<p style="text-align:justify">বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই, আমাদের কোনো নেতাই জাতির সামগ্রিক উন্নতিতে কাজ করেনি। তারা কেউ সাম্রাজ্যবাদের দাস অথবা সমাজতন্ত্রের দাস ছিলেন। ফলে আমাদেরকেও দাস-অনুদাস করে তোলা হয়েছে। এই দাসত্ব থেকে বের হতে না পারায় যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। এটা জাতির সবচেয়ে বড় সংকট।</p> <p style="text-align:justify">বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কুষ্টিয়ার শিল্পকলা অ্যাকাডেমির মিলনায়তনে নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এটি আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবির। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ শতাধিক নবীন শিক্ষার্থী অংশ নেন।</p> <p style="text-align:justify">মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, চব্বিশের আন্দোলনে অন্তত ২ হাজার শহীদ ও হাজারো শিক্ষার্থী-জনতার পঙ্গুত্ববরণ ও আহত হওয়ার বিনিময়ে সফলতা এসেছে। এই সফলতার মূল স্পিরিট হলো বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা ভোগ করা। এই সফলতার জন্য প্রথম ত্যাগী রংপুরের আবু সাঈদ। আমরা সকলেই এই আন্দোলনের সামনে ছিলাম।</p> <p style="text-align:justify">শিবির সভাপতি বলেন, শিবির মেধাবীদের সংগঠন। যে শিবির করবে সে সৎ, দক্ষ ও যোগ্য হবে। ছাত্রশিবির রাজনীতি চর্চা করে না, ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চায়। আমরা জাহেলিয়াত মুক্ত নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি করতে চাই। কিন্তু এখন নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। হাসিনার জালিম সরকারের পতনের মতো একই কায়দায় নতুন প্রজন্ম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে জানে। তাই এখন নতুনদের এগিয়ে আসতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">সংগঠনটির ইবি শাখার সভাপতি এইচ এম আবু মুসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন-সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম। এছাড়া অতিথি ছিলেন ইবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সাদ্দাম হোসেন হলের প্রভোস্ট ও বায়েটোকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কুষ্টিয়া-যশোর শাখার টিম সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলার সাবেক আমির অধ্যক্ষ এ কে এম আলী মহসিন, কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মু. সোহাইল ও কুষ্টিয়া শহর শাখার সভাপতি সেলিম রেজা।</p> <p style="text-align:justify">সংগঠনটির ইবি শাখার সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় পুলিশের গুলিতে শহীদ আব্দুল্লাহ আল মোস্তাকিমের বাবা লোকমান হোসাইন। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণের পাশাপাশি শিক্ষা সামগ্রীসহ বিভিন্ন উপহার প্রদান করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক মোহাম্মদ সোহাইল বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের মানবতার নামে হিপোক্রেসি শেখায়। তাদের কাছে বাংলাদেশে মানবাধিকারের সংজ্ঞা এক এবং গাজায় মানবাধিকারের সংজ্ঞা আরেক। অথচ আমরা মানবাধিকার শেখার জন্য তাদের কাছেই যাই। ফলে আমাদের জাতিগতভাবে বিকাশ সাধন হচ্ছে না। জাতিগত সমৃদ্ধির জন্য আমাদের ইসলামের আলোকে নিজেদের ঢেলে সাঁজাতে হবে।</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানের সংগঠনটির ইবি শাখার সভাপতি এইচ এম আবু মুসা বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একটি মডেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এজন্য নবীনসহ দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে চলতে হবে। মজলুম শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত করতে যদি পুরো বাংলাদেশ ভিন্ন দিকে থাকে, ইসলামী ছাত্রশিবির মজলুমের পক্ষে থাকবে। পথভোলা এই জাতিকে পরিবর্তন করার জন্য নবীনদের কাছে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক হিসেবে তৈরি হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।</p>