পাবনার সাঁথিয়ায় আলেয়া খাতুন নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে টুটুল হোসেন (৪০) নামের একজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়াও একই মামলায় ভিকটিমকে ধর্ষণচেষ্টার দায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড, অনাদায়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং লাশ গুমের দায়ে দুই বছর কারাদণ্ড, অনাদায়ে আরো পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ রবিবার (২৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মিজানুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি টুটুল পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার চর পাইকারহাটি গ্রামের মো. আতাহার মল্লিকের ছেলে। আর নিহত আলেয়া খাতুন একই গ্রামের আরদোশ মল্লিকের স্ত্রী। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর দুপুরে গৃহবধূ আলেয়া খাতুন বাড়ির পাশে লাকড়ি কুড়াতে ও জমি দেখতে যান। এ সময় টুটুল তাকে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু আলেয়া খাতুনের জবরদস্তির কারণে ব্যর্থ হয়ে তাকে শাড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ধানক্ষেতে লুকিয়ে রাখেন। এদিন দিবাগত রাত ৩টার দিকে লাশ ধানক্ষেতের আরো দূরে লুকিয়ে রাখা হয়।
এ ঘটনায় একই বছরের ৬ নভেম্বর সন্দেহজনকভাবে টুটুলকে পুলিশ আটক করে। পরে আদালতের কাছে আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং তার দেওয়া তথ্যমতে লুকিয়ে রাখা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত আলেয়া খাতুনের মেয়ে সাবানা আক্তার বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় টুটুলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী চৌধুরী রাজিয়া সুলতানা টুলটুলি জানান, ‘আমরা সংক্ষুব্ধ। কারণ আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি আমার মক্কেল সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।’
তবে রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট খন্দকার আব্দুর রকিব। তিনি বলেন, ‘এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। আশা করি আইনি প্রক্রিয়া শেষে খুব দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে।’