ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২১ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫
৭ চৈত্র ১৪৩১, ২১ রমজান ১৪৪৬

মানসিক শক্তি বৃদ্ধির দোয়া

শেয়ার
মানসিক শক্তি বৃদ্ধির দোয়া

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ছাব্বিতনি, ওয়াজআলনি হাদিয়াম মাহদিয়্যা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে স্থির রাখুন এবং আমাকে হিদায়াতপ্রাপ্ত ও হিদায়াতকারী বানিয়ে দিন।

সূত্র : জারির (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) (তাঁকে) বলেছেন, তুমি কি জুল-খালাসাহকে ধ্বংস করে আমাকে চিন্তামুক্ত করবে? সেটা ছিল একটি মূর্তি। লোকেরা এর পূজা করত।

সেটাকে বলা হতো ইয়ামানি কাবা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি অশ্বপৃষ্ঠে স্থির থাকতে পারি না। তখন তিনি আমাকে বুকে জোরে একটা থাবা মারলেন এবং বলেন (দোয়া করলেন), ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে স্থির রাখুন এবং তাকে হিদায়াতকারী ও হিদায়াতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন।’ তখন আমি আমারই গোত্র আহমাসের ৫০ জন যোদ্ধাসহ বের হলাম।
...তারপর আমি সেই মূর্তির কাছে গিয়ে সেটা জ্বালিয়ে ফেললাম। এরপর আমি নবী (সা.)-এর কাছে এসে বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কসম! আমি জুল-খালাসাহকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে পাঁচড়াযুক্ত উটের মতো করে আপনার কাছে এসেছি। তখন তিনি আহমাস গোত্র ও তার যোদ্ধাদের জন্য দোয়া করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৩৩)

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কোরআন থেকে শিক্ষা

    পর্ব, ৭২৬
শেয়ার
কোরআন থেকে শিক্ষা

আয়াতের অর্থ : ‘হে মুমিনরা! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে গৃহবাসীদের অনুমতি না নিয়ে এবং তাদেরকে সালাম না করে প্রবেশ কোরো না। এটা তোমাদের জন্য শ্রেয়, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ২৭)

আয়াতে অন্যের ঘরে প্রবেশের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে।

শিক্ষা ও বিধান

১. মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ যে তিনি মানবজাতিকে ঘর দান করেছেন এবং তাদের আব্রু ও একান্ত জীবনের গোপনীয়তা রক্ষার বিধান দান করেছেন।

২. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কারো ঘরে প্রবেশ করতে চাইলে প্রথমে সালাম দেবে, অতঃপর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইবে। এভাবে বলবে, আসসালামু আলাইকুম! আমি কি প্রবেশ করতে পারি?

৩. সুন্নত হলো কারো ঘরে প্রবেশের জন্য তিনবারের বেশি অনুমতি না চাওয়া। একবার অনুমতি চেয়ে সামান্য অপেক্ষা করে দ্বিতীয়বার অনুমতি চাওয়া। তিনবার অনুমতি চেয়ে সাড়া না পেলে চলে যাওয়া।

৪. কেউ যদি শুধু সালাম দেয় এবং আলাদা করে অনুমতি না চায়, তবে তা জায়েজ আছে। তবে সালাম ছেড়ে দিয়ে শুধু অনুমতি চাওয়া উচিত নয়।

৫. কারো ঘরে উঁকি দেওয়া নিষেধ। দরজা আটকানো থাকলে মৃদু টোকা দেওয়া জায়েজ এবং ‘আমি’ বা ‘খুলুন’ ইত্যাদি না বলে নিজের নাম-পরিচয় বলাই নিয়ম।

(তাফসিরে কুরতুবি : ১৫/১৮৮)

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

তারাবিতে কোরআনের বার্তা

    পর্ব : ১৯
শেয়ার
তারাবিতে কোরআনের বার্তা

সুরা আশ-শুআরা

এই সুরার সূচনায় এ কথা বলা হয়েছে যে কোরআন নাজিলের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের হিদায়াত। কোরআনের আগের আরো নবী ও কিতাব এসেছে। তার মধ্যে মুসা (সা.)-এর ঘটনা সবিস্তারে বিবৃত হয়েছে। মুসা (আ.)-এর পর নুহ, হুদ, সালেহ, লুত ও শোয়াইব (আ.) সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।

এই সুরার শেষেও কোরআন সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের অপপ্রচারের উত্তর দেওয়া হয়েছে। সুরার শেষের দিকে সত্য পরিত্যাগ করে কল্পনার ময়দানে বিচরণকারী কবিদের সমালোচনা করা হয়েছে।

 

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. মানুষের সত্যবিমুখতা মুমিনের মর্মবেদনার কারণ। (আয়াত : ২)

২. দ্বিনি কাজে আল্লাহ মুমিনের সঙ্গী হন তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও সাহায্যের সঙ্গে।

(আয়াত : ১৫)

৩. কোনো ভালো কাজ অপর মন্দ কাজের বৈধতা দেয় না। (আয়াত : ২২)

৪. জীবন-মৃত্যু ও সুস্থতা আল্লাহর হাতে। (আয়াত : ৮০-৮১)

৫. মুমিন আল্লাহর কাজে জ্ঞান ও কর্মদক্ষতা চাইবে। (আয়াত : ৮৩)

৬. বাকপটুতাও আল্লাহর অনুগ্রহ।

(আয়াত : ৮৪-৮৫)

৭. বিপথগামী মা-বাবার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো। (আয়াত : ৮৬)

৮. অন্তরের বিশুদ্ধতা পরকালের পাথেয় ও মুক্তির উপায়। (আয়াত : ৮৮-৮৯)

৯. মানুষকে দূরে সরিয়ে দেওয়া মুমিনের কাজ নয়। (আয়াত : ১১৪-১১৫)

১০. দ্বিন প্রত্যাখ্যানের শাস্তি ধ্বংস।

(আয়াত : ১৩৯)

১১. সমকামিতা জঘন্যতম পাপ, যা সমাজ ও সভ্যতার জন্য ধ্বংস ডেকে আনে।

(আয়াত : ১৬৬)

১২. মাপে কম দিয়ো না এবং ত্রুটিপূর্ণ দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার কোরো না।

(আয়াত : ১৮১-১৮২)

১৩. নিজ পরিবারকে দ্বিনের ব্যাপারে সতর্ক করা আবশ্যক। (আয়াত : ২১৪)

১৪. মুমিনদের প্রতি বিনয়ী হও।

(আয়াত : ২১৫)

 

সুরা নামল

এই সুরায় অন্যান্য মাক্কি সুরার মতো ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মুসা, দাউদ, সুলায়মান, সালেহ ও লুত (আ.)-এর জীবনের আশ্চর্য ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। নবীরা কিভাবে নিজ নিজ উম্মত থেকে নিপীড়নের শিকার হয়েছে, সে বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। দাউদ ও সুলায়মান (আ.)-এর ওপর মহান আল্লাহ কত কত নিয়ামত দিয়েছেন, তার একটি বিবরণ রয়েছে এখানে। নবুয়ত ও রাজত্ব কিভাবে একসঙ্গে চলতে পারে, তার একটি চিত্র এই সুরায় তুলে ধরা হয়েছে। সুলায়মান (আ.)-এর অধীনে কিভাবে মানুষ, জিন ও পাখি কাজ করেছে, তার খণ্ডচিত্র এই সুরায় তুলে ধরা হয়েছে। বর্ণনা করা হয়েছে রানি বিলকিসের কথাও। কোরআন নাজিলের উদ্দেশ্য বর্ণনার মধ্য দিয়ে সুরা শেষ হয়েছে।

 

আদেশ-নিষেধ-হিদায়াত

১. অবিশ্বাসীরাই পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দেয়। (আয়াত : ৪)

২. মন্দ কাজের প্রতিবিধানে ভালো কাজ করো। (আয়াত : ১১)

৩. আল্লাহর নিদর্শন প্রত্যাখ্যান কোরো না। (সুরা : নামল, আয়াত : ১৪)

৪. জ্ঞান শ্রেষ্ঠত্ব লাভের উপায়।

(আয়াত : ১৫)

৫. চিঠিপত্রের শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা মুসলমানের নিয়ম। (আয়াত : ২৯-৩০)

৬. জাতীয় সংকটে পরামর্শ কোরো।

(আয়াত : ৩২)

৭. নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিই কোনো জাতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন।

(আয়াত : ৩৩)

৮. যুদ্ধ মুসলমানের কাম্য নয়। কেননা তা জনজীবন বিপর্যস্ত করে। (আয়াত : ৩৪)

৯. যুদ্ধের সময় বীরত্ব প্রদর্শন কোরো। (আয়াত : ৩৭)

১০. নবী-রাসুলদের প্রতি সালাম পাঠ কোরো। (আয়াত : ৫৯)

১১. অন্তরের গোপন কথাও আল্লাহ জানেন। (আয়াত : ৭৪)

১২. নেক আমল কিয়ামতের ভয় দূর করবে। (আয়াত : ৮৯)

১৩. আল্লাহর অনুগত হও। (আয়াত : ৯১)

গ্রন্থনা : মুফতি আতাউর রহমান

 

 

মন্তব্য

যেসব আমলে অন্তরে আল্লাহপ্রেম জাগে

মাইমুনা আক্তার
মাইমুনা আক্তার
শেয়ার
যেসব আমলে অন্তরে আল্লাহপ্রেম জাগে

বান্দার সৌভাগ্যের মূল ভিত্তি হলো, আল্লাহর ভালোবাসা। যার অন্তরে মহান আল্লাহর ভালোবাসা আছে, তার আত্মা প্রশান্ত হয়। তার অন্তরে হিদায়াতের আলো প্রজ্বলিত হয়। তার দুনিয়া ও আখিরাত সাফল্যমণ্ডিত হয়।

তাই তো নবীজি (সা.) মহান আল্লাহর ভালোবাসা বৃদ্ধির দোয়া করতেন। তিনি দোয়া করতেন—‘হে আল্লাহ! আমি আপনার ভালোবাসা, আপনার প্রেমিকদের ভালোবাসা এবং সেই আমলের ভালোবাসা চাই, যা আমাকে আপনার মহব্বতের নিকটবর্তী করবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩২৩৫)

কারণ আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসে তখন আসমানের অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে শুরু করে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা যদি কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন জিবরাইল (আ.)-কে ডাক দেন এবং বলেন, নিশ্চয়ই আমি অমুক লোককে ভালোবাসি, তুমিও তাকে ভালোবাস।

তিনি বলেন, তখন জিবরাইল (আ.) তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর তিনি আকাশমণ্ডলীতে ঘোষণা দিয়ে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক লোককে ভালোবাসেন, সুতরাং আপনারাও তাকে ভালোবাসুন। তখন আকাশবাসীরা তাকে ভালোবাসে। তিনি বলেন, এরপর দুনিয়াতে তাকে নন্দিত, সমাদৃত করা হয়।
(মুসলিম, হাদিস : ৬৫৯৮)

এই হাদিসটি দেখলে পবিত্র কোরআনের সেই আয়াতটি মনে পড়ে যায়, যেখানে আল্লাহ বলেছেন, নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সত্ কাজ করে, পরম করুণাময় অবশ্যই তাদের জন্য (বান্দাদের হৃদয়ে) ভালোবাসা সৃষ্টি করবেন। (সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৯৬)

বর্তমান যুগে চারদিকে ফিতনা ছড়িয়ে পড়েছে, মানুষের মধ্যে গাফিলতি জেঁকে বসেছে, দুনিয়াবি আকর্ষণে মানুষের মনে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া এবং তাঁর মহব্বত অর্জনের উপায় অনুসন্ধান করা।

নিম্নে আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের কিছু উপায় তুলে ধরা হলো

কোরআন তিলাওয়াত : পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত এবং তা নিয়ে গবেষণা মানুষকে কল্যাণের দিকে ধাবিত করে। তাই আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা বাড়াতে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা যেতে পারে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, এটি একটি কল্যাণময় কিতাব, তোমার কাছে অবতীর্ণ করেছি, যাতে তারা এর আয়াতগুলোর প্রতি চিন্তা-ভাবনা করে, আর জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোকেরা উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। (সুরা : সোয়াদ, আয়াত : ২৯)

ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল আমল করা : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ বলেন, ...আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে। এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শোনে...। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০২)

নিজের ইচ্ছার চেয়ে আল্লাহর ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দেওয়া : নবীজি (সা.) বলেছেন, তিনটি জিনিস যার মধ্যে পাওয়া যায়, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে(১) আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে সর্বাধিক প্রিয় হওয়া, (২) কাউকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসা, (৩) কুফরে ফিরে যাওয়া এতটাই অপছন্দ করা, যেমনআগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়া অপছন্দ করে। (বুখারি, হাদিস : ১৬)

আল্লাহর সুন্দর নাম ও গুণাবলি সম্পর্কে জানা : আল্লাহর গুণবাচক নাম সম্পর্কে জানা এবং সেগুলোর অর্থ ও গুরুত্ব অনুধাবনের চেষ্টা করা। কেননা মহান আল্লাহ বলেছেন, বান্দাদের মধ্যে কেবল জ্ঞানীরাই আল্লাহকে ভয় করে। (সুরা : ফাতির, আয়াত : ২৮)

আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতের কথা স্মরণ করা : কারণ আমাদের যা কিছু আছে, সব তাঁরই দেওয়া, ভালোবাসার উপযুক্ত একমাত্র তিনিই। ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের কাছে যে কোনো নিয়ামত আছে, তা আল্লাহর পক্ষ থেকে।

(সুরা : নাহল, আয়াত : ৫৩)

আল্লাহওয়ালাদের সাহচর্য গ্রহণ করা : রাসুল (সা.) বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসরণ করে থাকে, তাই তোমাদের প্রত্যেককে দেখা উচিত কাকে সে বন্ধু বানাচ্ছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৭৮)

 

 

মন্তব্য
রমজান ঐতিহ্য

ইতালিতে রমজান মাসে ধর্মীয় কার্যক্রম

আলেমা হাবিবা আক্তার
আলেমা হাবিবা আক্তার
শেয়ার
ইতালিতে রমজান মাসে ধর্মীয় কার্যক্রম

দক্ষিণ ইউরোপে অবস্থিত ভূমধ্যসাগরীয় দেশ ইতালিতে ইসলাম নবাগত কোনো ধর্ম নয়, বরং ইতালির ভাগ্যোন্নায়নের অনেক কিছু হয়েছে মুসলিমদের নেতৃত্বে। ইসলামের সোনালি যুগে ইতালির সিসিলি দ্বীপপুঞ্জ মুসলিম শাসনাধীন ছিল। এখানেই জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত মুসলিম কবি ও দার্শনিক ইবনে হামাদিস সিসিলি। ইতালির সমাজ আরব সভ্যতা ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত, বিশেষত পশ্চিম ইতালির যেসব দ্বীপ আরব রাষ্ট্রগুলোর নিকটবর্তী, সেখানে আরব রীতি-নীতি ও জীবনাচরণের ছাপ পাওয়া যায়।

বর্তমানে স্থানীয় ও অভিবাসী মিলে ইতালিতে প্রায় ১৫ লাখ মুসলিম বসবাস করে। জনসংখ্যার ২.৩ শতাংশ মুসলিম। ইতালিতে ছোট-বড় ৪৫০টি মসজিদ আছে।

ইতালি গোঁড়া ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রাণকেন্দ্র ভ্যাটিকানের দেশ হলেও সেখানে মুসলমানের আগমন হয়েছিল খুব সহজেই।

সেটা সামরিক বিজয়ের মাধ্যমে হোক, যেমন সিসিলিতে অথবা ইসলাম প্রচারকদের মাধ্যমে হোক, যেমন দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। বর্তমানে ইতালিতে ইসলাম প্রচারে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইতালি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইসলাম প্রচারে তাদের অভাবনীয় সাফল্যের কারণেই তারা কয়েকবার চরমপন্থীদের হামলার শিকার হয়েছে। তারা ধৈর্য ও সহনশীলতার সঙ্গে ইসলাম প্রচার করে যাচ্ছে।
যেসব ইতালীয় ইসলামের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক অভিযোগ উত্থাপন করে, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যুক্তির সঙ্গে তা খণ্ডন করে। পাল্টা আক্রমণের পরিবর্তে তারা চরমপন্থীদের সামনে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরে। এ ছাড়া ইসলামী শিক্ষার বিস্তারে ইতালিতে কয়েকটি ইসলামিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও কাজ করে যাচ্ছে।

ইতালিতে মুসলিম সোসাইটির সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, ইসলাম সম্পর্কে ইতালির শাসক ও রাজনীতিকদের স্বচ্ছ ধারণার অভাব। ফলে তারা ইসলাম বিষয়ে বেসরকারি টিভি চ্যানেল করার অনুমতি দেয় না।

ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তাই একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলের অনুমতি লাভের চেষ্টা করছে। তবে রমজানে কোথাও কোথাও প্রশাসন কিছুটা নমনীয়তা দেখায়। ফলে মুসলিমরা ইফতার তাঁবু করার অনুমতি পায়। কোনো জায়গায় তাঁবু করে তারাবির নামাজ আদায়ের অনুমতিও পাওয়া যায়।

রমজান মাসকে ইতালির মুসলিম ধর্মচর্চা ও ইবাদতের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে। এ সময় তারা মুসলিম দেশে তৈরি পণ্য ও খাবার গ্রহণ করে। শহরের মুসলিম হোটেল ও রেস্তোরাঁয় ইফতার ও সাহরি খায়। রমজান মাসে ইতালির মুসলিমদের আরবীয় খাবারগুলো বিশেষভাবে জনপ্রিয়। রমজান মাসে আরব দেশগুলো থেকে প্রচুর ইফতারসামগ্রী ইতালিতে যায়। যার উল্লেখযোগ্য অংশ যায় উপহার হিসেবে। ইতালির মুসলিম কমিউনিটিগুলো রমজানে ইসলামী বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করে। সেখানে সাধারণত আরব আলেমদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়।

রমজান মাসে ইতালির মুসলিম অধিবাসীরা এবং বিভিন্ন দেশের মুসলিম অভিবাসীরা পরস্পরের কাছে আসার সুযোগ লাভ করে। সাধারণত তারা সবাই সপরিবারে মসজিদে ইফতারি করে। ইফতার অনুষ্ঠানে অভিবাসীরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করে নিয়ে আসে। মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করে ঘরে ফেরে। রমজান মাসে ইতালীয় মুসলিমরা দুই হাত খুলে দান করে। তারা অনুন্নত ও দুর্দশাগ্রস্ত মুসলিম অঞ্চলের জন্য দান করতে বেশি পছন্দ করে। ফিলিস্তিন ও আফ্রিকার দরিদ্র্য অঞ্চলের জন্য মোটা অঙ্কের অর্থ প্রদান করে তারা।

 

সূত্র : অ্যারাব নিউজ ও ইসলাম ওয়েব ডটনেট

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ