<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আওয়ামী সরকারবিরোধী আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতেন যুবদল নেতা মিরাজুল ইসলাম মির্জা। অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করতেন। সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে চক্ষুুশূল হয়ে ওঠেন এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। আর এটাই কাল হয় তার জীবনে। মাত্র ২৫ বছর বয়সে মিরাজুলকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়। ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ ঝিনাইদহ শহরের একটি ছাত্রাবাস থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মিরাজুলকে। এক সপ্তাহের মাথায় ২৫ মার্চ মিরাজুলের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পন্নাতলা গ্রামের মাঠে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> মিরাজুলের শতবর্ষী বাবা জোনাব আলী একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে এখনো শোকে স্তব্ধ। ছেলে হারানোর শোক আর কান্নায় পার করেছেন ৯ বছরেরও বেশি সময়। বয়সের ভারে আর চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। বিছানায় শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন মিরাজুলের বৃদ্ধ বাবা। সংসার চালাতে বৃদ্ধ বয়সেও মিরাজুলের মা বুলবুলি খাতুন বাধ্য হয়ে পরের বাড়িতে কাজ করেন। শুধু মিরাজুলই নন, ঝিনাইদহে তার মতো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের ১৯ নেতাকর্মী ও একজন সাধারণ ব্যবসায়ী। একই সময় পুলিশের সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ১৪ চরমপন্থী নেতা। মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত পরিচয় মেলেনি আটজনের।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলায় বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৪২ জন। এর মধ্যে বিএনপির চারজন, জামায়াত-শিবিরের ১৬ জন, সাধারণ ব্যবসায়ী একজন, চরমপন্থী নেতা ১৪ জন ও অজ্ঞাতপরিচয় আটজন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার শনির আখড়া এলাকার বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম, কালীগঞ্জের নলভাঙ্গা গ্রামের বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম রবি, ঝিনাইদহ সদরের খাজুরা গ্রামের বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফার ছেলে গোলাম আজম পলাশ, একই গ্রামের দুুলাল হোসেন, আরাপপুর ক্যাডেট কলেজপাড়ার ব্যবসায়ী তমুর রহমান তুরান, হরিণাকুণ্ডের রঘুনাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ইদ্রিস আলী পান্না, শিবিরকর্মী ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম মামুন, ঝিনাইদহ শহরের শিবির নেতা ইবনুল পারভেজ, শিবিরকর্মী জহুরুল ইসলাম ও তারিক হাসান সজিব, কুষ্টিয়ার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আনিছুর রহমান, ঝিনাইদহ শহরের শহীদ আল মাহমুদ, কালীগঞ্জের ঈশ্বরবা গ্রামের সোহানুর রহমান সোহান, একই উপজেলার বাকুলিয়া গ্রামের শামীম হোসেন, চাপালি গ্রামের আবুজার গিফারী, সদর উপজেলার কালুহাটী গ্রামের হাফেজ জসিম উদ্দীন, সদর উপজেলার অশ্বস্থলী গ্রামের মাদরাসা শিক্ষক ও জামায়াতকর্মী আবু হুরাইরা, কোটচাঁদপুরের বলাবাড়িয়া গ্রামের জামায়াতকর্মী হাফেজ আবুল কালাম ও একই উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের জামায়াত নেতা এনামুল হক বিশ্বাস।  জানা যায়, সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ঝিনাইদহের এসব কর্মীদের লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশ দিয়ে একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন অতি উৎসাহী কিছু পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মদদে হত্যার শিকার হন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবু বকর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে ঝিনাইদহে জামায়াত শিবিরের ১৬ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক এরই মধ্যে আমরা কয়েকটি হত্যার ঘটনায় মামলা করেছি। পর্যায়ক্রমে জেলায় সব বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মামলা করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোনো হত্যাকাণ্ডই আমাদের কাম্য নয়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>