বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেছেন, এমনিতেই শিল্প খাতে সংকট চলছে। অস্থিরতার কারণে অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পোশাক খাতে অর্ডার কমেছে। ব্যবসার খরচ বেড়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেছেন, এমনিতেই শিল্প খাতে সংকট চলছে। অস্থিরতার কারণে অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পোশাক খাতে অর্ডার কমেছে। ব্যবসার খরচ বেড়েছে।
আইনুল ইসলাম আরো বলেন, অতীতে গ্যাস-বিদ্যুতে ভর্তুতি দিয়ে কারখানায় উৎপাদন চালু রাখা হয়েছে। এখন দাম বাড়লেও যে গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদনমুখী কারখানাগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে পাবে তারও নিশ্চয়তা নেই। এ সময় এ সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে না। এটা সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে করা উচিত।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
সম্পর্কিত খবর
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যাংকগুলোর কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত পেনশনধারীদের ভাতা একই দিনে দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এক প্রজ্ঞাপনে এই নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে, আগামী ৩১ মার্চ বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর পালিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে ঈদ উপলক্ষে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী (গেজেটেড ও নন-গেজেটেড), সামরিক বাহিনীর কমিশন্ড ও নন-কমিশন্ড কর্মকর্তাদের মার্চ মাসের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অবসরপ্রাপ্ত পেনশনাররাও একই দিনে তাঁদের অবসরের ভাতা পাবেন।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ৩ এপ্রিলও ছুটি থাকবে। ফলে এবার ২৮ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ৯ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মার্চের প্রথম ১৯ দিনে ২২৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। গত বছরের ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৭৮.৪ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ১৯ দিনে ২২৫ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা। বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৭৮.৪ শতাংশ।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঈদকে সামনে রেখে দেশে স্বজনদের কাছে বিপুল পরিমাণে অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এতে বাড়ছে প্রবাস আয়ের প্রবাহ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে আসতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান কর রেয়াতের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় করপোরেট কর হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ। এক্ষেত্রে প্রাইভেট লিমিটেড কম্পানি জন্য ২৫ শতাংশ এবং পাবলিক ট্রেডেড কম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।
একই সঙ্গে শ্রমিক কল্যাণসহ বিভিন্ন ফান্ডের ওপর কর আরোপ না করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব এসেছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
এদিকে, স্থানীয় বাজার সুরক্ষিত রাখতে কাগজ আমদানিতে কর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন। তবে পত্রিকা মালিকদের সঙ্গে যৌথ আলোচনার করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
পোশাক খাতের জন্য বিশেষ করহার থাকা উচিত নয় জানিয়ে আব্দুর রহমান আরো বলেন, 'এ খাতের ব্যবসায়ীদের বিষয়টিতে ঐক্যমত হওয়া দরকার। তবে কাস্টমসসহ কিছু ক্ষেত্রে অযৌক্তিক কর রয়েছে যা বৈষম্য তৈরি করছে। সবাইকে করের আওতায় আনতে পারলে এই বৈষম্য দূর হবে।
দেশে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের ব্যাংক হিসাব ও আমানতের স্থিতি বেড়েছে। সামপ্রতিক সময়ে বড় আমানতকারী অর্থাৎ কোটিপতিদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। এগুলোকে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট (এনএফএ) বলা হয়।
গত ডিসেম্বর শেষে এসব ব্যাংক হিসাবে আমানত দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময় যার পরিমাণ ছিল চার হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে জমা বেড়েছে ২২০ কোটি টাকা বা ৪.৬৯ শতাংশ। তবে স্কুল ব্যাংকিং ও কর্মজীবী শিশুদের অ্যাকাউন্ট এই হিসাবের বাইরে।
এই নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালান্স বা সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত কয়েক মাস আগেও দেশে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল।
২০১০ সালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। এগুলোকে নো ফ্রিলস অ্যাকাউন্টস (এনএফএ) বলা হয়। এসব অ্যাকাউন্টের ন্যূনতম সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। কৃষকরা ছাড়াও এসব হিসাবের আওতায় থাকেন পোশাক শ্রমিক, অতিদরিদ্র মানুষ, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীসহ অনেকে। এর মধ্যে কৃষকদের হিসাব ও আমানত সবচেয়ে বেশি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ২৮২ কোটি টাকা। আর ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা হিসাবে আমানত বেড়েছে ৪০৩ কোটি টাকা বা ৮.৬০ শতাংশ।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে নো ফ্রিল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৭৮ লাখ ৭১ হাজার ৮৭৮টি। ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে স্বল্প আয়ের মানুষের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯০টি। সেই হিসাবে তিন মাসে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে দুই লাখ ৫১ হাজার ৫১২টি।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার পালাবদলের পর ব্যাংক খাত নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তখন ব্যাংক শতভাগ সিকিউরড খাত হবে কি না, এমন দ্বিধায় অনেকে ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিয়েছিলেন। সে সময় এসব হিসাব থেকেও আমানত তুলে নেওয়া হয়। সরকার পতনের পর ব্যাংকগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাই নভেম্বর-ডিসেম্বর নাগাদ এ খাত নিয়ে আবার আস্থা তৈরি হয়।
এ ছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবের মাধ্যমে আসা মোট প্রবাস আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা, যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্সের তুলনায় ৬.১৬ শতাংশ বেশি।