<p>আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা শুধু পাপমোচনের মাধ্যম নয়; বরং একটি মহৎ ইবাদত। মহান আল্লাহ তার রাসুল (সা.)-কে বলেন, ‘তুমি তোমার গোনাহের জন্য ক্ষমা চাও এবং সন্ধ্যায় ও সকালে তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করো।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৫৫)</p> <p>রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তাকে সকাল-সন্ধ্যায় ক্ষমা প্রার্থনার নির্দেশ দিয়েছেন। বিগত প্রত্যেক নবী-রাসুল অধিকহারে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এখানে সংক্ষিপ্তাকারে তাদের কিছু দোয়া বা ক্ষমতা চাওয়ার পদ্ধতি উল্লেখ করা হলো—<br /> (ক) আদম ও হাওয়া (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘তারা (উভয়ে) বলল, হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নিজেদের ওপর জুলুম করেছি। এক্ষণে যদি আপনি আমাদের ক্ষমা না করেন ও দয়া না করেন, তাহলে আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২৩)</p> <p>(খ) নূহ (আ.) স্বীয় উম্মতের মুমিন নারী-পুরুষের জন্য কাতর কণ্ঠে দোয়া করে বলেন, ‘হে আমার রব! তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে, আর যারা মুমিন হয়ে আমার বাড়িতে প্রবেশ করে তাদের এবং মুমিন পুরুষ ও মুমিনা নারীদের ক্ষমা করো। আর তুমি জালেমদের জন্য ধ্বংস ছাড়া কিছুই বৃদ্ধি করো না।’ (সুরা : নূহ, আয়াত : ২৮)</p> <p>(গ) ইব্রাহিম (আ.) হাজেরা ও ইসমাঈল (আ.)-কে মক্কার মরুভূতিতে রেখে এসে আল্লাহর কাছে নির্জনে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! আমাকে সালাত কায়েমকারী বানাও এবং আমার সন্তানদের মধ্য থেকেও। হে আমাদের রব! আমার দোয়া কবুল করো! হে আমাদের প্রভু! আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং ঈমানদার সবাইকে ক্ষমা কোরো যেদিন হিসাব অনুষ্ঠিত হবে।’ (সুরা : ইব্রাহিম, আয়াত : ৪১-৪২)</p> <p>(ঘ) মুসা (আ.) ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, ‘হে রব! আমি আমার নিজের ওপর অবিচার করেছি। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করো! তখন আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয়ই তিনি তো ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা : কাসাস, আয়াত : ১৬)</p> <p>(ঙ) দাউদ (আ.) একইভাবে আল্লাহর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। আল্লাহ বলেন, ‘দাউদ ধারণা করল যে এর দ্বারা আমরা তাকে পরীক্ষা করেছি। ফলে সে তার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল এবং সিজদায় পড়ে গেল ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করল।’ (সুরা : ছোয়াদ, আয়াত : ২৪)</p> <p>(চ) সারা পৃথিবীর বাদশাহ ও নবী সোলায়মান (আ.) দোয়া করেন, ‘হে আমার রব! তুমি আমাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে এমন রাজত্ব দান করো, আমার পরে যেন আর কেউ না পায়। নিশ্চয়ই তুমি মহান দাতা।’ (সুরা : ছোয়াদ, আয়াত : ৩৫)।</p> <p>নবী-রাসুলরা ছিলেন নিষ্পাপ। তারা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান, তাহলে আমাদেরও ক্ষমা চাওয়া দরকার।</p> <p> </p>