মাছ-ভাতে বাঙালির দেশে কৈ একটি অতি পরিচিত মাছ। খাবারের পাতে কৈ নিয়ে হৈচৈ করেনি এমন বাঙালি প্রায় বিরল। স্বাদে অনন্য, পুষ্টিকর ও গায়ে চর্বি কম থাকায় প্রায় সবাই এই মাছ পছন্দ করে। অ্যানাব্যান্টিডি পরিবারের অন্তর্গত এই মাছের ইংরেজি নাম পারসিং ও বৈজ্ঞানিক নাম অ্যানাবাস কোবোজিয়াস।
জেনে নিন কৈ মাছ সম্পর্কে
- সপ্তম শ্রেণির কৃষিশিক্ষা বইয়ের পঞ্চম অধ্যায়ে তোমরা কৈ মাছ সম্পর্কে পড়েছ। সুপরিচিত ও সুস্বাদু এই মাছ বিষয়ে আরো যা জানতে পারো—
অলকানন্দা রায়

আমাদের দেশে খাল-বিল, পুকুর, ডোবা, নালা, হাওর-বাঁওড়, ঝিল, এমনকি ধানক্ষেতেও পাওয়া যায় অনেক কৈ মাছ। জলাশয়ে থাকা আগাছা, কচুরিপানা, ডালপালার ভেতর এই মাছ বেশ স্বচ্ছন্দেই বসবাস করে। কৈ মাছ মূলত কীট-পতঙ্গভুক। জলজ ছোট পোকামাকড়, ছোট মাছ, ব্যাঙের পোনা, শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি এদের প্রধান খাদ্য।
কৈ মাছ প্রজাতিভেদে লম্বায় ১৭ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার হয়। পুরুষ কৈ মাছের তুলনায় স্ত্রী কৈ মাছ আকারে বড় হয়। মাঝারি আকারের আঁশ দ্বারা আবৃত দেহ। পাখনার রং হালকা হলদেটে।
কৈ মাছ নিয়ে কত প্রবাদ প্রবচনই না ছড়িয়ে আছে। সবচেয়ে পরিচিত প্রবাদটি হলো ‘কৈ মাছের প্রাণ’। মানে, খুব কঠিন প্রাণ, যা সহজে মরে না এমন। পানি ছাড়া এই প্রজাতির মাছ ৬ থেকে ১০ ঘণ্টা জীবিত থাকে। এদের শ্বাস অঙ্গ ফুলকা।
জলে সাঁতার কাটার জন্য এদের যুগ্ম অথবা অযুগ্ম পাখনা রয়েছে। পরিণত মাছের দেহ অধিকতর গাঢ় বর্ণের ও পায়ুপাখনাও তুলনামূলকভাবে বড় হয়ে থাকে। এদের দেহে সচরাচর আঁশ থাকে।
একটি ৮০-১০০ গ্রাম ওজনের স্ত্রী কৈ মাছের ডিম ধারণক্ষমতা ছয় হাজার থেকে আট হাজার হয়ে থাকে। এক বছরেরই এরা প্রজননক্ষম হয় এবং বছরে একবার প্রজনন করে থাকে। কৈ মাছ নিজেদের ডিমের কোনো যত্ন নেয় না। ডিম দেওয়ার পরে তা পানির ওপরে ভাসতে থাকে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগে।
এই মাছ বাংলাদেশ, ভারত, চীন, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, পলিনেশিয়া, পাকিস্তান প্রভৃতি অঞ্চলেও পাওয়া যায়।
বর্তমানে কৈ মাছের উৎপাদন দিন দিন কমে যাচ্ছে। এর জন্য উচ্চ ফলনশীল ধান চাষে ব্যবহৃত কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচের জন্য বাঁধ নির্মাণ, শিল্প-কারখানার বর্জ্যে পানিদূষণ, প্রাকৃতিক জলাশয়ে পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া প্রভৃতি কারণ দায়ী। এসব বিরূপ পরিস্থিতির কারণে দেশি কৈ প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।
তবে আশার কথা হচ্ছে, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা এই মাছ বর্তমানে চাষ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের হাইব্রিড কৈ মাছের চাষ হচ্ছে, যা সাধারণ কৈ থেকে আকারে বেশ বড়।
সম্পর্কিত খবর

আইআইটি-জেইউ স্পোর্টস ক্লাবের পুরস্কার বিতরণী
অনলাইন ডেস্ক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজিতে আইআইটি-জেইউ স্পোর্টস ক্লাবের পুরস্কার বিতরণী হয়েছে। অনুষ্ঠানে ক্রিকেট, ফুটবল এবং শাটলচ্যাম্পস ২.০ (ব্যাডমিন্টন)-এর প্রতিযোগীদের কৃতিত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইআইটির পরিচালক ড. রিসালা তাসিন খান। তিনি অংশগ্রহণকারীদের প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের জীবনে খেলাধুলার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
আইআইটি-জেইউ-এর সাবেক পরিচালক ড. এম. কায়সার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেন।
আইআইটি-জেইউ স্পোর্টস ক্লাবের সাবেক সভাপতি (২০২৩-২৪) মুয়াম্মার শাহরিয়ার শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খেলাধুলার ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘এমন কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের একাডেমিক চাপ কমাতে সহায়তা করে এবং তাদের নেতিবাচক কার্যকলাপ থেকে দূরে রেখে গঠনমূলক ও ইতিবাচক কর্মকাণ্ডে যুক্ত রাখে।
অন্যদিকে, আইটিপিএল ক্রিকেট এ প্রাইজমানি স্পন্সর করার জন্য সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম তন্ময় ৪২ আবর্তনকে ধন্যবাদ জানান।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জবিতে বিক্ষোভ মিছিল
জবি প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে ভিক্টোরিয়া পার্ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থা নেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘আওয়ামী লীগের রাজনীতি, বন্ধ করো করতে হবে’ , ‘ছাত্রলীগ বাংলাদেশ, একসাথে চলে না’ ; ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ; ‘গড়িমশি বন্ধ করো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করো’ ; ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান রাব্বি বলেন, ‘কথা ছিলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে।
শাখা ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল বলেন, ‘হাজার মায়ের বুক খালি হওয়ার মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশে বসবাস করছি। শত সহস্র ভাইয়ের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত, তাদের আমরা বাংলাদেশের রাজনীতি করতে দিতে চাই না। গুম, খুন সন্ত্রাসের রাজনীতি আমরা ফিরে আসতে দিতে চাই না। ইন্টেরিম সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই আপনারা ভুলে যাবেন না, আপনার ওই ক্ষমতার চেয়ার আমার ভাইয়ের রক্তের ওপর বসে আছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ আমাদের শত্রু, দেশের শত্রু। সুতরাং যারা আওয়ামী লীগের গোলামী করতে চাইবে তারাও আমাদের শত্রু হিসেবে গণ্য হবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়।
এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশের সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান। এ সময় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘যে ফ্যাসিস্ট দল বাংলাদেশে একাধিক গণহত্যা চালিয়েছে তাদের নিষিদ্ধ করার জন্য নতুন কোনো কারণ দরকার নেই। আমরা মনে করি, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনাকে বিদায় করার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখান করেছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের জাবি শাখার সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলা মানে আমাদের শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করা। আমাদের শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেব না। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী দল হিসেবে চিহ্নিত করে অতিদ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে। বাংলাদেশে কারা রাজনীতি করবে সেটা ঠিক করবে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশের প্রেসক্রিপশনে আর বাংলাদেশ চলবে না।

জীবন দেব, জুলাই দেব না
রংপুর অফিস

আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গণহত্যাকারী এবং ফ্যাসিবাদীদের ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বেলা আড়াইটায় ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশ নেন।
এসময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর সদস্য সচিব রহমত আলী, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন, জাহিদ হাসান জয়, জাকের হোসেন পাশা, আশিক মিয়া প্রমুখ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শাসমুর রহমান সুমন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত যে বা যারাই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে ছাত্র জনতা প্রতিহত করবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহানগর সদস্য সচিব রহমত আলী বলেন, ‘প্রয়োজনে বাংলাদেশের ৪ কোটি তরুণ জীবন দেব।