<p style="text-align:justify">জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ভাটা পড়েছে দুই মাস ধরে। সহজ ও দ্রুততম আর্থিক লেনদেন সুবিধার কারণে প্রতি মাসে লেনদেন ও গ্রাহকসংখ্যা বাড়ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে লেনদেন কমতির দিকে, যা উন্নয়নমুখী সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।</p> <p style="text-align:justify">তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কমে লেনদেন। পরে মে মাসে আরো কমে যায়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে লেনদেন কমেছে তিন হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরের মে মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">এর আগের মাস এপ্রিলে এমএফএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল এক লাখ ৪৪ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে তিন হাজার ৯৭৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আর মার্চে সেই লেনদেন ছিল এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশের করপোরেট কমিউনিকেশনস প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম কালের কণ্ঠকে জানান, উৎসবের মাসগুলোতে সাধারণত লেনদেন বৃদ্ধি পায় এবং এর পরের মাসে কমে।</p> <p style="text-align:justify">যেহেতু এপ্রিল মাসে ঈদ ছিল, তাই মার্চ ও এপ্রিল মাসে মোবাইলের মাধ্যেমে মানুষ বেশি লেনদেন করেছে। আর ঈদ-পরবর্তী মাস হওয়ার কারণে মে মাসে আগের মাসের তুলনায় লেনদেন কম। কিন্তু বছরের অন্যান্য মাসের সঙ্গে এই পরিমাণটি সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি আরো বলেন, জুন মাসে যেহেতু কোরবানির ঈদ ছিল, তাই স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা যায়, জুন মাসে মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন বাড়বে। এ ছাড়া মে মাসের শেষের দিকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল আঘাত হেনেছিল বাংলাদেশে। এসব দুর্যোগের সময়েও লেনদেন কমে। আর এটা স্বাভাবিক।</p> <p style="text-align:justify">আলোচিত মে মাসে এমএফএস মাধ্যমে জমা (ক্যাশ ইন) হয়েছে ৪০ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা। আগের মাস এপ্রিলে এমএফএসগুলোতে জমার (ক্যাশ ইন) পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ৭৯৬ কোটি টাকা। সে হিসাবে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে জমা কমেছে এক হাজার ৩১০ কোটি ৮১ লাখ টাকা।</p> <p style="text-align:justify">মে মাসে উত্তোলন (ক্যাশ আউট) হয়েছে ৪৪ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা। আর আগের মাস এপ্রিলে উত্তোলন (ক্যাশ আউট) হয়েছিল ৪৬ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এমএফএস মাধ্যমে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে ক্যাশ আউট কম হয়েছে দুই হাজার ৩২ কোটি টাকা।</p> <p style="text-align:justify">আলোচিত মে মাসে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৩৬ হাজার ১৬১ কোটি টাকা, যা এপ্রিলে ছিল ৩৭ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। সে হিসাবে এপ্রিলের তুলনায় মে মাসে লেনদেন কম হয়েছে এক হাজার ৭৪২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মে মাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ করা হয়েছে চার হাজার ৫১ কোটি টাকা এবং অন্যান্য পরিষেবার তিন হাজার ১৪৩ কোটি টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">আলোচিত সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। মে মাসে মার্চেন্ট পেমেন্ট হয়েছে ছয় হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আগের মাস এপ্রিলে হয়েছে ছয় হাজার ৬১৩ কোটি টাকা।</p>