<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই কন্যাসন্তানের বাবা ২৬ বছর বয়সী মো. রিয়াজ। গ্রাম থেকে গত ১৫ বছর আগে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি জমান। ঢাকার যাত্রাবাড়ী সাদ্দাম মার্কেট এলাকার মদিনা চত্বরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। পেশায় রডমিস্ত্রি ছিলেন। সাত বছর বয়সী মেয়ে বিবি ফাতেমা ঢাকায় বাসার পাশে একটি মাদরাসায় পড়ালেখা করে। ছোট মেয়ে মোসা. ফারিহার বয়স চার বছর। স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ভালোভাবেই চলছিল তাঁদের সংসার। নিজের পরিবারের পাশাপাশি গ্রামে থাকা পঙ্গু বাবার চিকিৎসা ও তাঁদের সংসারের খরচ চালাতেন রিয়াজ। গত ৪ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসেন। ওই দিন রাতে স্ত্রীকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি কালকে আন্দোলনে যাব। যদি মারা যাই, আমাকে মাফ করে দিয়ো। আর সাথে করে এনআইডি কার্ড নিয়ে যাব, যাতে সেটি দেখে লোকজন আমার মরদেহ তোমাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্ত্রী ফারজানা বেগম দুষ্টুমি ভেবে স্বামীর এই কথাগুলোর তেমন পাত্তা দেননি। এর পরও তাঁকে মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে আন্দোলনে যেতে বারণ করেছেন। কিন্তু স্ত্রীকে যাবেন না বলে কথা দিলেও ৫ আগস্ট সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে যাওয়ার অজুহাতে আন্দোলনে চলে যান তিনি। সারা দিন তাঁর কোনো খোঁজ না পেয়ে বিভিন্ন জায়াগায় খোঁজাখুঁজি করেন স্ত্রী ফারজানা। অবশেষে বিকেল ৪টার দিকে খবর আসে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে রিয়াজের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পড়ে আছে। পরে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে গিয়ে তাঁর মরদেহ আইডি কার্ডসহ পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। শহীদ রিয়াজের রানে, বুকের ডান পাশে এবং ডান পাশের কণ্ঠনালিতে তিনটি বুলেটের আঘাত ছিল। সুখের সংসার এখন বিষাদে রূপ নিয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শহীদ রিয়াজ ভোলার দৌলতখান উপজেলার চরখলিফা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রবের ছেলে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আব্দুর রবের এক মেয়ে ও তিন ছেলের মধ্যে বড় ছিলেন রিয়াজ। বাবা আব্দুর রব প্যারালাইজ হলে সংসারের হাল ধরতে ১০ বছর বয়সেই ঢাকায় পাড়ি জমান শহীদ রিয়াজ। ঢাকায় গিয়ে ভবনের রডের কাজ শুরু করেন। কাজ করে যা আয় করতেন, তা দিয়ে নিজের ও বাবার সংসারের খরচ চালাতেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্ত্রী ফারজানা বেগম আরো জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর কোনো উপায় না পেয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে যাত্রাবাড়ী এলাকায় মা-বাবার কাছে আশ্রয় নেন। তিনি তাঁর স্বামী হত্যার বিচার দাবি করেন। পাশাপাশি তাঁর রেখে যাওয়া দুই মেয়ের ভবিষ্যৎ ও সংসার চালানোর ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তিনি।</span></span></span></span></span></p>