সুরা রোম
আলোচ্য সুরা শুরু হয়েছে পারস্যের ওপর রোমের বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণীর মাধ্যমে। কয়েক বছরের মধ্যেই সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এরপর আসমান ও জমিনে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন বর্ণনা করা হয়েছে। বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে শিরকের অসারতা ও পূজাকৃত বস্তুর অক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছে।
এরপর আত্মীয়-স্বজন, এতিম ও অভাবীদের দান করতে বলা হয়েছে। সুদ খেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং কোরআনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে। মক্কার কাফিরদের ঈমান না আনার বিষয়ে মহানবী (সা.)-কে সান্ত্বনা দেওয়ার মাধ্যমে সুরাটি শেষ হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. পরকাল সম্পর্কে উদাসীন হয়ো না।
(আয়াত : ৭)
২. মন্দ কাজের পরিণাম সব সময় মন্দ হয়। (আয়াত : ১০)
৩. কিয়ামতের দিন অপরাধীরা হতাশ হবে। (আয়াত : ১২)
৪. স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের জন্য আশ্রয়।
(আয়াত : ২১)
৫. ভাষা-বর্ণের বৈচিত্র্য আল্লাহর নিদর্শন।
সুতরাং তা রক্ষা করা আবশ্যক। (আয়াত : ২২)
৬. প্রবৃত্তির অনুসরণ কোরো না।
(আয়াত : ২৯)
৭. দ্বিন পালনে একনিষ্ঠ হও। (আয়াত : ৩০)
৮. পরিশুদ্ধ হৃদয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হও। (আয়াত : ৩১)
৯. বিচ্ছিন্নতাকামীরাই নিজ মতবাদে সন্তুষ্ট।
(আয়াত : ৩২)
১০. হতাশ হওয়া মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়।
(আয়াত : ৩৬)
১১. আত্মীয়তার হক আদায় করো।
(আয়াত : ৩৮)
১২. সুদে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নেই। জাকাতে সম্পদ বাড়ে। (আয়াত : ৩৯)
১৩. প্রাকৃতিক বিপর্যয় মানুষেরই কর্মফল। (আয়াত : ৪১)
সুরা লুকমান
আলোচ্য সুরায় মানবজীবনে কোরআনের প্রভাব বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই সুরার মূল বিষয় লুকমান (আ.)-এর উপদেশ, যা তিনি তাঁর পুত্রকে করেছেন। পুত্রকে তিনি শিরকমুক্ত ইবাদতের নির্দেশ দিয়েছেন। মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে বলেছেন। অহংকারী ও উদ্ধত হতে নিষেধ করেছেন। বিনম্র স্বরে কথা বলতে শিখিয়েছেন। পরে রাত-দিন, চন্দ্র-সূর্য, সাগর ও নৌযান বিষয়ে বর্ণনা করে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন তুলে ধরা হয়েছে। সুরাটি এমন পাঁচটি বিষয় বর্ণনার মাধ্যমে শেষ হয়েছে, যেগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. অসার কথা-কাজ পরিহার করো।
(আয়াত : ৬)
২. কোরআন থেকে বিমুখ হয়ো না।
(আয়াত : ৭)
৩. সন্তানকে দ্বিন শেখাও। (আয়াত : ১৩)
৪. মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (আয়াত : ১৪)
৫. পাপের কাজে মা-বাবার অনুসরণ নয়। (আয়াত : ১৫)
৬. মানুষের সঙ্গে উদ্ধত আচরণ কোরো না। (আয়াত : ১৮)
৭. চলাফেরায় বিনম্র হও। (আয়াত : ১৯)
৮. আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করো।
(আয়াত : ২২)
সুরা সাজদা
আলোচ্য সুরায় আল্লাহর একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি মহানবী (সা.)-এর রিসালত সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। কিয়ামতের দিনের পরিধি ও বিস্তৃতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। কিয়ামতের দিন অবিশ্বাসীরা কিভাবে অপমানিত হবে, কিভাবে তারা অনুতপ্ত হবে, তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঈমানদারদের বৈশিষ্ট্য ও কিভাবে তারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন, তার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের বর্ণনার মাধ্যমে সুরাটি সমাপ্ত হয়েছে।
আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত
১. কোরআন সব সন্দেহের উর্ধ্বে। (আয়াত : ২)
২. আল্লাহর সব সৃষ্টি সুন্দর। (আয়াত : ৭)
৩. আল্লাহর সাক্ষাতের কথা ভুলো না।
(আয়াত : ১৪)
৪. তাহাজ্জুদ আদায় করো। (আয়াত : ১৬)
৫. আল্লাহ ছোট ছোট শাস্তি দ্বারা সতর্ক করেন। (আয়াত : ২১)
৬. কোরআন উপেক্ষা করা বড় পাপ।
(আয়াত : ২২)
৭. নেতার কাজ সঠিক পথ দেখান।
(আয়াত : ২৪)
গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান