নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে হামলা, বেড়া ভাঙচুর

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
শেয়ার
নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে হামলা, বেড়া ভাঙচুর
ছবি : কালের কণ্ঠ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে হামলা ও মাঠের চারপাশে দেওয়া টিনের বেড়া ‘বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা’ ভাঙচুর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) নারীদের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। এই খেলা বন্ধ করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এলাকার ‘বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা’ জড়ো হয়ে এই ভাঙচুর করেন বলে জানায় স্থানীয়রা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার লাইভ প্রচার করা হয়।

 

স্থানীয়রা জানায়, তিলকপুরের স্থানীয় টি স্টার ক্লাবের উদ্যোগে তিলকপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠটি টিন দিয়ে ঘেরাও করে প্রায় দেড় মাস ধরে ফুটবল খেলা চলছিল। টি স্টার ক্লাবের সভাপতি উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক সামিউল হাসান ইমন। নারীদের ফুটবল খেলার প্রতিটি ম্যাচে মাটিতে বসে ৩০ টাকা ও চেয়ার বসে ৭০ টাকা করে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন
ছুটিতে এসে চবি শিক্ষার্থীর ডিম বিক্রি

ছুটিতে এসে চবি শিক্ষার্থীর ডিম বিক্রি

 

ফেসবুক লাইভে দেখা যায়, তিলকপুর রেলস্টেশনের সামনে স্বাধীনতা চত্বরে মুসল্লি ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জড়ো হন।

সেখানে কয়েক জন মওলানা বক্তব্য দেন। তাদের একজনকে বলতে শোনা যায়, কয়েক দিন থেকে জানতে পারছি এলাকার মেয়েরা খেলা নিয়ে ব্যস্ত। মুসলমান মেয়েদেরকে ঘরে রাখার জন্য আল্লাহতালা বলেছেন। তারা পর্দার মধ্যে থাকবেন।
সেই মেয়েদের এনে লেলিয়ে দিয়ে যুবকদের পাপাচার কাজে অগ্রসর করছে। যারা সৎ কাজে আদেশ করবে দেবে অসৎ কাজে নিষেধ করবে তারাই সফল কাম। মেয়েদের লেলিয়ে দেওয়া কীভাবে মানতে পারি। যারা মেয়েদের লেলিয়ে দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান, আমি তাদের সর্তক করতে চাই আপনারা সাবধান হন। আগামী দিনে মেয়েদের খেলা বন্ধ করুন।
যদি আপনারা বন্ধ না করেন তাহলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

আরো পড়ুন
কাঁদলেন সেলেনা, হাসলেন মেগান!

কাঁদলেন সেলেনা, হাসলেন মেগান!

 

তিলকপুর টি স্টার সেবা সংগঠন ও টুর্ণামেন্ট আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক খাজা মন্ডল বলেন, বুধবার বিকেলে জয়পুরহাট-রংপুর নারী ফুটবল দলের ফুটবল খেলা হওয়ার কথা ছিল। সেই মোতাবেক আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। স্থানীয় জামায়াত নেতা নজরুল ইসলাম, চরমোনাই নেতা আব্দুস সামাদ, মাসুম মৌলভীদের নের্তৃত্বে ক্বওমী মাদরাসা থেকে কোমলমতি ছাত্রদের নিয়ে এসে খেলার মাঠে হামলা চালিয়ে টিনের বেড়া ভেঙে দিয়েছে। দেশে তো নারীদের খেলা অবৈধ নয়। আমরা প্রশাসনকে অবগত করে খেলার আয়োজন করেছিলাম। ক্লাবের সদস্যদের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাচ্চা হাজি ক্বওমী মাদরাসার সহকারী পরিচালক হাফেজ মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ইসলাম নারীদের পর্দার বাহিরে কোন কাজ করা সমর্থন করে না। পর্দার খেলাপ হওয়ায় নারীদের খেলা হোক আমরা স্থানীয়ভাবে চাচ্ছিলামনা। এর পূর্বে তিলকপুরে কখনো নারীদের ফুটবল খেলা হয়নি। খেলাকে কেন্দ্র করে মাঠে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের আনাগোনা এবং অর্ধ উলঙ্গ হয়ে নারীদের খেলানো হলে যুবকদের নৈতিক অবক্ষয় ঘটতে পারে। সেই কারনে খেলা বন্ধ করতে আমাদের সাথে স্থানীয় আলেম সমাজ, তৌহিদী জনতা এবং মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্ররা একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করে প্রতিবাদত করা হয় এবং পরে মাঠে গিয়ে টিনের বেড়া খুলে ফেলা হয়। 

এ বিষয়ে তিলকপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা নারীদের ফুটবল খেলার বিরুদ্ধে নয়। আমরা বেহায়াপনা ও অশ্লিলতার বিরুদ্ধে। আয়োজকরা খেলার আয়োজন করে নারীদের নিয়ে এসে গান বাজনা করে টিকিট কেটে যুবকদের সামনে নারীদেরকে অশ্লিলভাবে উপস্থাপন করা করছেন। এখানে জামায়াতে ইসলাম নয় বরং ব্যক্তিগতভাবে ইমানী দায়িত্ব থেকে স্থানীয় তৌহিদী জনতার সাথে একাগ্রতা পোষন করে এর বিরোধীতা করেছি। স্থানীয় ক্বওমী মাদ্রাসার ছাত্ররা টিনের বেড়া খুলেছে আমি এর সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।

আরো পড়ুন
পাংশায় শতভাগ নতুন বই না পেয়ে স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীরা

পাংশায় শতভাগ নতুন বই না পেয়ে স্কুলবিমুখ শিক্ষার্থীরা

 

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, নারী টিমের ফুটবল খেলার আয়োজনের বিরুদ্ধে ভাঙচুরের বিষয়ে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে এখনো কেউ কোন প্রকার অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলম বলেন, নারী ফুটবল খেলার বিষয়ে বুধবার আয়োজকদের সাথে বসার কথা ছিল। তার আগেই মঙ্গলবার খেলার মাঠে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমরা অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হিলি স্থলবন্দরে ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ কোটি টাকা

হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
হিলি স্থলবন্দরে ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ কোটি টাকা
ছবি: কালের কণ্ঠ

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে নতুন অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৩ কোটি টাকা। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েক বছর ধরেই রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে চলছে বন্দরটি। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ। অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫৮কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

 যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৩৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা। ফলে ২৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতিতে রয়েছে হিলি কাস্টমস শুল্ক স্টেশন।

কম শুল্কযুক্ত ও শুল্কমুক্ত পণ্য বেশি আমদানি হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতিতে প্রভাব পড়েছে বলে দাবি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। সেই সঙ্গে জটিলতার প্রভাব পড়েছে আমদানি-রপ্তানিতে।

বন্দর এলাকার রাস্তার বেহাল দশা ও কাস্টমসের অসহযোগিতাকে দায়ী করছে বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

হিলি কাস্টমস শুল্ক স্টেশনের তথ্যমতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হিলি শুল্ক স্টেশন থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয় ৭৪০ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকা, যার বিপরীতে এসেছে ৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

আগস্ট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, বিপরীতে এসেছে ৫৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা, বিপরীতে এসেছে ৪৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ কোটি ২১ লাখ টাকা, বিপরীতে এসেছে ৫৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। জানুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৯ কোটি ৩১ লাখা টাকা ।
ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ কোটি ৬১ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা। মার্চ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত আদায় হয়েছে ১৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।

বন্দরের আমদানিকারক মো. নাজমুল হক বলেন, রাজস্ব ঘাটতির মূল কারণ হল বন্দরের রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা। দীর্ঘ দিন থেকে বন্দরের চার লেন রাস্তার কাজ জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণ দেখিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে বন্দরের চারমাথা মোড় থেকে মহিলা কলেজ পর্যন্ত মেইন সড়কের বেহাল অবস্থা। বর্ষাকালে রাস্তার বেহাল দশার কারণে ট্রাকের ড্রাইভার একবার হিলি আসলে আর দ্বিতীয় বার আসতে চায় না।

আবার এই বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে চাল-ডাল, খৈল, ভুসি, ভুট্টা ও পেঁয়াজসহ অধিকাংশই শুল্কমুক্ত। সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় চাল। এতে যে শুল্ক ছিল সরকার সেটি প্রত্যাহার করেছে। এ কারণে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। আরেকটি কারণ হল আগে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হতো। কিন্তু সরকার ট্রাকের চাকা অনুযায়ী শুল্কায়নের প্রথা চালু রাখায় এই বন্দর দিয়ে ফল আমদানি বন্ধ আছে। এটি যদি উন্মুক্ত করা হলে যে যতটুকু পণ্য আমদানি করবে, সেই পরিমাণ পণ্যের শুল্ক দেবে তাহলে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হতো।

তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও এখানে বৈষম্য আছে। বেনাপোলে যে পণ্য সাড়ে তিন ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে, ঠিক একই পণ্য হিলি বন্দরে পাঁচ ডলারে শুল্কায়ন করা হয়। ফলে আমদানিকারকরা এই বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব জটিলতা কাটলে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বাড়বে, সেইসঙ্গে রাজস্বও বাড়বে। এসব জটিলতা কাটলে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বাড়বে, সেইসঙ্গে রাজস্বও বাড়বে।

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন বলেন, যেসব পণ্যের ওপরে রাজস্ব বেশি সেগুলো হিলি দিয়ে আমদানি হয় না। কারণ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এইচএস কোড ও শুল্ক নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে ওসব পণ্য বেনাপোল দিয়ে আমদানি হয়। ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটিতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আমরা চাই এসব জটিলতা দ্রুত কাটুক এবং হিলি কাস্টমসের রাজস্ব আয় আরো বাড়ুক।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে কম শুল্কযুক্ত ও শুল্ক মুক্ত পণ্য বেশি আমদানি হবার কারণে রাজস্ব আদায়ে কিছু ঘাটতি রয়েছে। তবে অর্থ বছরের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব। কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি রাজস্ব এসেছে বেশি শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির কারণে। বিশেষ করে জিরা, এলাচ সহ মসলা পণ্যের আমদানি বাড়লে রাজস্ব ঘাটতি হবে না বলে আশা করেন তিনি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বান্দরবানে সাবেক আ. লীগ নেতাকে জুতাপেটার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
নিজস্ব প্রতিবেদক, বান্দরবান
শেয়ার
বান্দরবানে সাবেক আ. লীগ নেতাকে জুতাপেটার অভিযোগ
ছবি: কালের কণ্ঠ

বান্দরবানে সাবেক এক আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেনকে জুটাপেটা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়েন আনোয়ার হোসেন। নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধেও নির্বাচন করেছেন কয়েকবার। কিন্তু ‘বিএনপিকে গালমন্দ’ করেছেন এমন অভিযোগে তাকে জুতাপেটা ও মারধর করা হয়।

আরো পড়ুন
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণ চেষ্টা, মামলা করে বিপাকে পরিবার

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণ চেষ্টা, মামলা করে বিপাকে পরিবার

 

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাতে বান্দরবানের বাইশারী বাজারে প্রকাশ্যে তার ওপর হামলা চালান ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইছহাক জমাদ্দার। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ইছহাক জমাদ্দারের বড় ভাই ইসমাইলের সঙ্গে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এদিকে গেল ২৭ রমজানে বাইশারীর নারিচবুনিয়া বাজারে আনোয়ার কিছু লোকের সঙ্গে গরু জবাই করে বিক্রি করেছেন ৭৫০ টাকায়।

ওইদিন বিএনপি নেতা ইছহাক জমাদ্দার গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকার পরিবর্তে ৭০০টাকা হাকিয়ে তর্কে জড়ান। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে, ইসহাক আনোয়ারকে চড়-থাপ্পড় দেন। এরপর আনোয়ারও উত্তেজিত হয়ে ইসহাককে মারধর করেন। পরে বিএনপি নেতারা তাকে ধরে পুলিশে দিলে ৫ আগস্টের পর হওয়া নাশকতার একটি মামলার আসামি করে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরো পড়ুন
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কমলেও বেড়েছে রাজস্ব

 

বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ধরে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে এলে থানায় পাঠানো হয়েছে।’

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি মো. মাশরুরুল হক বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ছুটিতে ছিলাম। তাকে নাশকতার মামলায় আদালতে পাঠানো হয়।’

স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক মুফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি বাইশারীর জন্য কলঙ্কিত হয়ে থাকবে। যারা ঘটনাটি ঘটিয়েছেন, তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ আমলে সুবিধা নেওয়ার কথা উঠে আসছে।

আরো পড়ুন
পরিবেশ রক্ষায় কর্মকর্তাদের ইতিবাচকভাবে কাজ করার আহ্বান

পরিবেশ রক্ষায় কর্মকর্তাদের ইতিবাচকভাবে কাজ করার আহ্বান

 

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, আনোয়ার একটি দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে আছেন। চারদিকে উৎসুক মানুষ। মাঝখানে বিএনপি নেতা ইউনুছ ও ইছহাক জমাদ্দার কথা বলার এক পর্যায়ে আনোয়ারের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় ইছহাক জমাদ্দারের হাতে জুতা নিয়ে পিটুনি দিতে দেখা যায়। 

মন্তব্য

ফুলপুরে বিলুপ্তপ্রায় সোনালি ভাঁট ফুলের মোহনীয় সৌন্দর্য

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
শেয়ার
ফুলপুরে বিলুপ্তপ্রায় সোনালি ভাঁট ফুলের মোহনীয় সৌন্দর্য
ছবি: কালের কণ্ঠ

ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় গ্রামীণ পথঘাটে এখনো চোখে পড়ে বিলুপ্তপ্রায় সোনালি ভাঁট ফুলের সমারোহ। বসন্তের আগমনে এই ফুলের মিষ্টি সুগন্ধ ও অপরূপ রূপ পথচারীদের মুগ্ধ করছে। স্থানীয়রা একে ‘নাক ফুল’ নামে ডাকে, কারণ শিশুরা এ ফুল কানে গুঁজে খেলাধুলা করে।

ডেপুলিয়া কংশ নদীর পাড়সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তার ধারে এখনো দৃশ্যমান এই ফুল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর ছবি শেয়ার করে অনেকেই প্রকৃতির এই উপহারকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। ফুলের গাছ সাধারণত ২ থেকে ৪ মিটার উঁচু হয়, পাতাগুলো পানপাতার মতো খসখসে। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে ফোটে এই ফুল, যার সৌরভ রাতেই বেশি তীব্র হয়। মৌমাছিরা ভাঁট ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত থাকে, আর পোকামাকড়ের গুঞ্জন পরিবেশকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

ফুলপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কামরুল হাসান কামু জানান, ভাঁট ফুল (বৈজ্ঞানিক নাম: Pavetta indica) একটি দেশি বুনো উদ্ভিদ, যা ভারত ও মিয়ানমারে পাওয়া যায়। এটি শিমুল-পলাশের মতোই বসন্তের প্রতীক। ফুল ফোটার পর ধীরে ধীরে ফল ধরে, যা পাকলে হালকা লাল আবরণে ঢাকা থাকে।

প্রাচীনকালে কবিরাজ ও ইউনানি চিকিৎসকরা ভাঁট ফুলের রস ব্যবহার করতেন চর্মরোগ, পোকাকামড়ের ব্যথা, কৃমি, জ্বর ও আমাশয় নিরাময়ে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চৈত্রসংক্রান্তিতে রোগ প্রতিরোধে এই ফুলের আরাধনা করেন।

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ ভাঁট ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন, “বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো কেঁদেছিল তার পায়”।

একসময় গ্রামের পতিত জমি, বনঝোপ বা জলাশয়ে স্বাভাবিকভাবে জন্মানো এই ফুল এখন বিরল। অযত্ন আর প্রকৃতির ভারসাম্যহীনতার কারণে এটি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, ভাঁট ফুলের সৌন্দর্য সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

প্রকৃতির এই নিটোল উপহার যেন কালের গর্ভে বিলীন না হয়, সে জন্য সচেতনতা জরুরি। ভাঁট ফুল শুধু সৌন্দর্যেরই নয়, বাংলার ঐতিহ্যেরও অংশ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
লালমোহন

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণচেষ্টা, মামলা করে বিপাকে পরিবার

ভোলা প্রতিনিধি
ভোলা প্রতিনিধি
শেয়ার
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ধর্ষণচেষ্টা, মামলা করে বিপাকে পরিবার
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। সংগৃহীত ছবি

ভোলার লালমোহন উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম বজলুর রহমান (৫০), তিনি উপজেলার চরভুতা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও একই এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

ভুক্তভোগী ওই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী। গত ২৬ মার্চ সকালে ওই বিদ্যালয়েই এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা করেন। মামলা করার পর থেকে ওই প্রধান শিক্ষক তার প্রভাবশালী আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে বিষয়টি চেপে যেতে ভুক্তভোগীর বাবাকে চাপ দিতে থাকেন।

আরো পড়ুন
মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিতে অটল : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মানবপাচার রোধে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিতে অটল : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

 

তাদের ওই এলাকা থেকে উচ্ছেদসহ মারধর করে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ঘটনার ১২ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিবার ভয় ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।

অপরদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে ঘটনার পরদিন ২৭ মার্চ লালমোহন থানার সামনে ভুক্তভোগীর পরিবারসহ স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।

ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ বিজয় দিবস উপলক্ষে সকালের দিকে প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান ওই ছাত্রীসহ বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার জন্য ডেকে আনে। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যখন বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ ঝাড়ু দিতে যায়, তখন সেখানে প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান তাকে জড়িয়ে ধরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। ওই শিক্ষার্থী জোরাজুরি করলে তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন বজলুর।

পরে ওই ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে চলে যান। ছাত্রীর মা তাকে কান্নার কথা জিজ্ঞেস করলে সে তার সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের আচরণের কথা বলে। তার পেছনে প্রধান শিক্ষকও তাদের বাড়িতে আসে। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে সে একপর্যায়ে সবার সামনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় মামলা দায়ের করেন।

আরো পড়ুন
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মেহমানদারি

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মেহমানদারি

 

ভুক্তভোগীর বাবা অভিযোগ করে জানান, তিনি পেশায় অটোরিকশাচালক। মামলার পর থেকে প্রধান শিক্ষকের শালা ভুট্টু হাওলাদার ও জাকির হাওলাদার তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি মিমাংশার জন্য তাকে দুই লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি টাকা নিতে রাজি না হওয়ায় তাকে বাড়ি থেকে বের হলে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে গুম করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে মামলা তুলে না নিলে তাদের রাস্তায় বের হতে দেবেন না বলেও হুমকি দেওয়া হয়।

ঘটনার পর ১২ দিন পার হলেও পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আসামি গ্রেপ্তারের কথা বললে থানার ওসি বলছেন, আসামিকে তারা খুঁজছেন। সে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় পরিবারসহ বাড়ির লোকজন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন ভিকটিমের বাবা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমানের শ্যালক ভুট্টু হাওলাদার হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ভিকটিমের বাবার সঙ্গে তার এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।

লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহ আলম জানান, তিনি বিষয়টি লোকমুখে শুনেছেন। তবে রমজানে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সত্যতা যাচাই করতে পারেননি। বিদ্যালয় খুললে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।

আরো পড়ুন
ভাঙ্গায় বিয়েবাড়িতে সংঘর্ষ, কনে না নিয়ে ফিরে গেল বরপক্ষ

ভাঙ্গায় বিয়েবাড়িতে সংঘর্ষ, কনে না নিয়ে ফিরে গেল বরপক্ষ

 

লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, ‘ঘটনার পরপর আসামি বজলুর রহমান পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে সে মোবাইল ব্যবহার না করায় সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া ভুক্তভোগী আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তবে ভুক্তভোগীর পরিবার ভয়ভীতি ও হুমকির বিষয়টি থানায় জানায়নি। জানালে তাদের কাছ থেকে জিডি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ