<p>মজলিস বা বৈঠককে দুই ভাগে ভাগ করা যায়—১. দ্বিনি বৈঠকখানা, যেখানে ধর্মীয় কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়। ২. দুনিয়াবি বৈঠকখানা।</p> <p>বিভিন্ন উদ্দেশ্যে দুনিয়াবি বৈঠক হয়। যেমন—১. ব্যবসা বিষয়ে বৈঠক, ২. চাকরি বিষয়ে বৈঠক, ৩. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সভা, ৪. পেশাজীবীদের বৈঠক, ৫. নারীদের বৈঠক ইত্যাদি। এসব বৈঠকের স্থান পরিপাটি ও প্রশস্ত হওয়া ইসলামের শিক্ষা।</p> <p>আবু সাঈদ আল-খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, বসার জন্য উত্তম হলো প্রশস্ত স্থান।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮২০)</p> <p>বৈঠকে অন্যের জন্য জায়গা করে দেওয়া বা মজলিস প্রশস্ত করা সওয়াব লাভের উপায়। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে মুমিনরা! যখন তোমাদের বলা হয় মজলিস প্রশস্ত করে দাও, তখন তোমরা সেটি করে দাও। আল্লাহ তোমাদের জন্য প্রশস্ত করে দেবেন। আর যখন বলা হয়, উঠে যাও, তখন উঠে যাও।’ (সুরা : মুজাদালা, আয়াত : ১১)</p> <p>বৈঠকে উপস্থিত হয়ে যেখানে জায়গা পাবে সেখানে বসবে। কারো ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো সভার কাছে পৌঁছবে, তখন সে বসার মতো জায়গা পেলে বসবে, অন্যথায় জায়গা প্রশস্ত হওয়ার অপেক্ষা করবে। অতঃপর জায়গা পেলে সেখানে বসবে।’ (সহিহুল জামে, হাদিস : ৩৯৯)</p> <p>বৈঠকে উপবিষ্ট কাউকে তার আসন থেকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসা যাবে না। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি অন্য কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সেখানে বসবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬২৬৯)</p> <p>বৈঠকে দুজন পাশাপাশি বসলে তাদের মধ্যে গিয়ে বসা সমীচীন নয়, বরং তাদের পাশে বসবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কারো জন্য এটা বৈধ নয় যে সে দুইজনকে পৃথক করে দিয়ে (তাদের মাঝখানে বসবে) তাদের অনুমতি ছাড়াই।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৫২)</p> <p>পেছনে হাত রেখে ঠেস দিয়ে বসা বা দেয়ালে ঠেস লাগিয়ে বসা মজলিসের আদবের পরিপন্থী। তাই এভাবে না বসে সোজা হয়ে বসা উচিত। শারিদ ইবনু সুওয়াইদ (রা.) বলেন, ‘একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) আমার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন আমি আমার বাঁ হাত পিঠে নিয়ে তার পাতার ওপর বসেছিলাম। তিনি বলেন, ‘তুমি কি তাদের মতো বসছো, যারা অভিশপ্ত?’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৪৮)</p> <p>কিছু না ফেলে সে স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত সবার দায়িত্ব হলো বৈঠকে আলোচিত কথাবার্তার গোপনীয়তা রক্ষা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন কেউ কোনো কথা বলে এদিক-ওদিক তাকায়, তবে তা আমানত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৬৮)</p>