এখনও ১১৭ মামলার আসামি খালেদা ও তারেক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এখনও ১১৭ মামলার আসামি খালেদা ও তারেক
বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।

এখনও ১১৭ মামলার আসামি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তত্ত্বাবধায়ক ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের হওয়া এসব মামলার মধ্যে ৩৭টি রয়েছে খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে আর তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রয়েছে ৮০টি মামলা। এ ছাড়া দলটির প্রায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে প্রায় ৪ লাখ মামলা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে। 

প্রক্রিয়াগত ধীরগতির কারণে এখনো মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হচ্ছে না।

মামলার আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন ব্যতীত তারেক রহমান দেশে ফিরবেন না। এ জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারক মহলের সদস্যরা অব্যাহত তাগিদ দিচ্ছেন। দল ও অঙ্গ-সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের হুমকিও অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনেই দলীয় নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে ধৈর্য ধরে শান্ত থাকতে বলেছেন।
তবে দলের এই দুই শীর্ষনেতাও চান সারা দেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে যে (প্রায়) ৪ লাখ মিথ্যা ও গায়েবি মামলা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ আমলে দায়ের করা হয়েছে- সেগুলো আর কালবিলম্ব না করে অন্তর্বর্তী সরকার যেন প্রত্যাহার করে নেয়।

আরো পড়ুন
আবারও হ্যাটট্রিক মেসির, মিয়ামির রেকর্ড

আবারও হ্যাটট্রিক মেসির, মিয়ামির রেকর্ড

 

জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৮০টি মিথ্যা মামলা রয়েছে। ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে এসব মামলা দেওয়া হয়েছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সাজানো রায়ে পরিকল্পিতভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর মধ্যে ৫টির বিচার শেষে সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। আর কিছু মামলা স্থগিত অবস্থায় রয়েছে। লন্ডনে অবস্থান করায় আদালত তাকে পলাতক হিসেবে দেখিয়ে এসব রায় দিয়েছেন।

বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে এসব মিথ্যা মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ১৭টি মামলা হয়েছে।

পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, অর্থ পাচার মামলা ও সারা দেশব্যাপী মানহানির মামলাসহ প্রায় ৮০টি মামলা দেওয়া হয়। তার মধ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সমাবেশ চলার সময় গ্রেনেড হামলায় হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা প্রক্রিয়ার শেষ দিকে তাকে নতুন করে জড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়।     

আরো পড়ুন
বেরোবিতে আবু সাঈদের স্মরণে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা

বেরোবিতে আবু সাঈদের স্মরণে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা

 

২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ মামলায় অভিযোগ ছিল, এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে পাওয়া ২ কোটি ১০ লাখ টাকার বেশি অর্থ ট্রাস্টের কাজে ব্যবহার করা হয়নি। বরং সেই টাকা নিজেদের হিসাবে জমা রাখার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তারেক রহমানসহ অন্য পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্ট পরে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড বাড়িয়ে ১০ বছর করেন। এ মামলায় বেগম খালেদা জিয়া দুই বছর কারাভোগ করেন। ২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করে দেওয়া হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। এ মামলায় তারেক রহমানকে ২০০৮ সালের ৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার্থে লন্ডন চলে যান তিনি।

আরো পড়ুন
নাইক্ষ্যংছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার

নাইক্ষ্যংছড়িতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার

 

এ ছাড়া ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও জোবাইদা রহমানের মা সৈয়দা ইকবাল বানুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মামলা করেছিল দুদক। ২০২৩ সালের ২ আগস্ট এ মামলায় তারেক রহমানকে ৯ বছরের এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার একটি আদালত। এ ছাড়া ২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের একটি মামলায় ঢাকার একটি আদালত তারেক রহমানকে খালাস দেন। ওই মামলায় তারেক রহমানের বন্ধু ও ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করে দুদক। ২০১৬ সালে বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন হাই কোর্ট। পাশাপাশি তাকে ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

২০১৪ সালে লন্ডনে এক সমাবেশে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘রাজাকার’ ও ‘পাকবন্ধু’ উল্লেখ করেছেন বলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অবমাননাকর কটূক্তির অভিযোগ এনে নড়াইলের আদালতে মানহানির মামলা করেন শাহজাহান বিশ্বাস নামের এক কথিত মুক্তিযোদ্ধা। ওই মামলায় ২০২১ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদন্ড দেন নড়াইলের আদালত। অন্যদিকে শুধু ঢাকার আদালতেই মানহানির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তা ছাড়া একই অভিযোগে সে সময় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সারা দেশে অসংখ্য মামলা করা হয়।

আরো পড়ুন
ধস নেমেছে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনে

ধস নেমেছে ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনে

 

এ ছাড়া তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রোদ্রোহের মামলাও হয়েছে। ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তেজগাঁও থানায় করা রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় তারেক রহমান ও একুশে টেলিভিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুস সালামের বিরুদ্ধে যোগসাজশ করে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। নোয়াখালীতেও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আরেকটি মামলা আছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। ওই মামলাতেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।

ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলাও রয়েছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। ২০২০ সালের ২ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেন তথাকথিত ‘জননেত্রী পরিষদের সভাপতি’ এ বি সিদ্দিকী।

জানা গেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দুটি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বর্তমানে নির্বাহী আদেশে জামিনে রয়েছেন। রায় ঘোষণা হওয়া এ দুটি মামলা বাদে তার বিরুদ্ধে বর্তমানে মোট মামলা রয়েছে ৩৫টি। সবগুলো মামলাতেই এখন তিনি জামিনে আছেন।

আরো পড়ুন
তরুণদের সামর্থ্য আগ্রহী করেছে সিমন্সকে

তরুণদের সামর্থ্য আগ্রহী করেছে সিমন্সকে

 

১৩টি মামলা হয়েছে ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে অর্থাৎ ১/১১ পরবর্তী প্রেক্ষাপটে। বাকিগুলো দায়ের করা হয় পরবর্তী বিভিন্ন সময়। মামলাগুলোর মধ্যে পাঁচটি দুর্নীতি মামলা, চারটি মানহানির মামলা ও একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রয়েছে। বাকি মামলাগুলো হয়েছে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে। 

এদিকে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক কারণে হওয়া ‘হয়রানিমূলক মামলা’ প্রত্যাহারের লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দুটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর মধ্যে একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং অন্যটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি। এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন
ফ্রান্সে এসআইএএল ফুড ফেয়ারে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

ফ্রান্সে এসআইএএল ফুড ফেয়ারে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ

 

সেখানে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ‘হয়রানিমূলক মামলা’ প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে হবে। জেলা কমিটি সুপারিশ দেবার পর সেগুলো পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করা হবে। এরপর তালিকা তৈরি করে মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি।

জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি সম্পর্কে বলা হয়েছে, মামলা প্রত্যাহারের আবেদনের সঙ্গে এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যায়িত কপি দাখিল করতে হবে।

আরো পড়ুন
স্পিনের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশেরও

স্পিনের চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশেরও

 

আবেদন পাবার সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন। এরপর ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাবেন। পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন।

জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশ পাবার পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সেগুলো পরীক্ষানিরীক্ষা করবে। প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করবে এবং মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

আরো পড়ুন
রাজধানীতে ঘন কুয়াশায় শীতের আমেজ

রাজধানীতে ঘন কুয়াশায় শীতের আমেজ

 

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। এ নিয়ে আমরা আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দসহ সিনিয়র আইনজীবীরা কয়েক দফা বৈঠক করেছি। কীভাবে কী প্রক্রিয়ায় এ মিথ্যা ও গায়েবি মামলাগুলো দ্রুত শেষ করা যায় তার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতিটি মামলাই দায়ের করা হয়েছে প্রচ- রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত। এগুলো সবই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট মামলা। কোথাও কোনো ঘটনা ঘটেনি, অথচ দেওয়া হয়েছে নাশকতার মামলা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে দুর্নীতির মামলা। অথচ এসবের সঙ্গে তার বিন্দুমাত্র কোনো সম্পর্ক নেই। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য মিথ্যা মামলা। অথচ তিনি দেশে নেই আজ এক যুগেরও বেশি সময়। খুব শিগগিরই আমরা (সিনিয়র আইনজীবীরা) আবারও বসব এবং এ নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনা করব। আশা করি খুব শিগগিরই মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়াটা আমরা শুরু করতে পারব ইনশা-আল্লাহ।’

আরো পড়ুন
সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে ফিরল বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা

সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে ফিরল বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা

 

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলাগুলো পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের আমলে যে অবস্থায় ছিল এখনো সেভাবেই রয়ে গেছে। পাশপাশি বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের (প্রায়) ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৪ লাখ মামলাও সেই একই তিমিরে রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এসব মামলা প্রত্যাহারের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না।’
 

মন্তব্য

নির্বাচন ছাড়া দেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার চিন্তা করলে জনগণ মেনে নেবে না : রুমিন ফারহানা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নির্বাচন ছাড়া দেশের ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার চিন্তা করলে জনগণ মেনে নেবে না : রুমিন ফারহানা

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি, আমরা এখনো ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারিনি। নির্বাচন ছাড়া কেউ যদি দেশের শাসন ক্ষমতা দীর্ঘদিন আঁকড়ে ধরে রাখার চিন্তা করে তাহলে জনগণ মেনে নেবে না।’ 

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর সূর্যকুমার দাস চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘১৫ বছর আগে যে তরুণ-তরুণীরা ভোটার হয়েছিলেন তারা আজও ভোট দিতে পারেননি।

তারা এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন। তাই ভোটের মাধ্যমে দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

লালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি হাজি মো. জামাল মিয়ার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম মুমিনুল হক মুমিন, বিএনপি নেতা ভিপি জহিরুল হক লিটন, সরাইল উপজেলা বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন মাস্টার, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা মো. নাসির মুন্সী প্রমুখ।

মন্তব্য

আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর মৃত্যুতে জামায়াত আমিরের শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর মৃত্যুতে জামায়াত আমিরের শোক

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর (রহ.) মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ডা. শফিকুর রহমান এ শোক জানায়।

শোকবার্তায় জামায়াত আমির বলেন, ‘আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর ইন্তেকালে জাতি একজন আলেমে দ্বীন, ইসলামী চিন্তাবিদ ও অভিভাবককে হারাল। আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে হাফেজ্জী হুজুর প্রতিষ্ঠিত জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার মুহতামিম, সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের (সাবেক) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকের সহ-সভাপতি ছিলেন।

তিনি সারা জীবন ইসলামের খেদমত করে গেছেন। দেশে ইসলামী শিক্ষার বিস্তার ও প্রসারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ইলমে দ্বীনের খেদমতের জন্য এ দেশের মানুষ তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তার শূন্যতা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।
আমি তার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন। আমি তার শোকাহত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী, সহকর্মী ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

প্রসঙ্গত, মাওলানা হাফেজ ক্বারি আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর নিজ মাদ্রাসা জামেয়া নুরিয়ায় শুক্রবার বেলা ১১টার পর ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মন্তব্য

যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন ‘জয় বাংলা’ থাকবে : কাদের সিদ্দিকী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন ‘জয় বাংলা’ থাকবে : কাদের সিদ্দিকী

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, স্বাধীনতাকামী মানুষের, বাংলাদেশের মানুষের স্লোগান হবে ‘জয় বাংলা’। যত দিন বাংলাদেশ থাকবে, তত দিন ‘জয় বাংলা’ থাকবে। আমি গত ২৫ বছরে একবারের জন্যও ‘জয় বাংলা’ বলিনি। মা-বাবার কবরে শপথ করে গেলাম আজ থেকে আমি ‘জয় বাংলা’ বলব।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটী নিজ গ্রামে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আল্লাহ আমাদের জয় দিয়েছিলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। আজকে এত দালানকোঠা, ঘর-বাড়ি, রাস্তাঘাট বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে এর কিছুই হতো না। আজ বড় দুর্ভাগ্যের বিষয়, আজকে এই স্বাধীনতাকে অনেকে মনেই করতে চায় না।

তিনি আরো বলেন, ‘গত ২৬ মার্চ জাতীয় স্মৃতিসৌধে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার জন্য কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি এর নিন্দা জানাই। স্বাধীন বাংলাদেশে ‘জয় বাংলা’ ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। এটা কারো দলের নয়, ব্যক্তির নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়।

এটা মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান, স্বাধীনতার স্লোগান।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। কেউ কেউ মনে করতে চায়, এটা স্বাধীনতার পতন হয়েছে। না, কোনোমতেই না। আজকে যে নেতারা একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে; আমি তাদের এই বিপ্লবকে সাধুবাদ জানাই এবং তারা যদি ঠিকভাবে চলতে পারতেন তাহলে বহু বছর মানুষ তাদের স্মরণ রাখত।

কিন্তু তারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ফেলেছেন। তারা বঙ্গবন্ধুকে মানে না, তারা জিয়াউর রহমানকে মানে না। তারা আমাদের কাউকেই মানে না। এটা ভালো কথা নয়।’

কাদের সিদ্দিকী আরো বলেন, ‘প্রতিহিংসার জন্য নয়, আমি রাজনীতি করি মানুষকে পাহারা দেওয়ার জন্য, দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য। আজ থেকে আমাদের সক্রিয় রাজনীতি করা দরকার।’  

মন্তব্য

ভারতে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস, ছাত্রশিবিরের নিন্দা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারতে বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস, ছাত্রশিবিরের নিন্দা
ফাইল ছবি

ভারতে মুসলিম স্বার্থবিরোধী ওয়াকফ সংশোধনী বিল পাস ও বিজেপি সরকারের ধারাবাহিক মুসলিমবিরোধী পদক্ষেপের প্রতিবাদে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এই নিন্দা  জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৩ এপ্রিল ভারতের লোকসভায় পাসকৃত বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী বিল মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, মালিকানা ও অধিকার হরণে বিজেপি সরকারের সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টার আরেকটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত। এই আইনের মাধ্যমে মুসলিমদের দানকৃত মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান ও আশ্রয়কেন্দ্রের মতো ধর্মীয় সম্পদগুলোতে সরকারি হস্তক্ষেপ ও দখলের পথ তৈরি করা হয়েছে।

বিল অনুযায়ী, ওয়াকফ বোর্ড ও কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিলে মুসলিম নয় এমন দুজন সদস্য রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা ওয়াকফের ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যকে নস্যাৎ করার শামিল।

ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, ভারতে বর্তমানে আট লাখ ৭২ হাজারেরও বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে। যার মধ্যে জমির পরিমাণ প্রায় চার লাখ পাঁচ হাজার হেক্টর (১০ লাখ একর), যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই ওয়াকফ সম্পত্তিগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলগুলোর ওয়াকফ বোর্ডগুলোর অধীনে থাকে এবং এটি ভারতের শহুরে ভূমির সর্বোচ্চ মালিকানার অন্যতম।

সামরিক বাহিনী ও রেলওয়ের পর ওয়াকফ বোর্ডগুলোর মালিকানাধীন ভূমির পরিমাণই সর্বাধিক। বিশেষ করে ভারতীয় পার্লামেন্টে নতুন ওয়াকফ আইন সংস্কারের প্রস্তাব সরকারকে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে অবাধ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেবে, যা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি আরেকটি আঘাত। আমরা এ বিলের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আরো পড়ুন
বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা-চেন্নাই

বিতর্কিত ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা-চেন্নাই

 

তারা আরো বলেন, ভারতে বর্তমানে প্রায় ২৫ কোটি মুসলমান বসবাস করছেন, যারা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী।

এই জনগোষ্ঠীর ওপর একের পর এক দমনমূলক আইন চাপিয়ে দিয়ে এবং তাদের ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ভারতের শাসকগোষ্ঠী দেশটিকে একক হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তরের হীন-অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির মতো মুসলিমবিরোধী আইন পাস করে মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন করার চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া হিজাব ও গরু জবাই নিষিদ্ধ করে মুসলমানদের জীবিকা ধ্বংস এবং প্রকাশ্যে কোরআন অবমাননার ঘটনাও প্রতিনিয়ত ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে মুসলিম জনজীবনকে আরো সংকুচিত এবং কঠিন করা হচ্ছে।

অবিলম্বে মুসলিম ও মানবতাবিরোধী সব আইন বাতিল করে মানবিক মর্যাদা ও অধিকার পুনঃস্থাপন করার দাবি জানানো হয় ছাত্রশিবিরের বিবৃতিতে।

সংগঠনটি মুসলিম স্বার্থবিরোধী এই বিতর্কিত আইন বাতিল করে মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার সংরক্ষণের জন্য ভারত সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানায়।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ