নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বেধড়ক পিটুনির পর এক যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। একই জেলার হাতিয়ায় ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন বড় ভাই। এ ছাড়া আরো চার জেলায় চারজন খুন হয়েছেন, দুই নারীর লাশ পাওয়া গেছে। কালের কণ্ঠের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
নোয়াখালী : শুক্রবার রাতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর পরর্বতী ইউনিয়নে সন্ত্রাসীদের পিটুনির শিকার হন আবদুল কাদের ওরফে মিলন (৩৫)।
চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে গতকাল শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত মিলন উপজেলার চর হাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় জামায়াত-শিবির ও বিএনপির লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
নিহত আবদুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুর রহিম জানান, রাতে তাঁর অটোরিকশায় বড় ভাই মিলনকে নিয়ে ফেনীর দাগনভূঞা এলাকা থেকে নিজেদের বাড়ি ফিরছিলেন।
পথে একটি মোটরসাইকেলে চড়ে সন্ত্রাসীরা এসে তাঁর ভাইকে অটোরিকশা থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে কয়েকজন নির্মমভাবে পেটাতে থাকে। তাদের প্রত্যেকের হাতে লাঠি ও ধারালো অস্ত্র ছিল। এ সময় তিনি ভাইকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জামায়াতের আমির বেলায়েত হোসেন জানান, ঠিকাদারি ব্যবসার লেনদেন নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের লোকজনের সঙ্গে মিলনের বিরোধ ছিল।
এই ঘটনার সঙ্গে জামায়াত কিংবা ছাত্রশিবিরের কেউ জড়িত নয়।
অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক নুরুল আলম সিকদার জানান, তিনি শুনেছেন, জামায়াত-শিবিরের লোকজন ওই যুবলীগ নেতাকে আটক করে মারধর করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কিংবা সহযোগী সংগঠনের কেউ জড়িত থাকার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
অন্যদিকে হাতিয়ায় বিয়ে নিয়ে বাগবিতণ্ডার জের ধরে ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই খুন হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরচেঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাকিব উদ্দিন (৩০) একই গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে। অভিযুক্ত ছোট ভাই সাকিবকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরের এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাজনাহার বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন।
হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা জানান, আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।
নড়াইল : কালিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। এ সময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এই সংঘর্ষ হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বাবরা-হাচলা ইউপি চেয়ারম্যান পিকুল মোল্যার বাড়িসহ অন্তত ২০টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
কালিয়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এই ঘটনায় আইনুনাগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আমতলী (বরগুনা) : কলাগাছ নিয়ে বিবাদ থামাতে গিয়ে চাচা, চাচাতো ভাই এবং ভাতিজার বাঁশের লাঠির আঘাতে আলমগীর প্যাদা (৪২) নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত আলমগীর প্যাদা মৃত মোনসের আলী প্যাদার ছেলে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হোচেন প্যাদা নামের একজনকে আটক করেছে আমতলী থানার পুলিশ। অন্যরা পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আদমদীঘি (বগুড়া) : সান্তাহারে গতকাল দুপুরে রেললাইন থেকে ট্রাক্টরচালক আমিরুল ইসলামের (৩৬) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছুরিকাঘাতে তাঁকে হত্যা করে বাড়ির পাশের রেললাইনে ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত আমিরুল সান্তাহার পৌর শহরের পোঁওতা টিকরী গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে। সান্তাহার ট্রাক্টরচালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও উপর পোঁওতা গ্রামের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমিরুলের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শেরপুর (বগুড়া) : মাদরাসা শিক্ষিকা মাহমুদা খাতুনের (৩৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শহরের রামচন্দ্রপুরপাড়ার নিজ বাসার বারান্দায় গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় তাঁর লাশটি উদ্ধার হয়।
শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) জয়নাল আবেদীন বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ বলা সম্ভব হবে।
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) : পুকুর থেকে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর (৫০) লাশ উদ্ধার করেছে ভাঙ্গা থানার পুলিশ। গতকাল সকালে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের দীঘলকান্দা গ্রামের খালাসি বাড়ির পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেক মোল্লা বলেন, খবর দেওয়ার পর পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করেছে। এলাকার কেউ লাশটি চিনতে পারেনি।
ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক হাবিবুর রহমান বলেন, লাশের পরনে গোলাপি রঙের সোয়েটার ও হলুদ রঙের সালোয়ার রয়েছে।