<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গচ্চা গেছে ২০০ কোটি টাকা সঙ্গে ২০ বছর সময় ও শ্রম, বিদ্যুৎ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সবই গচ্চা। অথচ কোনোভাবেই রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। বছর বছর নেওয়া হয়েছে নতুন নতুন প্রকল্প। অথচ জ্বলে না ট্রাফিক সিগন্যালের বাতি। দীর্ঘ সময় ধরে ব্যর্থ সিটি করপোরেশন রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও ছাড়ছে না। নির্দিষ্ট সময় পর পর নগরপিতা পাল্টালেও রাজধানীবাসীর দুঃখ-দুর্দশা দূর না করে তাঁরা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। তবে রাজধানীর মধ্যেই ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ২৪-২৫ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে জ্বলছে সিগন্যাল বাতি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এভাবেই ক্ষোভ ও দুঃখ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যাল বাতির সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ অবস্থায় স্থানীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবার নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর প্রকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। তারপর শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে দুটি বৈঠকও করেছেন। শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। নতুন এই প্রকল্পে আগের মতো টাকা গচ্চা যাবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। বিশেষজ্ঞ, পুলিশ ও মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সূত্র জানায়, রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক সামলাতে সিগন্যাল বাতির ব্যবহার শুরু হয় ২০০১ সালে। ওই বছর ৭০টি ইন্টারসেকশনে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই ব্যবস্থা এক বছরও টেকেনি। রাজধানীতে ১১০টি পয়েন্টে বসানো হয়েছিল সিগন্যাল বাতি। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ২০১২ সালে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> (কেস) প্রকল্পের আওতায় ফের ২৯টি ইন্টারসেকশনে ১১২ কোটি টাকা ব্যয়ে বসানো হয় সিগন্যাল বাতি। আর প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রিমোট ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ আমদানি করা হয়। দুই বছর পর ২০১৪ সালে নেওয়া হয় নতুন উদ্যোগ। তবে ওই ব্যবস্থা চালুর কিছুদিন পরই মুখ থুবড়ে পড়ে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাজধানীর চারটি ইন্টারসেকশনে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক ব্যবস্থা স্থাপনে আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিল ডিটিসিএ। ২০১৬ সালের শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয় ৩৭ কোটি টাকা, পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ কোটি টাকায়।  ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকার রাজধানীর ৪৩টি ট্রাফিক সিগন্যাল সচল করতে কেস প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ নিয়েছিল, যা শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। ওই প্রকল্প শেষ হওয়ার পর গুলশান-২-এ একটি সিগন্যাল বাতি ছাড়া আর কোথাও কোনো বাতি জ্বলে না। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে অন্তত ২০০ কোটি টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিগন্যাল লাইট নিয়ে শুরু থেকেই সিটি করপোরেশন ও পুলিশের মধ্যে টানাপড়েন ছিল। সিটি করপোরেশন প্রকল্প নেওয়া ছাড়া অন্য কিছুতে আগ্রহ না থাকায় কোটি কোটি টাকা খরচ করেও সফল হয়নি। এরই এক পর্যায়ে বিশেষজ্ঞরা পুরো সিস্টেম পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সরকারকে। কিন্তু সেটিও  উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের কারণে সফল হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক শামছুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ট্রাফিক ব্যবস্থার সঙ্গে যেহেতু ট্রাফিক পুলিশ জড়িত, এ কারণে সিগন্যাল লাইটের পুরো দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেটি অনেক দূর এগিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে সেটি থেমে যায়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞরা ২০১৯ সালের শুরুর দিকে রাজধানীর ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা পুলিশের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। প্রস্তাবটির পর্যালোচনা পর্যায়ে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র নির্বাচিত হন আতিকুল ইসলাম। তিনি ওই উদ্যোগ বন্ধ করে দায়িত্বটি সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণে রেখে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করেন। এই পরিস্থিতিতে যানজটে স্থবির ট্রাফিক জট কমাতে রাজধানীর ২২টি মোড়ে স্থানীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শিরোনামের প্রকল্পটির দ্বিতীয় বৈঠক হয়েছে গত সোমবার। তবে এই প্রকল্পে শতকোটি টাকার বিলাসী ব্যয় না করে ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র ১০ কোটি টাকা। এ তথ্য জানান প্রকল্পটির সঙ্গে জড়িত পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি জানান, রাজধানীতে দেশীয় প্রযুক্তিতে বুয়েটের তৈরি ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা হবে। এবারও দুই সিটি করপোরেশন দায়িত্বে থাকলেও সিগন্যাল বাতি চালুর পর যাতে তিন শিফটে নিয়মিত কাজ করা হয় তার জন্য বুয়েট থেকে পুলিশের সঙ্গে অভিজ্ঞ লোক কাজ করবেন। ফলে সিগন্যাল বাতি বন্ধ হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা নেই।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ সিগন্যাল সমন্বয়ের কাজ করলেও সিটি করপোরেশনই বিষয়টি দেখভাল করে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এবার ভালো ফলের আশা করছি। কারণ সিটি করপোরেশন, পুলিশ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ও বুয়েট</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই চারটি প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব পালন করবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকল্পটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সিগন্যাল লাইটের একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন থেকে অর্থায়ন করা হবে। আমি আশাবাদী, যানবাহন নিয়ন্ত্রণে এবারের ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি ভালোভাবে কাজ করবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p>