<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছোটবেলা থেকেই হকি আর ক্রিকেট ছিল প্রিয়। ঘরে থরে থরে সাজানো তাঁর খেলাধুলায় পুরস্কার পাওয়া মেডেল, ক্রেস্ট ও বিভিন্ন তৈজস। সব কিছুই আছে, শুধু আবদুল্লাহ আল আবির (২৪) নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরিশাল নগরের গোরাচাঁদ দাশ রোডের শত বছরের পুরনো বাসা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাহমুদালয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এখানে এখন ভূতুড়ে নীরবতা। সেই নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রায়ই কান্নার শব্দ ভেসে আসে। এই প্রতিবেদক ওই বাসায় গেলে পাশের কক্ষ থেকে বিলাপ করতে করতে বেরিয়ে এলেন পারভীন সুলতানা। ছেলের পুরস্কারগুলো দেখাচ্ছিলেন তিনি। বাবা মিজানুর রহমান একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাকে সান্ত্বনা দিতে নিষ্ফল চেষ্টা করছিলেন আবিরের বড় বোন মারিয়া ইসলাম। তিনিও ভাইকে বাঁচাতে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ছুটেছেন। সব কিছুই ব্যর্থ করে চলে গেলেন ভাইটা। চোখ মুছতে মুছতে তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক-দুই ব্যাগ নয়, ১২ ব্যাগ রক্ত দিলাম। ভাইটাকে বাঁচাতে ২৪ ঘণ্টা যুদ্ধ করলাম। তবু বাঁচাতে পারলাম না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯ জুলাই বিকেলে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে রাজধানীর বারিধারা এলাকায় সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন আবির। তিনি চাকরি করতেন বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে। ২০ জুলাই সকালে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পরে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়। বরিশাল নগরীর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাহমুদালয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হচ্ছে তাঁর বাবার মামার বাড়ি। এখানেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন আবির। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বোন মারিয়া ইসলাম জানান, ১৯ জুলাই গুলি, সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে কাঁপছিল ঢাকা। দুপুরের খাবার খেতে আবির বারিধারায় তাঁর (মারিয়া) বাসায় যান। খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে আবার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে এক বন্ধু ফোন করে জানান, আবির অসুস্থ হয়ে গুলশান মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, আবিরকে এমজেড হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ছুটে যান। গিয়ে জানতে পারেন, আবিরকে ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে জরুরি বিভাগে ভাইকে খুঁজে পান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মারিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসপাতালে ভাই আমাদের টেনশন না করতে বলছিল। তার পেট বরাবর বুলেট ঢুকে কিডনিতে গিয়ে লাগে। রক্ত ঝরছিল। ড্রেসিং করে বেডে নেওয়ার পর রক্তক্ষরণ বাড়তে থাকে। রাত ১২টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলে। একটি কিডনি অপসারণ করা হয়, কিন্তু রক্তক্ষরণ থামছিল না। পরদিন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আইসিইউয়ে মারা যায় আবির।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পারভীন সুলতানা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার বাবায় বরিশাল ছাইড়া গ্রামে যাইতে চাইত না। হেই গ্রামেই আমার বাপেরে ঘুম পাড়াইয়্যা থুইয়্যা আইছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>