<p>নতুন বাড়ি নির্মাণ শেষে উদ্বোধন করার আগে কিছু সুন্নতি আমল ও দোয়া করতে হয়। এর মাধ্যমে মুসলমানদের জীবনে রহমত, বরকত ও নিরাপত্তা লাভে সহায়ক হয়। এটি শুধু ইহকালীন জীবনেই নয় বরং পরকালীন জীবনেও কল্যাণ বয়ে আনে। তাই মুসলিম হিসেবে হাদিসে বর্ণিত আমলের প্রতি সবার মনোযোগী হওয়া একান্ত জরুরি।</p> <p>প্রত্যেক মানুষের স্বপ্ন থাকে একটি নতুন বাড়ি তৈরি করার। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখে থাকার। এই স্বপ্ন পূরণের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হয়। দুই রাকাত সালাতুশ শোকর আদায় করতে হয়। আবু বাকরা (রা.) বলেন, যখন রাসুল (সা.)-এর কাছে কোনো খুশির খবর আসত অথবা তাঁকে কোনো সুসংবাদ দেওয়া হতো, তখনই তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে শোকরসূচক সিজদা আদায় করতেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৭৬৫)</p> <p>প্রত্যেক ভালো কাজ ও কথার শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করা সুন্নত। অন্য বর্ণনায় আল্লাহর প্রশংসার কথা বলা হয়েছে। নতুন বাড়িতে ‘বিসমিল্লাহ’ পাঠ করে প্রবেশ করাই সর্বোত্তম নিয়ম। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহর প্রশংসা ব্যতীত যে কথাবার্তা শুরু করা হয়, তা অসম্পূর্ণ থাকে (অর্থাৎ তাতে কোনো বরকত হয় না)। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৬৫)</p> <p>নতুন বসতবাড়িতে দুষ্ট জিনের উপদ্রব দেখা দিতে পারে। ওদের বদনজর থেকে বাঁচতে শরিয়তসম্মত অন্যান্য আমলের পাশাপাশি সুরা বাকারাহ পাঠ করা যায়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের ঘরগুলোকে কবরস্থান বানিয়ো না। যে ঘরে সুরা বাকারাহ পাঠ করা হয় শয়তান সে ঘর থেকে পলায়ন করে। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৯৭)</p> <p>বাড়িতে প্রবেশের উপলক্ষ করে আত্মীয়-স্বজন, আলেম-ওলামা ও গরিব-দুঃখীদের দাওয়াত করে খাওয়ানো যায়। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) যখন মদিনায় প্রত্যাবর্তন করতেন, তখন তিনি একটি উট অথবা একটি গাভি জবেহ করতেন। আর মুআজ (রা.) জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে জাবির (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমার কাছে থেকে একটি উট দুই উকিয়া ও এক দিরহাম কিংবা দুই দিরহাম দ্বারা ক্রয় করেন এবং তিনি যখন সিরার নামক স্থানে পৌঁছেন, তখন একটি গাভি জবেহ করার নির্দেশ দেন। এরপর তা জবেহ করা হয় এবং সবাই তার গোশত আহার করে। আর যখন তিনি মদিনায় পৌঁছেন তখন আমাকে মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করার আদেশ দিলেন এবং আমাকে উটের মূল্য পরিশোধ করে দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ২৮৭১ )</p>