<p style="text-align:justify">বিজয় দিবস পরবর্তী এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করছিলেন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। এ সময় মঞ্চের মেঝেতে আঁকা বিশাল আকারের জাতীয় পতাকা ছিল তাঁর পায়ের নিচে। এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়ের পাশাপাশি উপস্থাপনার দৃশ্যটি ক্যামেরাবন্দি করে ভিডিও করে উপস্থাপিকা নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করায় সর্বত্রই তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায়।</p> <p style="text-align:justify">জানা যায়, গত মঙ্গলবার আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরামের আয়োজনে বিজয় দিবস পরবর্তী একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় গফরগাঁও শহরের শিলাসী মহিলা কলেজের পাশে আপন সংগীত একাডেমি প্রাঙ্গণে। এ সময় পুরো অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছিলেন গফরগাঁওয়ে আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম উপজেলা শাখার সহসভাপতি ও উপজেলার বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার। উপস্থাপনার সময় পূর্ব থেকে মেঝেতে আঁকা বিশাল পতাকায় দাঁড়িয়ে তিনি অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেছেন। এ বিষয়টি সে সময় তেমনভাবে কেউ নজরে না নিলেও অনুষ্ঠান শেষে আলোচনা ও সমালোচনা চলে সর্বত্র। পরে এই অনুষ্ঠানের ভিডিও আপলোড করেন তার ফেসবুক আইডি এবং বেশ কয়েকটি আইডিতে এটি পোস্ট করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">এ ঘটনায় আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম নেতাদের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাস্তির দাবিতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। অনেকেই এই ধৃষ্টতার জন্য বিতর্কিত শিক্ষিকার শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবি জানান।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমান রতন বলেন, উপস্থাপক তার পায়ের নিচে জাতীয় পতাকা রেখে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে তাদের প্রতিষ্ঠিত সংগঠন 'আপন সংগীত একাডেমি' আয়োজিত অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। এই বিষয়টি আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক পদক্ষেপ নিবে।</p> <p style="text-align:justify">গফরগাঁওয়ের সাংস্কৃতিক কর্মী আজিজুর রহমান জুয়েল এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও শাস্তির দাবি করে বলেন, এটা অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। জাতীয় পতাকার অবমাননা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।</p> <p style="text-align:justify">শিকদার সঙ্গীত একাডেমির পরিচালক আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য, জাতীয় পতাকা আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক, এটি রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ।</p> <p style="text-align:justify">জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. নূর-এ-আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি জাতীয় পতাকা অবমাননার সামিল। এ বিষয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তাকে শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে শিক্ষিকা ফাতেমা আক্তার বলেন, এটা জাতীয় পতাকা সদৃশ্য আলপনা ছিল। এটা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি কেন, বুঝতে পারছি না।</p> <p style="text-align:justify">এ ব্যাপারে গফরগাঁও থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম বলেন, উনি তো আলপনার উপরে দাঁড়িয়েছিলেন। আলপনা যদি জাতীয় পতাকা হয়, তাহলে দাঁড়ানো যাবে কি? এমন প্রশ্ন করলে তিনি একটু থেমে বলেন, আমরা বিষয়টা দেখছি।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবাইয়া ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অভিযুক্তকে ডেকে ঘটনার সত্যতা যাচাই করা হবে। এরকম ঘটনা অবশ্যই জাতীয় পতাকা অবমাননার শামিল। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষিকার প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p>