আজান প্রতিযোগিতায় ইরানি হাফেজের ৮ লাখ ডলার পুরস্কার লাভ

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
আজান প্রতিযোগিতায় ইরানি হাফেজের ৮ লাখ ডলার পুরস্কার লাভ
অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ী প্রতিযোগীরা

সৌদি আরবে কোরআন ও আজান বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত শেষ পর্বে উভয় বিভাগে ২০ বিজয়ীর হাতে ৩০ লাখ মার্কিন ডলার (১২০ কোটি সৌদি রিয়াল) পুরস্কার তুলে দেন সৌদির জেনারেল এন্টারটেইনম্যান্ট অথোরিটির (জিইএ) মহাপরিচালক তুর্কি বিন আবদুল মুহসিন আলে শেখ।

আতর আল-কালাম আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় কোরআন হিফজ বিভাগে প্রথম হয়ে ৩০ লাখ সৌদি রিয়াল (৮ লাখ মার্কিন ডলার) পুরস্কার লাভ করে ইরানের হাফেজ ইউনুস শাহমুরাদি। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে ২০ লাখ সৌদি রিয়াল (পাঁচ লাখ ডলার) পুরস্কার লাভ করে সৌদি আরবের আবদুল আজিজ আল-ফাকিহ।

তৃতীয় হয়ে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার লাভ করে মরক্কোর জাকারিয়া আল-জিরক।

এদিকে আজান প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান লাভ করে ২০ লাখ সৌদি রিয়াল (পাঁচ লাখ ডলার) পুরস্কার লাভ করে সৌদি আরবের মুহাম্মদ আল-শরিফ। এতে দ্বিতীয় হয়ে ১০ লাখ সৌদি রিয়াল লাভ করে ইন্দোনেশিয়ার জিয়াউদ্দিন বিন নিজার আলদিন। তৃতীয় হয়ে পাঁচ লাখ সৌদি রিয়াল লাভ করে রাহিফ আল-হাজ।

চতুর্থ হয়ে তিন লাখ রিয়াল লাভ করে ব্রিটেনের ইবরাহিম আসাদ।

মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের অংশীদারিত্বে আতর আল-কালাম প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ আয়োজন হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করে। কোরআন ও আজান বিষয়ক এ প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যক দেশ থেকে প্রতিযোগীরা অংশ নেয় এবং বিজয়ীদের জন্য পুরস্কার হিসেবে ছিল সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ। গত জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতায় ১৬৫টি দেশের ৫০ হাজারের বেশি প্রতিযোগী অংশ নেন।

বাছাইয়ের পর বিভিন্ন দেশের ৫০ প্রতিযোগী চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেন।

সূত্র : আরব নিউজ

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কোরআন থেকে শিক্ষা

    পর্ব, ৭২৮
শেয়ার
কোরআন থেকে শিক্ষা

আয়াতের অর্থ : ‘মুমিনদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে এবং তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে; এটাই তাদের জন্য উত্তম। তারা যা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টি সংযত করে ও তাদের লজ্জাস্থান হেফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ থাকে তা ছাড়া তাদের আভরণ প্রদর্শন না করে।

তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে, তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতুষ্পুত্র...’। (সুরা : নুর, আয়াত : ৩০-৩১)

আয়াতদ্বয়ে দৃষ্টি অবনত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা ও বিধান

১. নারী ও পুরুষ উভয়ে গাইরে মাহরাম থেকে পুরোপুরি দৃষ্টি অবনত রাখবে। আর মাহরাম নারী-পুরুষের প্রতি পাপ দৃষ্টি দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।

২. শরিয়তে অবৈধ ও হারাম পন্থায় কাম-প্রবৃত্তি চরিতার্থ করা এবং তার সব ভূমিকা ও সহায়ক বিষয় নিষিদ্ধ।

৩. বিনা প্রয়োজনে মাহরাম পুরুষ ছাড়া অন্য পুরুষের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া নারীর জন্যও হারাম।

৪. নারী-পুরুষ সবার জন্য পর্দা করা এবং নিজের সতীত্ব রক্ষা করা ফরজ।

৫. নারীদেহে সৌন্দর্যের প্রতিনিধিত্ব করে এমন সব অঙ্গ জিনাতের অংশ এবং তা পরপুরুষ থেকে আড়াল করা আবশ্যক।

    (তাফসিরে মুনির : ২/৫৭৮)

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ইসলামে জাকাতের গুরুত্ব

আহমাদ ইজাজ
আহমাদ ইজাজ
শেয়ার
ইসলামে জাকাতের গুরুত্ব

জাকাত ইসলামের অন্যতম রুকন বা স্তম্ভ। ইসলাম মানব সমাজে অর্থনৈতিক সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এবং সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে বিত্তশালীদের ওপর নির্দিষ্ট হারে জাকাত ফরজ করেছে। আর জাকাতকে বলা হয়েছে গরিবের অধিকার। এটা কোনোক্রমেই গরিবের প্রতি ধনীর দয়া বা অনুগ্রহ নয়।

ইরশাদ হয়েছে, তাদের (ধনীদের) সম্পদে অধিকারবঞ্চিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিকার আছে। (সুরা : আল-মাআরিজ, আয়াত : ২৪)

ইসলামী বিশ্বকোষের তথ্যমতে, আল-কোরআনে প্রত্যক্ষভাবে জাকাতের কথা এসেছে ৩২ বার। এর মধ্যে নামাজ ও জাকাতের কথা একত্রে এসেছে ২৮ বার।

দ্বিতীয় হিজরিতে রোজা ফরজ হওয়ার পরপরই শাওয়াল মাসে জাকাত ফরজ হয় এবং নবম হিজরিতে এটি পূর্ণাঙ্গরূপে কার্যকর করা হয়।

জাকাতব্যবস্থা অতীতের সব নবীর উম্মতের ওপর অপরিহার্য পালনীয় ছিল। তবে সম্পদের পরিমাণ ও ব্যয়ের খাত বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছিল। যেমনইবরাহিম (আ.) ও তাঁর বংশের নবীদের কথা উল্লেখ করার পর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, আর তাদের করেছিলাম নেতা। তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে পথ প্রদর্শন করত।

তাদের ওহি প্রেরণ করেছিলাম সৎকর্ম করতে, নামাজ কায়েম করতে এবং জাকাত প্রদান করতে।

(সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৯৩)

ইসমাঈল (আ.) সম্পর্কে বলা হয়েছে, সে তার পরিবার-পরিজনকে নামাজ ও জাকাতের নির্দেশ দিত। (সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৫৫)

ঈসা (আ.)-এর প্রসঙ্গে এসেছে, তিনি বলেছেন, যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যত দিন জীবিত থাকি তত দিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে।

(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৩১)

মোটকথা, প্রাচীনকাল থেকেই সব নবী-রাসুলের উম্মতের ওপর নামাজ ও জাকাত ফরজ হিসেবে পালনীয় ছিল।

তবে মুসলমানদের ওপর ধনীদের সম্পদ পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে হিসাব করে প্রতিবছর জাকাত আদায় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

 

জাকাত কার ওপর ফরজ?

জাকাত স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক এমন মুসলিম নর-নারী আদায় করবে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে। তবে এর জন্য শর্ত হলো

এক. সম্পদের ওপর পূর্ণাঙ্গ মালিকানা থাকতে হবে।

দুই. সম্পদ উৎপাদনক্ষম ও বর্ধনশীল হতে হবে।

তিন. নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকতে হবে।

চার. সারা বছরের মৌলিক প্রয়োজন মেটানোর পর অতিরিক্ত সম্পদ থাকলেই শুধু জাকাত ফরজ হবে।

পাঁচ. জাকাত ফরজ হওয়ার জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার পর নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকা শর্ত।

ছয়. কারো কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর থাকলেই শুধু ওই সম্পদের ওপর জাকাত দিতে হবে।

 

জাকাতের নিসাব

ক. সোনা ৭.৫ তোলা=৯৫.৭৪৮ গ্রাম প্রায়। খ. রুপা ৫২.৫ তোলা=৬৭০.২৪ গ্রাম প্রায়।

(আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৩৯৪, আল ফিকহুল ইসলামী : ২/৬৬৯)

দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও ব্যাবসায়িক পণ্যের নিসাব নির্ধারণে সোনা-রুপা হলো পরিমাপক। এ ক্ষেত্রে ফকির-মিসকিনদের জন্য যেটি বেশি লাভজনক হবে, সেটিকে পরিমাপক হিসেবে গ্রহণ করাই শরিয়তের নির্দেশ। তাই মুদ্রা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। তাই যার কাছে ৫২.৫ তোলা সমমূল্যের দেশি-বিদেশি মুদ্রা বা ব্যাবসায়িক পণ্য মজুদ থাকবে, তার ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে।

যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ, তার ৪০ ভাগের এক ভাগ বা ২.৫০ শতাংশ জাকাত দিতে হবে।

সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় বা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে।

(আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬২৩)

 

মন্তব্য
পর্ব : ২১

তারাবিতে কোরআনের বার্তা

শেয়ার
তারাবিতে কোরআনের বার্তা

সুরা রোম

আলোচ্য সুরা শুরু হয়েছে পারস্যের ওপর রোমের বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণীর মাধ্যমে। কয়েক বছরের মধ্যেই সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এরপর আসমান ও জমিনে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন বর্ণনা করা হয়েছে। বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে শিরকের অসারতা ও পূজাকৃত বস্তুর অক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছে।

এরপর আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও অভাবীদের দান করতে বলা হয়েছে। সুদ খেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং কোরআনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। মক্কার কাফিরদের ঈমান না আনার বিষয়ে মহানবী (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়ার মাধ্যমে সুরাটি শেষ হয়েছে।

 

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. পরকাল সম্পর্কে উদাসীন হয়ো না।

(আয়াত : ৭)

২. মন্দ কাজের পরিণাম সব সময় মন্দ হয়। (আয়াত : ১০)

৩. কিয়ামতের দিন অপরাধীরা হতাশ হবে। (আয়াত : ১২)

৪. স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের জন্য আশ্রয়।

(আয়াত : ২১)

৫. ভাষা-বর্ণের বৈচিত্র্য আল্লাহর নিদর্শন।

সুতরাং তা রক্ষা করা আবশ্যক। (আয়াত : ২২)

৬. প্রবৃত্তির অনুসরণ কোরো না।

(আয়াত : ২৯)

৭. দ্বিন পালনে একনিষ্ঠ হও। (আয়াত : ৩০)

৮. পরিশুদ্ধ হৃদয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হও। (আয়াত : ৩১)

৯. বিচ্ছিন্নতাকামীরাই নিজ মতবাদে সন্তুষ্ট।

(আয়াত : ৩২)

১০. হতাশ হওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।

(আয়াত : ৩৬)

১১. আত্মীয়তার হক আদায় করো।

(আয়াত : ৩৮)

১২. সুদে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নেই। জাকাতে সম্পদ বাড়ে। (আয়াত : ৩৯)

১৩. প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষেরই কর্মফল। (আয়াত : ৪১)

সুরা লুকমান

আলোচ্য সুরায় মানবজীবনে কোরআনের প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই সুরার মূল বিষয় লুকমান (আ.)-এর উপদেশ, যা তিনি তাঁর পুত্রকে করেছেন। পুত্রকে তিনি শিরকমুক্ত ইবাদতের নির্দেশ দিয়েছেন। মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে বলেছেন। অহংকারী ও উদ্ধত হতে নিষেধ করেছেন। বিনম্র স্বরে কথা বলতে শিখিয়েছেন। পরে রাত-দিন, চন্দ্র-সূর্য, সাগর ও নৌযান বিষয়ে বর্ণনা করে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন তুলে ধরা হয়েছে। সুরাটি এমন পাঁচটি বিষয় বর্ণনার মাধ্যমে শেষ হয়েছে, যেগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।

 

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. অসার কথা-কাজ পরিহার করো।

(আয়াত : ৬)

২. কোরআন থেকে বিমুখ হয়ো না।

(আয়াত : ৭)

৩. সন্তানকে দ্বিন শেখাও। (আয়াত : ১৩)

৪. মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (আয়াত : ১৪)

৫. পাপের কাজে মা-বাবার অনুসরণ নয়। (আয়াত : ১৫)

৬. মানুষের সঙ্গে উদ্ধত আচরণ কোরো না। (আয়াত : ১৮)

৭. চলাফেরায় বিনম্র হও। (আয়াত : ১৯)

৮. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করো।

(আয়াত : ২২)

সুরা সাজদা

আলোচ্য সুরায় আল্লাহর একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি মহানবী (সা.)-এর রিসালত সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। কিয়ামতের দিনের পরিধি ও বিস্তৃতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীরা কিভাবে অপমানিত হবে, কিভাবে তারা অনুতপ্ত হবে, তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য ও কিভাবে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন, তার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের বর্ণনার মাধ্যমে সুরাটি সমাপ্ত হয়েছে।

 

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. কোরআন সব সন্দেহের উর্ধ্বে। (আয়াত : ২)

২. আল্লাহর সব সৃষ্টি সুন্দর। (আয়াত : ৭)

৩. আল্লাহর সাক্ষাতের কথা ভুলো না।

(আয়াত : ১৪)

৪. তাহাজ্জুদ আদায় করো। (আয়াত : ১৬)

৫. আল্লাহ ছোট ছোট শাস্তি দ্বারা সতর্ক করেন। (আয়াত : ২১)

৬. কোরআন উপেক্ষা করা বড় পাপ।

(আয়াত : ২২)

৭. নেতার কাজ সঠিক পথ দেখান।

(আয়াত : ২৪)

গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান

 

 

মন্তব্য
নবীজির প্রিয় সাহাবি

আকিল ইবনে আবু তালিব (রা.)

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
আকিল ইবনে আবু তালিব (রা.)

আকিল ইবনে আবু তালিব (রা.) ছিলেন রাসুল (সা.)-এর চাচাতো ভাই। তিনি নবীজির চাচা আবু তালিবের সন্তান। হজরত আলী (রা.)-এর ভাই। বয়সে হজরত আলী থেকে ২০ বছর বড়।

তিনি তাঁর পিতার দ্বিতীয় ছেলে। প্রথম ছেলে তালিব। তিনি তালিব থেকে ১০ বছরের ছোট। বিয়ে করেন শাইবা ইবনে রাবিআর মেয়ে ফাতিমাকে।
(উসদুল গাবা : ৬/২২৭; ফাতহুল বারী : ১/২৮৬)

ইসলাম গ্রহণ ও হিজরত

প্রথম থেকেই আকিলের মনোভাব ইসলাম ও মুসলমানের প্রতি দুর্বল ছিল। কিন্তু মক্কার কাফিরদের ভয়ে ইসলামের ছায়াতলে আসতে পারেননি।

পরবর্তী সময়ে মক্কা বিজয়ের বছর (অষ্টম হিজরি) মতান্তরে হুদাইবিয়ার সন্ধির পর ইসলাম গ্রহণ করেন এবং অষ্টম হিজরি সনের প্রথম দিকে মদিনায় হিজরত করেন। ঠিক সেই বছরের জুমাদাল উলা মাসে সংঘটিত মূতার যুদ্ধে অংশ নেন।

তারপর তিনি ফিরে যান মক্কায়। সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণে মক্কা বিজয়, তায়েফ অভিযানে অংশ নিতে পারেননি। কোনো বর্ণনামতে, হুনাইন যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এবং বিপর্যয় মুহূর্তেও ময়দানে অটল ছিলেন। (উসদুল গাবা : ৩/৫৬১; সিয়ারু আলামিন নুবালা : ৩/১৪০, আসহাবে রাসুলের জীবনকথা : ২/১৪৩)

ইসলাম গ্রহণের পর দীর্ঘ সময় রাসুল (সা.)-এর সাহচর্য থেকে দূরে থাকার কারণে ধর্মীয় জ্ঞানে তিনি ততটা বিজ্ঞ-প্রাজ্ঞ না থাকলেও জাহিলি যুগের বিভিন্ন বিষয়ে বিজ্ঞ ছিলেন। যেমনবংশবিদ্যা, প্রাচীন আরবের যুদ্ধ-বিগ্রহের ইতিহাস ইত্যাদি।

কুরাইশদের মধ্যে হজরত আবুবকর (রা.)-এর পরে বংশবিদ্যায় তিনিই ছিলেন সর্বাধিক অভিজ্ঞ। এসব বিষয়ে জানার জন্য মসজিদে নববীতে মানুষ তাঁর কাছে ভিড় জমাতো।

(আস-সীরাতুল হালাবিয়্যাহ : ১/৩৯০)

আকিলের প্রতি রাসুল (সা.)-এর ভালোবাসা

তিনি রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের প্রতি খুব বেশি যত্নশীল ছিলেন। রাসুল (সা.) তাঁকে অন্তর থেকে ভালোবাসতেন। একদা রাসুল (সা.) তাঁকে বলেন, আমি তোমাকে দ্বিগুণ মহব্বত করি। প্রথমত, তুমি আমার চাচাতো ভাই, দ্বিতীয়ত, আমার প্রিয় চাচার প্রিয় পুত্র। রাসুল (সা.) তাঁর জন্য খাইবারের উৎপন্ন শস্য থেকে বার্ষিক ১৪০ ওয়াসাক করে নির্ধারণ করে দেন। (উসদুল গাবা : ৩/৫৬১; সিয়ারু আলামিন নুবালা ৩/১৪০)

ইন্তেকাল

মুয়াবিয়া (রা.)-এর শাসনামলের শেষের দিকে অথবা তাঁর পুত্র ইয়াজিদের শাসনামলের শুরুর দিকে হজরত আকিল (রা.) ইন্তেকাল করেন। তিনিই তাঁর ভাইদের মধ্যে সর্বশেষ ইন্তেকাল করেন। (আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৮/৪৭)

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ