নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় একটি ফোনকলের সূত্র ধরে অপহরণের ১৩ দিনের মাথায় ১১ বছর বয়সী এক শিশু কন্যাকে ফিরে পেয়েছে তার পরিবার। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোসলেম উদ্দিন (৩৭) নামে এক অটোরিকশা চালককে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দুয়া থানা পুলিশ। এঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী কেন্দুয়া পৌরসদরের সাউদপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান। এর আগে, দুপুরে উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের মরিচপুর গ্রাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অটোরিকশাচালক মোসলেম নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা গন্ডা ইউনিয়নের মরিচপুর গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মার্চ ভুক্তভোগী উপজেলার পৌরসভার সাউদপাড়া এলাকা থেকে রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের রোয়াইল গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে যায়।
এসময় তার বাবা তাকে অটোরিকশায় তুলে দেন। এরপর থেকে ভুক্তভোগীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার। নিখোঁজের কয়েকদিন পর ভুক্তভোগী তার বোনকে ফোনে জানায় সে অপহরণের শিকার হয়েছে। পরে গত ১৯ মার্চ পরিবারের পক্ষ থেকে কেন্দুয়া থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী বাবা বলেন, 'গত ৭ মার্চ সকালে কেন্দুয়া পৌরসভা থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হয় তার মেয়ে। কিন্তু সে বাড়িতে সে আর যায়নি। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা গরীব মানুষ, এজন্য মানুষকে না জানিয়ে অনেক খুঁজাখুঁজির পরও তাকে পাইনি।
হঠাৎ গত ১৮ মার্চ মোবাইল ফোনে তার বোনকে জানায়, সে অপহরণ হয়েছে। তারপর থানায় গিয়ে অভিযোগ করি এবং মেয়েকে ফিরে পাওয়াসহ অপহরণকারীকে ধরে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।'
কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, 'গত ৭ মার্চ অপহরণের শিকার হয় ১১ বছর বয়সী এক কিশোরী। গত ১৮ মার্চ ওই কিশোরীর বড় বোনের মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। অপরপ্রান্ত থেকে কিশোরীর ওপর নির্যাতন হচ্ছে এমন তথ্য জানানো হয়। পরে ওই কিশোরীর বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানান এবং থানায় অপহরণের মামলা দায়ের করেন।'
ওসি আরো জানান, 'পুলিশ ওই ফোনকলের সূত্র ধরে গত বুধবার উপজেলার গন্ডা ইউনিয়নের মরিচপুর গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। ও মেয়েটিকে উদ্ধার করে।'
ওসি মিজানুর রহমান আরো জানান, 'মেয়েটি খুবই অসুস্থ। এ অবস্থায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। ডাক্তারি রিপোর্টে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেলে মামলায় বিষয়টি যুক্ত করা হবে। গ্রেপ্তার মোসলেম উদ্দিনকে বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।' অপরাধে জড়িত অন্যান্যদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি জানান।