রিউমর স্ক্যানারের প্রতিবেদন

ড. ইউনূসকে জড়িয়ে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ড. ইউনূসকে জড়িয়ে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার
সংগৃহীত ছবি

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নিয়মিত হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সে অঞ্চলে দৈনন্দিন এক ব্যাপার হয়ে উঠেছে তখন থেকেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এ ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধির খবর আসছে। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জড়িয়ে কিছু ভুয়া তথ্য ও ছবি প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

 

সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় রিউমর স্ক্যানার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামলার ভয়াবহতা শুরু হয় সে সময়ই বাংলাদেশে প্রচার হতে শুরু করে, ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিষয়টি নিয়ে সে সময়ই বিস্তারিত অনুসন্ধান করে রিউমর স্ক্যানার।

আরো পড়ুন

১২ এপ্রিল ঢাকার রাজপথে থাকবেন আজহারি

১২ এপ্রিল ঢাকার রাজপথে থাকবেন আজহারি

 

অনুসন্ধানে জানা যায়, অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের (বর্তমানে বন্ধ) সে বছরের ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।

ওই প্রতিবেদনে দাবিটির পক্ষে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হলেও ওই মন্ত্রণালয় থেকে সে সময়ে প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 

1234567

ওই দাবিসংবলিত কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়। তা ছাড়া ইসরায়েলের সাংবাদিক এবং ফ্যাক্ট চেকারও এমন কোনো সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে রিউমর স্ক্যানারকে জানান। একই সঙ্গে ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে।

এ ফ্যাক্ট চেক পরিবর্তী সময়েও নিয়মিত বিরতিতে এই গুজব প্রচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা বৃদ্ধির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেও তাকে জড়িয়ে এই ভুয়া দাবি ফের ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে।  

ইসরায়েল ইস্যুতে রীতিমতো সংঘবদ্ধ গুজবের শিকার হচ্ছেন ড. ইউনূস। সম্প্রতি, ‘ইসরায়েল কে মনো সমর্থন দেওয়ায় ড. ইউনুসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নেতানিয়াহু’ শীর্ষক শিরোনামে বেসরকারি ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের ডিজাইনসংবলিত একটি ফটোকার্ড ইন্টারনেটে প্রচার হচ্ছে। যদিও ফটোকার্ডটিতে তারিখ লেখা রয়েছে ৩ অক্টোবর, ২০২৪।

মূলত, সে সময়ই এ দাবিটি ছড়ায়। 

আরো পড়ুন

মার্চ ফর গাজায় অংশ নেবেন মাহমুদ উল্লাহ

মার্চ ফর গাজায় অংশ নেবেন মাহমুদ উল্লাহ

 

রিউমর স্ক্যানার সে সময়ই বিষয়টি নিয়ে ফ্যাক্ট চেক (পড়ুন) করে জানায়, যমুনা টিভি এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশ করেনি এবং ড. ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়ে নেতানিয়াহুও কোনো মন্তব্য করেননি। ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যমুনা টিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত একটি ফটোকার্ড নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডটি তৈরি করা হয়েছে। এই দাবিটি সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে ফেসবুক এবং এক্সে ফের প্রচার হতে দেখা যাচ্ছে।

গণমাধ্যমের ফটোকার্ড সম্পাদনা করে এই ইস্যুতে পুরনো আরেকটি ভুয়া দাবিও সম্প্রতি ফের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। ২০২৩ সালের ৫ অক্টোবর দুদক কার্যালয়ে নিজের বিরুদ্ধে চলা মামলার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

09876

সেদিন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের ফেসবুক পেজে তার বক্তব্য নিয়ে একটি ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়। ওই ফটোকার্ডে থাকা ড. ইউনূসের বক্তব্য সম্পাদনা করে তিনি ‘ইসরায়েল তার আত্মরক্ষার অধিকার রাখে।’ শীর্ষক মন্তব্য করেছেন দাবিতে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার সে সময়ই বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের পর ফ্যাক্টচেক করে জানায়, ড. ইউনূস এমন কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন এবং দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময়ে এবং পূর্বে বিভিন্ন সময়ে হুবহু একই মন্তব্য করেছেন। এ দাবিটিও সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে আবারো প্রচার হতে দেখেছে রিউমর স্ক্যানার। 

ফটোকার্ড ছাড়াও সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি ভুয়া ছবি দিয়েও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এমনই একটি ছবিতে দেখা যায়, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ড. ইউনূসের সঙ্গে করমর্দন করছেন। অন্তত গত বছর থেকেই ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে। সম্প্রতি আবারো ছবিটি নিয়ে ফেসবুক ও এক্সে আলোচনা দেখা যাচ্ছে। 

245567

তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে জেনেছে, ছবিটি সম্পাদনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। মূল ছবিটি ২০২৩ সালের। ছবিতে নেতানিয়াহু ছিলেনই না। মূলত পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মারসোলো রেবেলো ডি সুজার সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের ছবি সম্পাদন করে ভুয়া ছবিটি তৈরি করে প্রচার হচ্ছে।

45678

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ড. ইউনূসের করমর্দনের দাবিতে সমজাতীয় আরেকটি ছবিও গেল বছরের অন্তত সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার হয়ে আসছে। নভেম্বরে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের পর রিউমর স্ক্যানার জানায়, গত বছরের ১১ মে ইতালীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি সার্জিও ম্যাটারেলার সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাতের সময়ে তোলা ছবি থেকে ড. ইউনূসের ছবিটি নেওয়া হয়। অন্যদিকে, ২০১৯ সালের মার্চে নেতানিয়াহু সামোয়ার প্রধানমন্ত্রী তুইলেপা আইওনো সাইলেলে মালিলেগাওইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তোলা ছবি থেকে ছবির পেছনের অংশটি নেওয়া হয়। অর্থাৎ, দুইটি আলাদা ছবিকে জোড়া দিয়ে এবং পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন উপাদান সম্পাদনার মাধ্যমে এ ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। এ ছবিটিও বর্তমানে প্রেক্ষাপটে ফের আলোচনায় এসেছে। 

আরো পড়ুন

বিজয়ী হতে দরকার ৩ প্রস্তুতি : সাদিক কায়েম

বিজয়ী হতে দরকার ৩ প্রস্তুতি : সাদিক কায়েম

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ফিলিস্তিন ইস্যুতে প্রচার হওয়া এসব ভুয়া দাবিগুলো শুধু যে পোস্টের মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে এমন নয়। পোস্টের চেয়ে কমেন্টে ছবি আকারে এবং ইনবক্সে একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে যাচ্ছে উক্ত দাবির ছবিগুলো। ফ্যাক্টচেক হওয়ার পর ভুয়া এসব দাবি প্রচারকারী সকলের কাছে তা না পৌঁছানোর দরুণ এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থেকে যাচ্ছে। এভাবে পরবর্তীতে ভিন্ন কোনো প্রেক্ষাপটে আবার ছবিগুলো একই দাবিতে প্রচার হচ্ছে। তবে এসব ভুয়া ছবি প্রচারকারীদের বড় একটি অংশই বিষয়টি ভুয়া জেনেও অপতথ্য হিসেবে বছর বছর সেগুলো প্রচার করে আসছেন।

87654

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

কেরানীগঞ্জে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, বৃদ্ধ পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
কেরানীগঞ্জে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, বৃদ্ধ পলাতক
প্রতীকী ছবি

ঢাকার কেরানীগঞ্জে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জসিম (৬০) নামের এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতে ঘটেশ্বর পশ্চিম পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এর পর থেকেই অভিযুক্ত বৃদ্ধ পলাতক আছেন। 

শনিবার (১২ এপ্রিল) শিশুটিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা। 

এজাহারে বলা হয়, তিনি ও তাঁর স্ত্রী পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কাজে যাওয়ার সময় শিশুটিকে আত্মীয়ের জিম্মায় রেখে যান। শুক্রবার রাত ১০টায় বাসায় ফিরে মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

পরে ঘাটেশ্বর প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন সাততলা একটি ভবনের নিচতলায় শিশুটিকে পাওয়া যায়। 

শিশুটির বাবা জানান, তখন মেয়ে অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। জ্ঞান ফিরলে সে জানায়, পুতুল কেনার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ভবনের মালিক জসিম তাকে ছাদে নিয়ে যায় এবং তার সঙ্গে খারাপ কাজ করে। এই ঘটনার পর থেকে জসিমকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

 

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিশুটির বাবা থানায় এসে মামলা করেছেন। শিশুটিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জসিম পলাতক থাকায় এখনো তাঁকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি, তবে অভিযান অব্যাহত আছে। 

মন্তব্য

মিয়ানমারে ১২০ টন ত্রাণ পৌঁছে দিল নৌবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
মিয়ানমারে ১২০ টন ত্রাণ পৌঁছে দিল নৌবাহিনী
সংগৃহীত ছবি

বিধ্বংসী ভমিকম্পের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে জরুরি ত্রাণ, চিকিৎসা-সামগ্রী ও মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’। 

শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইয়াঙ্গুন অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ১২০ টন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

আরো পড়ুন
চীনে ৮৩৮ ফ্লাইট বাতিল, ট্রেন চলাচল বন্ধ

চীনে ৮৩৮ ফ্লাইট বাতিল, ট্রেন চলাচল বন্ধ

 

আইএসপিআর জানায়, ত্রাণ সহায়তা হস্তান্তরের সময় অন্যান্যের মধ্যে ইয়াঙ্গুস্থ বাংলাদেশর কূটনৈতিকবৃন্দ, বানৌজা সমুদ্র অভিযানের অধিনায়কসহ সংশ্লিষ্ট সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

 

অন্যদিকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন কমান্ডার ইয়াঙ্গুন কমান্ড, কমান্ডার মায়ানমার নেভাল ট্রেনিং কমান্ড ও কমান্ডার ১ নং ফ্লিট।

আইএসপিআর আরো জানায়, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে মিয়ানমারের ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের দুর্দশা লাঘবে তৃতীয় ধাপে বাংলাদেশ এ সকল ত্রাণসামগ্রী দেশটিতে পাঠায়। বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনায় ও সশস্ত্র বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী খাদ্যসামগ্রী, বিশুদ্ধ পানি, বস্ত্রসামগ্রী, কম্বল, তাবু, জরুরি চিকিৎসা-সামগ্রী ও ঔষধসহ প্রায় ১২০ টন ত্রাণ মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সরকার তথা সশস্ত্র বাহিনী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি মানবিক সহযোগিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বাংলাদেশ তিন ধাপে মোট ১৫১ মেট্রিক টন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা, উদ্ধার ও চিকিৎসক দল মায়ানমারে পাঠাল।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আলোচিত-১০ (১২ এপ্রিল)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

আদানির একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আদানির একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু
সংগৃহীত ছবি

ভারতের আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় গত শুক্রবার রাতে। এর ১৭ ঘণ্টা পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে ফের একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ছিল ৪৬ মেগাওয়াট। ক্রমান্বয়ে বিদ্যুতের পরিমাণ বাড়বে।

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে দায়িত্বে থাকা একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে গড়ে এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়েছে ৮ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয় গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে।

এতে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয়। পরবর্তীতে আজ সন্ধ্যায় একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে আদানি।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (উৎপাদন) মো. জহুরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‌‌ত্রুটি দেখা দেওয়ায় আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ঘাটতি পূরণে গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানো হয়।

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। এটি নিয়ে আদানি ও বিপিডিবির মধ্যে আলোচনা চলছে। বকেয়া শোধ নিয়েও বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়েছে আদানি। গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। এরপর নিয়মিত চলতি বিল পরিশোধ করায় তারা একটি ইউনিটের উৎপাদন চালু করে।

গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ করে বিপিডিবি। গত মার্চে শুরু থেকেই দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করে তারা।

পিজিসিবি ও বিপিডিবি সূত্র বলছে, শনিবার ছুটির দিন থাকায় বিদ্যুতের চাহিদা অন্য দিনের চেয়ে কিছুটা কম আছে। আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ চাহিদা উঠেছে ১৩ হাজার ৫৫২ মেগাওয়াট। এ সময় ৪২৮ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ শুরু না হলে রবিবার লোডশেডিং আরো বৃদ্ধি পেত। ঘাটতি মেটাতে পেট্রোবাংলার কাছে বাড়তি গ্যাস সরবরাহও চেয়েছিল বিপিডিবি।

আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এই কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে বিপিডিবি। আদানির সঙ্গে বিপিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ