পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দাবি ও কাজের স্বীকৃতি পাওয়ার অন্যতম একটি আয়োজন পুলিশ সপ্তাহ। সাধারণত প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শুরুতে পুলিশের সবচেয়ে বড় বার্ষিক অনুষ্ঠান ‘পুলিশ সপ্তাহ’ উদযাপন করা হয়। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানে জনরোষের মুখে পড়ে বাহিনীটি। এরপর আট মাস পেরিয়ে গেলেও পুরোদমে কাজে ফিরতে পারেননি পুলিশ সদস্যরা।
এসব কারণে চলতি বছর পুলিশ সপ্তাহ হবে কি হবে না তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। এসবের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার প্রায় চার মাস পর ২৯ এপ্রিল শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ ২০২৫। তবে চার দিনের বদলে আয়োজন রাখা হচ্ছে তিন দিনের। সীমিত করা হয়েছে আয়োজনও।
২৯ এপ্রিল পুলিশ সপ্তাহ শুরু হওয়ার প্রাথমিক দিনক্ষণ ঠিক করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। চলবে ১ মে পর্যন্ত।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, সব পর্যায়ের পুলিশ সদস্যের মনোবল বাড়িয়ে জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আরো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়াই এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল লক্ষ্য। এবারের আয়োজনের মধ্যে বেশ কিছু কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে।
যেসব আয়োজন থাকছে : এবারের পুলিশ সপ্তাহে থাকছে মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন, বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে আইজিপির ভাষণ, নাগরিক সভা, পুলিশের সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে বিশেষায়িত ইউনিটগুলোর উপস্থাপনা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুনর্মিলন ও মতবিনিময়।
সূত্র জানায়, প্রথমবারের মতো এবার পুলিশ সপ্তাহে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বাহিনীর নীতিনির্ধারকদের মতবিনিময়সভা হবে। কেমন পুলিশ দেখতে চান—এমন বিষয় নিয়ে সেখানে উঠে আসা মতামত গুরুত্ব পাবে।
থাকছে না যেসব আয়োজন : সব সময় প্যারেডের মাধ্যমে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন হলেও এবার তা থাকছে না, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, নৈশভোজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও বাদ।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (সহযোগী মহাপরিদর্শক) ইনামুল হক সাগর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কী কী উদ্যোগ আর গ্রহণ করার প্রয়োজন, সেই বিষয়গুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি।
এসব বিষয়ে মূলত আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া পুলিশের বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো পর্যালোচনার জন্য পুলিশ সপ্তাহের আগেই কিছু প্রস্তুতিমূলক সভা করা হচ্ছে। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।’
পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের পুলিশ সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ বাহিনীর বিপর্যয়ের কারণগুলো নির্ণয় করে সেগুলো প্রতিকার ও সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে। সার্বিকভাবে অনুসন্ধানের পাশাপাশি ইউনিটভিত্তিক সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে পুলিশ এজাতীয় বিপর্যয় এড়িয়ে চলতে পারে।