<p style="text-align:justify">‘সবুজ আমারে কইতো মা তুমি কিছুদিন কষ্ট করো, আমি পাস করলে এডা চাকরি নিমু। তোমার কষ্ট করতে অইবো না। পুলাডা পরীক্ষা দিলো। ওরা আমার বুকের ধন সবুজকে গুলি কইরা মারলো। অহন পাস করলেই কি অইবো? সবুজ যে আর ফিরে আইবো না ’। </p> <p style="text-align:justify">এভাবেই আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট শেরপুর জেলা শহরের খরমপুর মোড়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত এইচএসসি পরীক্ষার্থী সবুজ মিয়ার মা সমেজা বেগম।  </p> <p style="text-align:justify">সবুজ নিহতের পর থেকেই তার পরিবারে বইছে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ২০২৪ ফলাফল প্রকাশ হলে তারা জানতে পায় সবুজ এইচএসসি পরীক্ষায় ৪ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট পেয়ে পাস করেছে। এসময় সবুজের মায়ের অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি এভাবে কথাগুলো তুলে ধরেন। </p> <p style="text-align:justify">শহীদ সবুজের মা সমেজা বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, আমার নিরপরাধ ছেলেকে যারা খুন করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।</p> <p style="text-align:justify">নিহত সবুজ শ্রীবরদীর উপজেলার খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের রুপারপাড়া গ্রামের প্যারালাইজড রোগী আজাহার আলীর ছেলে। সবুজ একটি ওষুধের দোকানে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কাজ করতো। ওই আয়ে চলতো পাঁচ সদস্যের পরিবার। তাকে হারিয়ে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।</p> <p style="text-align:justify">তারা দুই ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে সবুজ দ্বিতীয়। বড় বোনের বিয়ের পর তার বাবা প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে আছে। সেই থেকে পরিবারের দায়িত্ব ছিল সবুজের ওপর। অতি কষ্টে সংসারের খরচের পাশাপাশি  শ্রীবরদী সরকারি কলেজে পড়াশোনা করতেন। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেন। এরপরেই শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ওই আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রাণ হারায় মেধাবী ছাত্র সবুজের। </p> <p style="text-align:justify">শ্রীবরদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম আলিফ উল্লাহ আহসান বলেন, নিহত সবুজ মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। ৬ সদস্যের সংসারের খরচ বহন করে নিজের লেখাপড়া চালিয়েছে। এরপরেও তার এই রেজাল্ট অবশ্যই প্রশংসিত। আমরা তার শোকাহত অসহায় পরিবারের পাশে আছি।  </p>