রমজানে সারা দিন রোজা রাখার ফলে শরীরে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। আর পানিশূন্যতার ফলে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া রোজায় আরো যে সমস্যাটি প্রায় সবার দেখা দেয় তা হচ্ছে পেটের সমস্যা বা গ্যাসের সমস্যা।
রমজানে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে অনেকেরই হজমজনিত সমস্যা হয়।
বিশেষ করে গ্যাস, এসিডিটি, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। এগুলো শরীরকে দুর্বল করে দিতে পারে এবং রোজা পালন কঠিন করে তুলতে পারে। তাই রোজায় পেটের সমস্যা হলে কী করবেন এবং কী খাবেন, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
পেট খারাপ হলে কী করবেন
ডায়রিয়া হলে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হয়, যা রোজায় দুর্বলতা বাড়াতে পারে।
তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, বাসি বা দূষিত খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, দই বা দুধজাতীয় খাবার ঠিকমতো না খাওয়া ডায়রিয়ার অন্যতম কারণ।
আরো পড়ুন
গরমে ফিট থাকতে যে ধরনের পানীয় এড়িয়ে চলবেন
এ জন্য সাহরিতে ও ইফতারের পরে বেশি করে পানি পান করুন। ওআরএস বা লবণ-চিনির মিশ্রণ পান করুন।
এটি শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখবে। মসলাযুক্ত ও অতিরিক্ত তেলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। ইসবগুলের ভুসি খান। এটি হজমে সহায়তা করে এবং ডায়রিয়া কমাতে সাহায্য করে। কলা, টোস্ট ও সিদ্ধ আলু খান। এগুলো সহজে হজম হয় ও ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
এসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় কী করবেন
অনেকেই রোজায় এসিডিটির সমস্যায় ভোগেন, যা মূলত খালি পেটে অ্যাসিড নিঃসরণের কারণে হয়। খালি পেটে বেশি সময় থাকা, ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাওয়া, সাহরিতে চা, কফি বা অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া এসিডিটি ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার অন্যতম কারণ।
এ জন্য সাহরি ও ইফতারের পর পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ইফতারে খেজুর, শসা ও দই রাখুন। এগুলো হজমে সাহায্য করে এবং এসিড নিয়ন্ত্রণ করে। লেবু-পানি বা তোকমার শরবত পান করুন। এটি পেটকে ঠাণ্ডা রাখবে। চা, কফি ও সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলুন। সাহরিতে আঁশযুক্ত খাবার খান, যেমন-ওটস, ডালিয়া ও সবজি।
আরো পড়ুন
মা-বাবার যেসব ভুলে ওজন বাড়ে সন্তানের
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কী করবেন
দীর্ঘ সময় পানিশূন্যতা থাকার কারণে অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়, যা পেট ফেঁপে যাওয়া ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে। আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, বেশি ভাজাপোড়া ও মাংসজাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
এ জন্য সাহরি ও ইফতারে বেশি করে পানি ও ফলের রস পান করুন। পেঁপে, আম, কলা, কমলা, খেজুর ও শাক-সবজি খান। ইসবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে পান করুন। ইফতারে বেশি করে সালাদ ও ডাল রাখুন।
আরো পড়ুন
ইনস্টাগ্রামে ফলোয়ার বাড়ানোর কৌশল
পেটে গ্যাস ও ফোলাভাব হলে কী করবেন
অনেকেই রোজায় পেট ফাঁপা ও ভারী লাগার সমস্যায় ভোগেন, যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। ইফতারে কার্বোনেটেড ড্রিংকস (কোল্ড ড্রিংক) পান করা, খুব দ্রুত খাবার খাওয়া, ডাল বা বেশি মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে পেটে গ্যাস ও ফোলাভাব হতে পারে।
ধীরে ধীরে খাবার খান ও ভালোভাবে চিবিয়ে খান। সাহরিতে জিরা-গুঁড়া বা আদা-চা পান করুন। এটি গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। ইফতারে চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন ও লেবু-পানি পান করুন। ইফতারে বেশি পরিমাণে প্রোটিন ও আঁশযুক্ত খাবার খান।
আরো পড়ুন
চুল পড়া কমাবে নারকেলের পানি, কিভাবে ব্যবহার করবেন