চলমান লকডাউনে ক্রেতা পাচ্ছেন না কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার ২৫০০ দুগ্ধ খামারি। ক্রমাগত লোকসানের কারণে তাদের খামারগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দুধ বিক্রি করে গাভীর খাবারও যোগান হচ্ছে না তাদের। ফলে গাভী ও দুধ নিয়ে চরম বিপাকে আছেন তারা।
লকডাউনে ক্রেতা নেই, বিপাকে দুগ্ধ খামারিরা
পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ছোট-বড় মিলে দুই হাজার ৫০০টি গাভীর খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪০ হাজার ৫০০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এ ছাড়া হিসেবের বাইরেও গ্রামে অসংখ্য কৃষক রয়েছেন যারা একটি করে গাভী পালন করছেন। সেখান থেকেও প্রচুর দুধ উৎপাদন হচ্ছে।
চলমান কঠোর লকডাউনে গত তিন দিন ধরে ক্রেতারা দুধ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে খামারিদের দুধ সরবরাহের জায়গা বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলার মঙলবাড়িয়া গ্রামের মুঞ্জুরুল হক জানান, তার খামারে প্রতিদিন ৯৬ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। যেসব মিষ্টির দোকানে তিনি দুধ বিক্রি করতেন লকডাউনে দোকানগুলো বন্ধ আছে। সুতরাং দুধ বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। এভাবে চলতে থাকলে গাভী বিক্রি করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
উপজেলার বীরপাকুন্দিয়া গ্রামের সেলিম মিয়া ও কুমারপুর গ্রামের গোলাম রব্বানী বলেন, বাজারে গো-খাদ্যের দামও অনেক বেড়ে গেছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, লকডাউনের কারণে হোটেল ও মিষ্টির দোকানগুলো হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ায় খামারিরা দুধ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। করোনার এই দুঃসময়ে খামারিদের দুধ বিক্রি করার জন্য ভ্রাম্যমাণ পরিবহনের ব্যবস্থা করা যায় কি-না বিষয়টি নিয়ে আমি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করব।

১৪ পর্বতের চূড়ায় লাল-সবুজের পতাকা ওড়াতে চান বাবর আলী
অনলাইন ডেস্ক

বিশ্বে ৮ হাজার মিটার কিংবা তার বেশি উচ্চতার ১৪টি পর্বত রয়েছে। এসব পর্বতের চূড়ায় লাল-সবুজের পতাকা ওড়াতে চান এভারেস্ট জয়ী বাংলাদেশি চিকিৎসক বাবর আলী। সম্প্রতি পৃথিবীর দশম সর্বোচ্চ পর্বত অন্নপূর্ণা-১ এর চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা ওড়িয়েছেন তিনি। হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত এই পর্বতটির উচ্চতা ২৬ হাজার ৫৪৫ ফুট।
এ উপলক্ষে আজ বুধবার বাবরের ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সে’ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় ১৪ পর্বতের চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখছেন বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রামের আলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পৃথিবীতে ৮ হাজার মিটার কিংবা এর বেশি উচ্চতার ১৪টি পর্বত রয়েছে।
বাবর পুরো অভিযানে সবকিছু কীভাবে সামাল দিয়েছেন, তা তুলে ধরেন ক্লাবের সভাপতি এবং অভিযানের ব্যবস্থাপক ফরহান জামান। তিনি বলেন, বাবর তিনটি আট হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত যেভাবে সামলে নিয়েছেন, বিশেষ করে অন্নপূর্ণা। সে হিসেবে আমরা আশাবাদী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সে শিগগিরই সবকটি আট হাজার মিটার শৃঙ্গেই হাসিমুখে দাঁড়াতে পারবে। এই কীর্তি কিন্তু নেপালের শেরপারা বাদে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় শুধুমাত্র পাকিস্তানের একজনেরই আছে।
অন্নপূর্ণা আরোহণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বাবর বলেন, সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল ক্যাম্প-২ থেকে ক্যাম্প-৩ এর পথ। এই পথের খাড়া ঢাল বেয়ে সব সময় তুষারধস। সেই সঙ্গে পাথর খসে পড়ছে। এগুলোর মধ্যে খুব সাবধানতা অবলম্বর করে পর্বতারোহীদের আরোহণ করতে হয়। এ ছাড়া সামিট পুশ (সর্বশেষ ক্যাম্প থেকে চূড়া পানে যাত্রা) আমাদের কঠিন পরীক্ষা নিয়েছে। ৬ হাজার ৪০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত ৩ নম্বর ক্যাম্প থেকে প্রায় ১৭০০ মিটার একটানা আরোহণ করে চূড়ায় পৌঁছাতে হয়েছে। এতে সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ১৭ ঘণ্টা। আর ফিরতি পথে সময় লেগেছে ৯ ঘণ্টা। মোট সাড়ে ২৬ ঘণ্টার এই সামিট পুশ শরীরের শেষ শক্তিটুকুরও পরীক্ষা নিয়েছে। আমি জীবনে পর্বতারোহণসহ ছোট-বড় নানা অ্যাডভেঞ্চার করেছি। তবে অন্নপূর্ণা-১ পর্বতের মতো কঠিন পরীক্ষা আগে আমাকে দিতে হয়নি। তবে এতকিছুর পরও ঠিকঠাকভাবে আরোহণ করে দেশে ফিরতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। পৃষ্ঠপোষকসহ বাকি সবার সহযোগিতা পেলে বাকি ৮ হাজারি মিটার পর্বতগুলোতে আমার পদচারণা অব্যাহত রাখতে পারব।
এ সময় আরো ব্ক্তব্য রাখেন, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল নিটওয়ারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ নুর ফয়সাল এবং আলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম এর পরিচালক ব্রুনো লাক্রামপ।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে বাবর আলী ক্লাব কর্মকর্তাদের হাতে প্রত্যর্পণ করেন জাতীয় পতাকা, যা তার হাতে অর্পণ করা হয়েছিল ২০ দিন আগে। ৩টি আট হাজার মিটার পর্বতে এই জাতীয় পতাকা উড়িয়ে জাতিকে আনন্দে ভাসিয়েছেন বাবর। এই পর্বতারোহী স্বপ্ন দেখেন বাকি ১১টিতেও উড়বে এই লাল-সবুজ পতাকা।
উল্লেখ্য, এই দুঃসাহসিক অভিযানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার্স লি., ভিজ্যুয়াল ইকো স্টাইলওয়্যার লি., এডিএফ অ্যাগ্রো, ফ্লাইট এক্সপার্ট, এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লি, ও ক্লজে।

সিরাজগঞ্জে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

৬ দাবিতে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সিরাজগঞ্জ শহরের রেলগেট এলাকায় বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। দুই ঘণ্টা কর্মসূচি পালন শেষে শিক্ষার্থীরা সড়ক ত্যাগ করেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ১৮ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা প্রয়োগ করে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতির আদেশ দেওয়া হয়। এতে কারিগরি শিক্ষায় ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের ন্যায্য অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং পেশাগত বৈষম্য আরো প্রকট হয়েছে। এ জন্য আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছি।
এ সময় ৩০ শতাংশ কোটা বাতিল, কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতদের দিয়েই কারিগরি পদে নিয়োগ, বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, প্রাইভেট সেক্টরে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য বেতন নির্ধারণ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে আবেদন করতে সুযোগ দেওয়া এবং জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদের যোগ্যতা হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নির্ধারণের দাবি জানান তারা।

কাপাসিয়ায় অটোরিকশা খাদে পড়ে প্রাণ গেল নারীর
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাত প্রায় তিনটার দিকে ঢাকা-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে উপজেলার বড়হর বাজারসংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত নারীর নাম রুমা আক্তার (৪৫)। তিনি নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলা পাঁচঘাট গ্রামের গোলাম হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হতাহত সবাই অটোরিকশাটির যাত্রী ছিলেন।
আহত অটোরিকশাচালক আবুল হোসেন জানান, বুধবার রাতে তিনি টঙ্গী থেকে যাত্রী নিয়ে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া যাচ্ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, টের পেয়ে তারা সেখানে ছুটে গিয়ে অটোরিকশাচালকসহ তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
কাপাসিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, ‘নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

কুমিল্লায় মহাসড়ক অবরোধ করলেন পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা
- তীব্র যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগ
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি

ছয় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কুমিল্লায় মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কোটবাড়ি এলাকায় এ অবরোধ করা হয়।
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১২টার দিকে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মহাসড়কে জড়ো হন। এ সময় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা মহাসড়কে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ছয় দাবির মধ্যে রয়েছে- জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোতে অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট হতে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে।