<p>দাপ্তরিক কাজের ফাঁকে তিনি ছুটে চলেন যে কোনো স্কুলে। সেখানে প্রধানের অনুমতি নিয়ে ঢুকে পড়েন শ্রেণিকক্ষে। একজন পেশাদার শিক্ষকের মতো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে মজার সব গল্পের মাধ্যমে শুরু করেন পাঠদান। শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই নন শিক্ষার ব্যবস্থার উন্নতিতেও নিরলস পরিশ্রম করা এই মানুষটি হচ্ছেন সাবরিনা সাত্তার পুাষ্পিতা। তিনি ময়মনসিংহের ঈরগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।</p> <p>৩৪তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটেনারী সায়েন্সে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন এবং চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফার্মাকোলজিতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। তিনি আগের কর্মস্থল নাটোর সদরের শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হয়েছিলেন শিক্ষা খাতে অসামান্য অবধানের জন্য। সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েও শিক্ষকতা করার সুপ্ত বাসনা এখনো হৃদয়ে ধারণ করেন তিনি। আর এই জন্য তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই চলে যান কোনো স্কুলে।</p> <p>সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ও পরে পাশেই বিশ্বেশরী উচ্চ বিদ্যালয়ে যান। সেখানে প্রথমে তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে শ্রেণিতে ঢুকেন ওই শ্রেণিতে তিনি... বিষয়ে ক্লাস নেন। সেখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করে একজন ইউএনওকে পেয়ে হতব্বিল হয়ে যায়। একজন ইউএনও হয়েও তাদের কাছে গিয়ে বেঞ্চে বসে পাঠদান দেওযায় তারা ভীষণ খুশি। প্রায় ৩০ মিনিট ক্লাস নিয়ে পরে যান পাশেই বিশ্বেশরী উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে ক্লাসে গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ দেন।</p> <p>এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলে, ইউএনও স্যার আমারারে বাংলা ও অংক ক্লাস নিয়েছেন। ক্লাসে এসে স্যার আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। সেই সঙ্গে কিভাবে পড়া মনে রাখতে হবে তার নিয়ম-কানুন শিখিয়ে দিয়েছেন। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক  জাহানারা বেগম বলেন, ইউএনও স্যার স্কুলে এসে মজার মজার গল্প করে বাংলা ও অংক ক্লাস নিয়েছেন তা দেখে শিক্ষার্থীরা অনেক খুশি। ক্লাস নিয়ে চলে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা আবার আসার আমন্ত্রণ জানায়। এ সময় তিনি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে শিক্ষকদের যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করার জন্য অনুরোধ করেন।</p> <p>পাঠদানের বিষয়ে ইউএনও পুষ্পিতা বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পড়াতে খুব আনন্দ পাই। শিক্ষা জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই। ছোট ছোট শিশুদের পড়ানো অসাধারণ ব্যাপার। এতে দুইটি লাভ হয়। একটি শিশুদের পড়াতে ও আরেকটি বিদ্যালয়ের কোনো সমস্যা আছে কিনা তা দেখা হয়। তিনি আরো বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং দেশের একজন নাগরিক হিসাবে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখেতে পারা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।</p>