কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমী স্নান সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) রমনা নৌবন্দর থেকে জোড়গাছ পুরাতন বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান ও পূজা করেন তারা। প্রতিবছর চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পাপমোচনের অভিপ্রায়ে স্নান করে ঈশ্বরের কৃপা কামনা করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির চিলমারী উপজেলা শাখার সভাপতি শচীন্দ্রনাথ বর্মন জানান, শনিবার ভোর ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অষ্টমীর প্রহর থাকলেও স্নান করার উত্তম সময় ধরা হয়েছে শনিবার সকাল ৭টা ৩৫ মিনিট থেকে ১০টা ৩ মিনিট পর্যন্ত।
প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লাখ লাখ পুণ্যার্থী এখানে আসেন। এ বছরও প্রায় পাঁচ লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
প্রতিবছর চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের অষ্টম তিথিতে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রাচীনকাল থেকে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এদিকে স্নান উপলক্ষে গত দুদিন ধরে উপজেলার জোড়গাছ, গুড়াতিপাড়া, টোলর মোড়, বাঁধের মোড়, জোড়গাছ পুরাতন বাজার, জোড়গাছ নতুন বাজারসহ ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীরা অবস্থান নেন।
লালমনিরহাট থেকে স্নান করতে আসা সুভাষ চন্দ্র, অসীম সাহা জানান, ভগবানের সন্তুষ্টি ও পাপমোচনের আশায় প্রতিবছর আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে স্নান করতে আসি। এটি একটি বড় উৎসব, এখানে লাখ লাখ লোকের সমাগম হয়। স্নান উপলক্ষে এখানে মেলা বসে। এবারে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অষ্টমীর স্নান অনুষ্ঠিত হয়েছে, আমরা খুব সন্তুষ্ট।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সবুজ কুমার বসাক বলেন, অষ্টমীর স্নানকে ঘিরে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সেই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ছাড়া বিশুদ্ধ পানির জন্য নলকূপ স্থাপন, কাপড় বদলানোর জন্য শতাধিক তাঁবু টাঙানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।