সমুদ্র নিরাপত্তার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সহায়তায় মেরিটাইম তথ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ ও মেরিটাইম সংক্রান্ত সিঙ্গল উইন্ডো খ্যাত ইন্দো-প্যাসিফিক ইনফরমেশন শেয়ারিং টুল (আইওআরআইএস) প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশসহ সমগ্র অঞ্চলের নৌ নিরাপত্তাব্যবস্থা আরো আধুনিক ও কার্যকর করা। ফলে আধুনিক ও নিরাপদ এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের যুগে প্রবেশ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
‘আইওআরআইএস’ হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি মেরিটাইম ইনফরমেশন শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম, যা ২০১৮ সালে প্রথম চালু হয়।
এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শুধু তথ্য আদান-প্রদান ছাড়াও রিজিওনাল থ্রেট, হিউম্যান ট্রাফিকিং, নৌপথে অবৈধ চোরাচালান এবং নৌপথের বিভিন্ন অপরাধ সম্পর্কে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জানতে ও জানাতে পারবে একে অপরকে। মেরিটাইম সিঙ্গল উইন্ডো ধারণাকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষও যুগোপযোগী ও বহুমুখী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে।
গত ৩ থেকে ১৩ মার্চ চট্টগ্রাম বন্দর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ইন্দো-প্যাসিফিক ইনফরমেশন শেয়ারিং টুল (আইওআরআইএস) বিষয়ক দুটি বিশেষ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মোট ২৮ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেছেন, ‘এই প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের মেরিটাইম সেক্টরের সম্ভাবনাকে আরো সুদৃঢ় করবে এবং জলদস্যুতা, অবৈধ চোরাচালান ও সাইবার হুমকির মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক সক্ষমতা অনেকটা বৃদ্ধি পাবে।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে মেরিটাইম সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই মূলত এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো ছয়জন মেরিটাইম সিঙ্গল উইন্ডো প্রশিক্ষক তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যাঁরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম হবেন।
এই প্রশিক্ষণের ফলে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের অন্যান্য বন্দর আইওআরআইএস প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে, যা আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সংস্থা আইএমওর এফএএল কনভেনশন বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রশিক্ষণ আয়োজনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রিমারিও-২ প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং বাংলাদেশ নৌবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা রাখে।