<p>আমাদের মানব সমাজে প্রচলিত অনেক ব্যাধির মধ্যে একটি হলো অমূলক ধারণা করা। কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই কাউকে সন্দেহ করা। সামান্য এই ধারণা থেকেই পরবর্তী সময়ে দুই ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর মধ্যে কখনো হিংসা-বিদ্বেষ ও দলাদলির মতো কেলেঙ্কারি পর্যন্ত ঘটে যায়।</p> <p>তাই আল্লাহ তাআলা আমাদের এসব অমূলক ধারণা থেকে বেঁচে থাকতে বলেছেন। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে— ‘হে ঈমানদাররা! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয়ই কিছু ধারণা গুনাহ।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১২)</p> <p>অর্থাৎ কারো ব্যাপারে এমন কিছু ধারণা বা সন্দেহ করা, যে বিষয়টি তার মধ্যে নেই, এটা গুনাহের কাজ। এটা তার হক নষ্টের শামিল। এ জন্য পরকালে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।</p> <p>অনেক সময় দেখা যায়, আমরা কারো ব্যাপারে অনেক বড় কোনো সন্দেহ করে বসি। সেই সন্দেহ থেকে আরো কিছু কল্পনা করে ফেলি। নিজের সন্দেহ-কল্পনার কথা অন্যদের সঙ্গে শেয়ারও করি। পরে যখন প্রকৃত সত্য জানতে পারি, তখন লজ্জিত হতে হয়।</p> <p>নবীজি (সা.)ও সন্দেহ বা ধারণা থেকে কঠিনভাবে দূরে থাকতে বলেছেন। হাদিসে পাকে ইরশাদ হয়েছে—‘সাবধান! তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থাকো। কেননা, অনুমান হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যা।’ (বুখারি, হাদিস : ৪০৬৪; মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৩)</p> <p>আমাদের আরেকটি বদ অভ্যাস কারো ব্যাপারে কোনো কিছু শুনেই বিশ্বাস করে ফেলি। তথ্যের কোনো যাচাই-বাছাই করি না। আল্লাহ তাআলা এ থেকে নিষেধ করে বলেন, ‘হে মুমিনরা! কোনো ফাসেক যদি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ নিয়ে আসে, তবে ভালোভাবে যাচাই করে দেখবে, যাতে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি করে না বসো। ফলে নিজেদের কৃতকর্মের কারণে তোমাদের অনুতপ্ত হতে হয়।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ৬)</p> <p>এ ব্যাপারে নবীজি (সা.) ইরশাদ করেন, ‘একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হতে এতটুকুই যথেষ্ট যে সে যা শোনে, তা-ই বলে বেড়ায়।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৯২)</p> <p>উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে বোঝা গেল, সন্দেহের ইহকালীন ও পরকালীন শাস্তি নিশ্চিত। তাই অন্যের ব্যাপারে অহেতুক সন্দেহ করা থেকে আমাদের বেঁচে থাকা কর্তব্য। কারো সম্পর্কে কিছু শুনলে আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করব। অথবা সরাসরি তার সঙ্গে কথা বলে সত্যতা নিশ্চিত হব। আল্লাহ আমাদের সব ধরনের মিথ্যা ধারণা থেকে হেফাজত করুন!</p>