যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ট্রাম্প এবং ভ্যান্স এই বিষয়ে পরবর্তীকালে আলোচনা করেছেন এবং সম্পূর্ণ একমত’।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প তার ইউরোপীয় ন্যাটো মিত্রদের সমালোচনা করেছেন। তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এবং জোর দিয়েছিলেন, ইউরোপকে তাদের নিজস্ব স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে।

ইউরোপকে দোষারোপ

হুতিদের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন সামরিক হামলা চালাতে পারে এবং কেন করা উচিত, তা নিয়ে বিতর্ক ভ্যান্সকে খুব একটা প্রভাবিত করেনি। তিনি প্রতিরক্ষা সচিবকে বলেন, ‘আপনি যদি মনে করেন আমাদের এটা করা উচিত, তাহলে শুরু করুন। তবে আমি আবারও ইউরোপকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি ঘৃণা করছি।’

হেগসেথ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, ‘অন্যদের উদারতার সুযোগ নিয়ে এর বিনিময়ে কিছু না দেওয়া ইউরোপ সম্পর্কে আপনার ঘৃণা সঠিক, আমি একমত। এটা দুঃখজনক।’

পিচ

‘এসএম’ নামে পরিচিত একজন গ্রুপ সদস্যও বলেন, ‘এই হামলার পর মিসর এবং ইউরোপকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পষ্ট করে বলা উচিত, ‘আমরা এর বিনিময়ে কী আশা করি’।  তিনি জিজ্ঞাসা করেন, ‘ইউরোপ যদি বিনিময়ে কিছু দিতে রাজি না হয়, তাহলে কী?’

ওই ব্যবহারকারী আরো বলেন, ‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে নৌচলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে, তাহলে এর বিনিময়ে  এখানে আরো কিছু অর্থনৈতিক লাভ অর্জন করা প্রয়োজন।’

হামলার পরের অবস্থা

সাংবাদিক গোল্ডবার্গের মতে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান হামলার পর তিনটি ইমোজি পোস্ট করেছেন। একটি মুষ্টি, একটি আমেরিকান পতাকা এবং এরপর আগুন।

মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ পাঁচটি ইমোজি দিয়ে এই হামলার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গোল্ডবার্গ বলেছেন, তিনি দুটি হাতের প্রার্থনা, একটি বাঁকানো বাইসেপ এবং দুটি আমেরিকান পতাকার ইমোজি দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সুসি ওয়াইলস এই হামলার সমর্থনে বার্তা দিয়েছেন। ভ্যান্স হামলার আপডেট দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বলেন, ‘আমি বিজয়ের জন্য প্রার্থনা করব।’ গোল্ডবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, অন্য আরো দুই সদস্য প্রার্থনার ইমোজি যোগ করেছেন।

বাইডেনকে দোষারোপ

ভ্যান্সের উদ্বেগের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লিখেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট আমি আপনার উদ্বেগ বুঝতে পারছি এবং আপনার উত্থাপনকে সম্পূর্ণ সমর্থন করছি। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার বেশিরভাগই কীভাবে কার্যকর হবে তা বোঝা কঠিন (অর্থনীতি, ইউক্রেন শান্তি, গাজা, ইত্যাদি)।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বার্তা পাঠানো কঠিন হতে যাচ্ছে, যাই হোক না কেন হুতিদের কারণে আমাদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে: ১) বাইডেন ব্যর্থ হয়েছেন এবং ২) ইরান অর্থায়ন করেছে।’

ট্রাম্প প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে জো বাইডেনকে ইরানের প্রতি অতিরিক্ত নম্র থাকার জন্য দোষারোপ করে আসছে।

আলোচনায় ওয়াল্টজ

গোল্ডবার্গ বলেছেন, গত ১১ মার্চ মাইকেল ওয়াল্টজ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি সিগন্যাল মেসেজিং প্ল্যাটফর্মে একটি অযাচিত আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। এর দুই দিন পর তাকে ইয়েমেন সম্পর্কে গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই গ্রুপের অংশ ছিলেন না, তবে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ছিলেন।

গোল্ডবার্গ প্রথমে ভেবেছিলেন এটি কোনো প্রতারণা চক্র কিন্তু শীঘ্রই বুঝতে পেরেছিলেন, না এটা আসলে সত্যি, ভুয়া নয়। পুরো ঘটনায় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ওপর চাপ তৈরি করছে। হাউস এবং সিনেটের ডেমোক্র্যাটরা জরুরি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

সোমবার পুরো ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, তিনি কিছুই জানেন না, তবে তিনি মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিরক্ষা সচিবও বলেছেন, কোনো গোপন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে বার্তা দেননি গ্রুপে।’

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল

    এখনো চলছে উদ্ধারকাজ
এএফপি
এএফপি
শেয়ার
মায়ানমারে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১৬০০ ছাড়াল
২৯ মার্চ মায়ানমারের মান্দালয়ে ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে জীবিতদের সন্ধান চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি : এএফপি

মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা শনিবার ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে জীবিতদের সন্ধানে মরিয়া হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।  

স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরের দিকে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প মায়ানমারের মধ্যাঞ্চলের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমে আঘাত হানে। এর কয়েক মিনিট পরই ৬.৭ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়।

এতে মায়ানমারের বিশাল এলাকাজুড়ে ভবন ধসে পড়ে, সেতু ভেঙে যায় এবং সড়কগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ দেখা গেছে, যেখানে প্রায় ১৭ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। ৬৮ বছর বয়সী মান্দালয়ের বাসিন্দা থার আয় বলেন, ‘আমাদের সাহায্য প্রয়োজন। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত কিছুই নেই।

সামরিক জান্তা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মায়ানমারে কমপক্ষে এক হাজার ৬৪৪ জন নিহত এবং তিন হাজার ৪০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। পাশাপাশি ১৩৯ জন এখনো নিখোঁজ। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে আরো ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আসল ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট হয়নি এবং মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

মান্দালয়ে এএফপির সাংবাদিকরা উদ্ধারকর্মীদের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করতে দেখেছেন। রেড ক্রসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবনটির নিচে ৯০ জনের বেশি আটকে থাকতে পারে।

দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর স্কাই ভিলা কনডোমিনিয়ামের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৩০ বছর বয়সী ফিউ লেই খাইংকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ভবনটির ১২ তলার অর্ধেক অংশ ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছিল। তাকে স্ট্রেচারে করে বের করে আনা হলে স্বামী তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু অন্য এক নারী ততটা ভাগ্যবান নন। তার ২০ বছর বয়সী ছেলে এখনো নিখোঁজ, যিনি ওই ভবনে কর্মরত ছিলেন। ওই ভবনের রান্নাঘরে কাজ করা ৫৬ বছর বয়সী মিন মিন খাইং বলেন, ‘আমরা এখনো তাকে খুঁজে পাইনি। সে আমার একমাত্র সন্তান—আমি ভেঙে পড়েছি। ও আমার ডাইনিং রুমে বসে খেয়েছিল, আমাকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে গেল, তারপর ভূমিকম্প হলো। যদি সে আমার সঙ্গে থাকত, হয়তো আমার মতোই বেঁচে যেত।’

এদিকে মান্দালয়ের বিভিন্ন এলাকায় অনেক মানুষ রাত কাটানোর জন্য রাস্তায় আশ্রয় নিচ্ছে। তারা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ভেতরে থাকার ঝুঁকি নিতে চায় না।  

প্যাগোডা-মঠ ধ্বংসস্তূপে পরিণত
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি মায়ানমারে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প। এটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে ব্যাঙ্ককের মতো শত শত কিলোমিটার দূরের শহরেও ভবনগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। মান্দালয়ের শত শত বছরের পুরোনো একটি বৌদ্ধ প্যাগোডা ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

একজন সেনা সদস্য বলেন, ‘প্যাগোডার পাশের মঠটিও ভেঙে পড়েছে। একজন ভিক্ষু মারা গেছেন, কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’

মান্দালয়ে বিমানবন্দরেরও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এটি উদ্ধার তৎপরতায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, বিশেষ করে এমন এক দেশে যেখানে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধ চলছে এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত।

জান্তার বিরল আবেদন
এদিকে মায়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং শুক্রবার বিরল এক আহ্বানে আন্তর্জাতিক সহায়তার অনুরোধ জানিয়েছেন, যা এই বিপর্যয়ের ভয়াবহতা নির্দেশ করে। অতীতে দেশটির সামরিক সরকার বড় ধরনের দুর্যোগের পরও বিদেশি সাহায্য নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল।

ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। রাজধানী নেপিদোতে একটি প্রধান হাসপাতালে আহতদের খোলা জায়গায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।  

অন্যদিকে বিদেশি সাহায্য পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে ভারত থেকে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া চীন ৮০ জনের বেশি উদ্ধারকর্মী পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে এবং ১৩.৮ মিলিয়ন ডলার জরুরি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছে, মায়ানমার এমন ভয়াবহ বিপর্যয় সামলানোর মতো প্রস্তুত নয়। গৃহযুদ্ধের কারণে ইতিমধ্যে ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং অনেকেই খাদ্যসংকটের মধ্যে ছিল।  

ব্যাঙ্ককে ভবন ধস
সীমান্তের ওপারে থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে শুক্রবার একটি ৩০ তলা নির্মীয়মাণ ভবন ধসে পড়ে। দ্বিতীয় রাতেও উদ্ধারকর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গভর্নর চাদচার্ট সিত্তিপুন্ট জানান, ভবন ধসে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে এবং অন্তত আটজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ৭৯ জন এখনো নিখোঁজ, যাদের বেশির ভাগই চাতুচাক উইকএন্ড মার্কেটের কাছে নির্মাণকাজে নিয়োজিত ছিলেন।  

ব্যাঙ্কক নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ফলে ক্ষয়ক্ষতির দুই হাজারের বেশি প্রতিবেদন পাওয়ার পর শতাধিক প্রকৌশলী বিভিন্ন ভবনের নিরাপত্তা পরিদর্শনে নিয়োজিত থাকবেন।

মন্তব্য

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গেছে, রবিবার ঈদ
সংগৃহীত ছবি

সৌদি আরবের আকাশে আজ শনিবার পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল রবিবার (৩০ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন সৌদি আরববাসী।

সৌদি কর্তৃপক্ষ আজ এ ঘোষণা দিয়েছে বলে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস জানিয়েছে।

এদিন দেশটির দুই বৃহৎ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সুদাইর ও তুমাইরে চাঁদ দেখার সবচেয়ে বড় ব্যবস্থা করা হয়।

সেখানে সন্ধ্যা ৬টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের চাঁদের অনুসন্ধান শুরু হয়।

দুই পবিত্র মসজিদভিত্তিক ওয়েবসাইট ইনসাইড দ্য হারামাইমের তথ্য মতে, ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার জন্য সৌদি আরবজুড়ে ১০টি জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে চাঁদ দেখার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে দেশটির সাধারণ মানুষকে ঈদের চাঁদ অনুসন্ধানের আহ্বান জানানো হয়।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের বৃহৎ মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় দেখা যায়নি শাওয়াল মাসের চাঁদ।

দেশটিতে আজ রমজানের ২৯তম দিন ছিল। কিন্তু কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। যার অর্থ ইন্দোনেশিয়ার মানুষ ৩০টি রোজা পূর্ণ করবে।

আরো পড়ুন
তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা

তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা

 
আরো পড়ুন
মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম বলছে বাংলাদেশে ঈদ সোমবার

মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম বলছে বাংলাদেশে ঈদ সোমবার

 

ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও পবিত্র ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করেছে মালয়েশিয়া।

দেশটিতে আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আজ শনিবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে খালিজ টাইমস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়া সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদুল ফিতর পালন করবে। আগামীকাল রবিবার (৩০ মার্চ) খালি চোখে অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের তারিখ ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
তিন দেশে ঈদের তারিখ ঘোষণা
সংগৃহীত ছবি

আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায়। আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে এই তিন দেশে। শনিবার (৩১ মার্চ) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় আজ চাঁদ দেখা না যাওয়ায় দেশটিতে সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদ উদযাপিত হবে।

আরো পড়ুন
অভিনেত্রীর ১৪ মিনিটের ভিডিও ফাঁস!

অভিনেত্রীর ১৪ মিনিটের ভিডিও ফাঁস!

 

এদিকে মালয়েশিয়াও আনুষ্ঠানিকভাবে ঈদের ঘোষণা দিয়েছে। সে অনুযায়ী, সোমবার (৩১ মার্চ) দেশটিতে ঈদ উদযাপিত হবে এবং এ বছর দেশটিতে ৩০টি রোজা পূর্ণ হবে। মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ আশা করছে, আগামীকাল রবিবার খালি চোখে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাবে।

আরো পড়ুন
নতুন টাকা কেনাবেচা কি জায়েজ?

নতুন টাকা কেনাবেচা কি জায়েজ?

 

এ ছাড়া ভারতেও আগামী সোমবার (৩১ মার্চ) ঈদ উদযাপন করা হবে।

দেশটির ইসলামিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রবিবার দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে খালি চোখে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাবে। তবে আজ (শনিবার) দেশটিতে ২৮ রমজান পালিত হচ্ছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

পাকিস্তানে তালেবানবিরোধী ড্রোন হামলায় নিহত ১১

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
পাকিস্তানে তালেবানবিরোধী ড্রোন হামলায় নিহত ১১
প্রতীকী ছবি : এএফপি

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে শনিবার সেনাবাহিনী তালেবানের বিরুদ্ধে ড্রোন হামলা চালালে ১১ জন নিহত হয়। এক দিন আগে এই তালেবান সদস্যরা সাতজন সেনাকে হত্যা করেছিল। পুলিশ এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।

একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে শুক্রবার রাতে তিনটি ড্রোন হামলা চালানো হয়, যার লক্ষ্য ছিল ‘পাকিস্তানি তালেবানের আস্তানা’।

এই অঞ্চলটি আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকা, যেখানে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সহিংসতা বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘শনিবার সকালে আমরা জানতে পারি, নিহতদের মধ্যে দুজন নারী ও তিন শিশু রয়েছে। প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা নিহতদের মরদেহ সড়কে রেখে বিক্ষোভ দেখান।’ স্থানীয়রা দাবি করেছেন, নিহতরা ‘নিরীহ বেসামরিক নাগরিক’, যারা হামলার শিকার হয়েছে।

এ ছাড়া আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ‘তদন্ত চলছে, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় হামলার সময় ওই স্থানে তালেবান যোদ্ধারা ছিল কি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখনই বলা সম্ভব নয়, হামলার শিকার স্থানগুলো বেসামরিক এলাকা ছিল নাকি সেখানে তালেবানরা আশ্রয় নিয়েছিল।’

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত পাকিস্তানি তালেবান মার্চের মাঝামাঝি সময়ে ‘বসন্ত অভিযান’ চালানোর ঘোষণা দেয়। তারা ‘অতর্কিত হামলা, লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ড, আত্মঘাতী হামলা ও হামলার হুমকি’ দেয়।

তার পর থেকে টিটিপি খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে প্রায় ১০০টি হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এর আগে একই প্রদেশে ‘সশস্ত্র তালেবান’ সদস্যরা একটি বাড়িতে লুকিয়ে ছিল এবং সেখানে অভিযানে যাওয়া সাতজন সেনা সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে বলে শনিবার এক পুলিশ সূত্র জানায়। ঘণ্টাব্যাপী চলা ওই বন্দুকযুদ্ধের সময় সেনাবাহিনী সশস্ত্র হেলিকপ্টার মোতায়েন করে, যাতে আটজন তালেবান নিহত হয় এবং আরো ছয়জন সেনা সদস্য আহত হয় বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

এএফপির গণনায় দেখা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে খাইবারপাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ১৯০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

এদিকে খাইবারপাখতুনখোয়ার দক্ষিণে বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোটরসাইকেলে রাখা বোমার বিস্ফোরণে এক সেনা ও এক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ কর্মকর্তা মহসিন আলী এএফপিকে জানিয়েছেন।

এই এলাকা গত মাসে একটি ভয়াবহ হামলার শিকার হয়, যেখানে বন্দুকধারীরা শত শত ট্রেনযাত্রীকে জিম্মি করে এবং ছুটিতে থাকা কয়েক ডজন সেনা সদস্যকে হত্যা করে।

সহিংসতা বৃদ্ধি
পাকিস্তানের আফগান সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলে প্রতিদিন হামলার ঘটনা ঘটছে, যেখানে সেনাবাহিনী নিয়মিতভাবে ‘সন্ত্রাসীদের’ হত্যা করার দাবি করে। তবে এসব অভিযানের মাধ্যমে সহিংসতা কমানো সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে ২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তানে হামলার সংখ্যা বেড়ে গেছে। ইসলামাবাদ তালেবান সরকারকে দোষারোপ করে বলছে, তারা পাকিস্তানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা আফগানিস্তানের মাটিতে আশ্রয় নিয়ে পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করে।

তালেবান সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এবং পাল্টা অভিযোগ করে বলছে, পাকিস্তান নিজেই তার ভূখণ্ডে ‘সন্ত্রাসী’ গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিচ্ছে, বিশেষ করে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর আঞ্চলিক শাখা আইএস-খোরাসানকে।

গত বছর প্রায় এক দশকের মধ্যে পাকিস্তানের জন্য সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর ছিল। ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পাকিস্তানে এক হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ হামলায় নিহত হয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ