<p style="text-align:justify">বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এক বিচারপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন তিনি। মামলা নিষ্পত্তি করতে আরো ২০ লাখ টাকা চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। </p> <p style="text-align:justify">গত ২৮ আগস্ট কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি বরাবর এম লোকমান হোসাঈন নামের এক বিচারপ্রত্যাশীর দেওয়া অভিযোগে এমন তথ্য পাওয়া যায়। অভিযোগকারী বরিশালের স্থানীয় দৈনিক ‘আজকের সময়ের বার্তা’ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। </p> <p style="text-align:justify">লোকমান হোসাঈন তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বরিশাল জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মইদুল ইসলামের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি সংবাদ প্রকাশ করেন। ওই সংবাদ প্রকাশের জেরে মইদুল ইসলাম বাদী হয়ে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে তিনিসহ তার পত্রিকার ৩ জন সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম রহস্যজনক কারণে মামলাটি গোপন করে ফেলেন। পরবর্তীতে মামলা নম্বর ঠিক রেখে নথি পরিবর্তন করে আরো কিছু ধারা যুক্ত করে মামলাটি নতুন করে দায়ের করতে সহযোগিতা করেন কামরুল ইসলাম। এরপর দৈনিক আজকের সময়ের বার্তা পত্রিকায় ‘চেয়ারম্যান মইদুলকে বাঁচাতে বিচারক কবিরের জালিয়াতি’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">যার পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় আমিসহ আমার অফিসের ৬ সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের নাজির কামরুল ইসলাম।</p> <p style="text-align:justify">পরবর্তীতে অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য নিজ থেকে যোগাযোগ করে ২৫ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় সাজা নিশ্চিত এমন হুঁশিয়ারি দেন। তার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় করা মামলাগুলোতে সময়ের বার্তা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মো. রিয়াজ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারাভ্যন্তরীণ ছিলেন।</p> <p style="text-align:justify">আমি ও আমার সহকর্মীদের এবং তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে জেলহাজত ও হয়রানি থেকে বাঁচতে অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে ৫ লাখ টাকা দিই। এর পর থেকে কামরুল ইসলাম তার দাবীকৃত বাকি ২০ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য আমাকে নিয়মিত চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তাই ন্যায়বিচার প্রত্যাশায় আমি এই অভিযোগ দিয়েছি।</p> <p style="text-align:justify">বরিশাল জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র রায় বলেন, ‘এম লোকমান হোসাইন নামের এক বিচারপ্রত্যাশী বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন। তিনি প্রধান বিচারপতি বরাবর ন্যায়বিচার চেয়ে ওই লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমাদের কাছে লিখিত ওই অভিযোগের কপি সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মহোদয় অবহিত রয়েছেন।’</p> <p style="text-align:justify">চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, লোকমান হোসাইন তার সম্পাদিত একটি স্থানীয় দৈনিকে চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছিল যেটি ভিত্তিহীন ছিল। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আমি তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছিলাম। আর ওই মামলা করার কারণে তিনি আমার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দিয়েছেন এর সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’</p>