<p>বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় সময় সকাল ১০টা। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া রাইসুল ইসলাম অসুস্থ বাবাকে নিয়ে যাচ্ছেন চকসূত্রাপুর বাসায়। বাবাকে রেখেই সাড়ে ১০টায় ছোট ভাইকে নিতে হবে বিদ্যালয় ছুটির পর। সাতমাথা গোলচত্বর থেকে সোজা থানা রোডে যেতেই বাধা দেন দায়িত্বরত ট্রাফিক। সড়ক যথেষ্ট ফাঁকা থাকাবস্থায় বিরক্তিস্বরে তাকে পশ্চিমে স্টেশন রোড ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ জানতে চাইলে কোনো রকম উত্তর দেননি দায়িত্বরত ট্রাফিক ও সার্জেন্ট। </p> <p>অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশির ভাগ ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্ট পেশাটাকে আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করেননি। মনে হয়েছে, চাকরিতে এসেছেন শুধু অবৈধ যানবাহনের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার জন্য। যেখানে অন্য যানবাহনের চলাচল নিষেধ, ঠিক ওই পথেই চলাচল করছে বিশেষ সুবিধা দেওয়া যানগুলো। প্রতিনিয়ত সচেতন কিছু পথচারীর সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হলেও ভয়ে অভিযোগ বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেননি তারা। অনুসন্ধানে এমন পথচারী খুঁজে পাওয়া যায়নি, যারা ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি, অদক্ষতার কথা বলেননি।</p> <p>ট্রাফিক পুলিশ ও সার্জেন্টের দায়সারা দায়িত্ব পালনের সমালোচনা করে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ ও অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) অ্যাডভোকেট জিন্নুল হক জানান, ইচ্ছা থাকলে সর্বনিম্ন ভালো কাজটা করাও সম্ভব, এতে কোনো সন্দেহ নেই। একদিকে যেমন জেলা প্রশাসনের নজরদারি ও পদেক্ষেপের অভাব; অন্যদিকে জেলার ট্রাফিক ব্যবস্থা বন্দি দুর্নীতি, অদক্ষতা ও গাফিলতিতে। দায়িত্বে অবহেলায় শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথা ও এর পার্শ্ববর্তী সব ফুটপথ দখল করে নেওয়া হয়েছে।</p> <p>বগুড়া ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই, প্রশাসন) মো. সালেকুজ্জামান খান আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘জেলায় এ মুহূর্তে ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত ১০৮ জন। এর মধ্যে ৯০ জন কর্মরত পৌরসভা এলাকায়। জনবল সমস্যায় দায়িত্ব পালনে ঘাটতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। ব্যাটারিচালিত ইজি বাইক, অটোরিকশাসহ থ্রি হুইলারের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। যানজটের আরেকটি বড় বাধা ক্যান্টনমেন্ট ও টিএমএসএস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫২-৬০ সিটের বড় বাস চলাচল।’</p> <p>অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচ্ছন্ন ট্রাফিকিং পেতে হলে দ্রুত অবৈধ যান বন্ধ করতে হবে এবং নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হবে। এ ছাড়া শহরের ভেতর থেকে রেললাইন সরিয়ে নিয়ে বিকল্প সড়কের ব্যবস্থা করতে হবে।</p> <p> </p>