<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি চাপে থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এ মুহূর্তে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা ও বহিস্থ খাতের চাপ। এ ছাড়া বর্তমানে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাও রয়েছে। এসব কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুব বেশি বাড়বে না। ফলে কিছুটা চাপে থাকবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব ঝুঁকির কথা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা, অর্থনীতিবিদ নাজমুস খান ও জ্যেষ্ঠ যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহরীন এ মাহবুব।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ৪ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে আগামী অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫.৫ শতাংশে। প্রবৃদ্ধি কমার পেছনে দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক কারণ দায়ী বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। পূর্বাভাসে বিশ্বব্যাংক আরো বলেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশে মূল্যস্ফীতি সামান্য কমে ৯ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এতে বাংলাদেশের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশে সরবরাহব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। তবে সরকারের নেওয়া বেশ কিছু পদক্ষেপের কারণে নিকট ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে বেড়ে ৯.৭ শতাংশ হয়েছে। আর চলতি অর্থবছর শেষে এটি আবার ৯ শতাংশ নেমে আসবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে জানান বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির সূচকের ৪৫ শতাংশই হিসাব করা হয় খাদ্যপণ্যের দাম দিয়ে। ফলে খাদ্যের দাম বাড়ায় তা মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংক মনে করে, বর্তমানে বাংলাদেশের সামনে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। তবে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় একদিকে দেশের বেসরকারি খাতে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান কমেছে, অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এ অবস্থায় আরো বেশি নতুন ও শোভন চাকরির সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কর্মসংস্থানে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তার প্রায় ৮৫ শতাংশই অনানুষ্ঠানিক খাতের। ২০১৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে প্রতিবছর উৎপাদন খাতে গড়ে ৯.১ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিপরীতে এ খাতে প্রতিবছর কর্মসংস্থান ৯.৬ শতাংশ হারে কমেছে। বেশির ভাগ, প্রায় সাড়ে ৪৫ শতাংশ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে কৃষি খাতে। এ খাতে উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থানই হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক ও নিম্ন মজুরির।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহ উভয় দিক দিয়েই চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে জানায় বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে কর্মের বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। সেটি একটি বড় সমস্যা। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষার মান বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষারও মিস ম্যাচ আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের পরিস্থিতি খারাপ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর্থিক খাত নিয়ে বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে নানা ধরনের সংকট রয়েছে, বিশেষ করে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি। সরকারের অনেক প্রচেষ্টার পরও সেটি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদের হার বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা বলেন, বাংলাদেশ এখন গণ-অভ্যুত্থান ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক অসন্তোষ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে পুরোপুরি স্বাভাবিক করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং ব্যাবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুত সংস্কারের ওপর জোর দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির তথ্য এলেও তা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে খুব একটা ভূমিকা রাখেনি। প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না। বিশেষ করে শিক্ষিত যুবক ও নারীদের অনেকেই তাঁদের কাঙ্ক্ষিত চাকরি খুঁজে পান না। তিনি বলেন, আশা করছি, সরকার দেশের আর্থিক ও ব্যবসায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি ও সাহসী সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করবে। এর মাধ্যমে দেশ লাখ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির পথে ফিরে আসতে পারবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলমান অর্থবছরের বাজেটে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার ৬.৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। সেই হিসাবে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস সরকারি লক্ষ্যের চেয়ে ২.৭৫ শতাংশ কম হবে। বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী কমে গেলে তা হবে করোনার পর সবচেয়ে কম প্রবৃদ্ধি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে ৩.৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>