অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস খুবই নির্মোহভাবে কাজ করছেন বলে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘তিনি একের পর এক ম্যাজিক দেখাচ্ছেন। তার মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই, তিনি দেশের জন্য কাজ করতে চান। তবে তাকে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইলে বিতর্ক তৈরি হবে।’
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘রাষ্ট্রীয় মূলনীতি পর্যালোচনা সভায়’ তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে ক্ষমতার কোনো লোভ নেই জানিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝতে পারি ড. ইউনূস ভোটটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দিয়ে চলে যেতে চান। কিন্তু কেউ কেউ দেখছি তাঁকে জোর করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় রাখতে চান, কিন্তু কেন? তিনি ভালো কাজ করছেন, তাই যদি মনে করেন তাকে দেশের কল্যাণে রাখতে হবে, তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করেন। কেন তাকে দিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে বিতর্কিত করতে হবে?’
তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস মনে হয় সব রাজনৈতিক দলকে এখন পর্যন্ত চারবার ডেকেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। কিন্তু তিনি একবারও রাজনীতি নিয়ে, সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক ডাকেননি।
উনি ডেকেছেন ইস্যু নিয়ে। ঈদযাত্রা নিয়ে তিনি ম্যাজিক দেখিয়েছেন, এখন রাজনৈতিক বিতর্কে কী ম্যাজিক দেখাবেন?’
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এটা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকুক। আমাদের ভিন্ন মতকে ধারণ করতে হবে। ভিন্ন মতকে কথা বলার সুযোগ দিতে হবে।
রাষ্ট্রীয় মূলনীতি নিয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত নই। সংস্কার কমিশনের শতাধিক প্রস্তাবের সঙ্গেই নাগরিক ঐক্য একমত নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রের মূলনীতির মধ্যে সমাজতন্ত্র ছিল। এখনো অনেকেই আছেন সমাজতন্ত্র রাখার পক্ষে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার দলের পক্ষ থেকে মনে করি সমাজতন্ত্র এখন আমাদের লক্ষ্য নয়।
রাশিয়া এবং পুরো পূর্ব ইউরোপে সমাজতন্ত্রের ধস নামার পরে সমাজতন্ত্র মূলনীতি হওয়ার কোনো কারণ নেই।’
ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও গণশক্তি সভার সভাপতি সাদেক রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।