চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মামুন আলী (কিং আলী) নামের বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয় মহানগর হাকিম আলমগীর হোসেনের আদালতে থানায় নির্যাতন, চাঁদা দাবি ও মাল লুটের অভিযোগ এনে মামলা করেন তিনি।
মামুন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। চাঁদা না পেয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট মামলায় ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করে পাহাড়তলী থানার পুলিশ।
এই মামলায় জামিন নিয়ে কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হন তিনি। এরপর পাহাড়তলী থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন মামুন।
মামলায় পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আজাদ, উপপরিদর্শক (এসআই) মানিক ঘোষ, বন্দর থানার উপপরিদর্শক মো. আসাদুল হক, কিশোর মজুমদার, খাতুনগঞ্জের এস এস ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক আরিফ মঈনুদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আমান ও সুপারভাইজার দিদার হোসেন সজিকে আসামি করা হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আশরাফুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, চাঁদা দাবি ও থানায় নিয়ে নির্যাতন এবং মাল লুটের অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়েছে।
আসামিরা মামুনের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়। আসামিরা তার ডিপো থেকে পাঁচ কোটি টাকার পাথর নেন। এসব অভিযোগে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তিনজন উপপরিদর্শকসহ আটজনকে আসামি করা হয়। মামলার আবেদন গ্রহণ করে আদালত সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১০ অক্টোবর বন্দর থানার জিএইচ এন্টারপ্রাইজ থেকে ২০ হাজার টন পাথর কিনে পাহাড়তলীর টল রোডের কিং আলী গ্রুপের ডিপোতে রাখেন বাদী। একই বছরের ১৭ অক্টোবর আসামিরা ডিপোর কার্যক্রমে বাধা দেন। মামলার বাদী প্রতিবাদ করলে পাহাড়তলী থানার এসআই মানিক ঘোষ ওসির সঙ্গে দেখা করতে বলেন। সন্ধ্যায় বাদী ওসির কাছে গেলে পাথর কেনার রসিদ ও বাদীর সব জায়গার মূল্য ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ১ শতাংশ, অর্থাৎ এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন।
কিন্তু বাদী চাঁদা দিতে অসম্মতি জানিয়ে থানা ত্যাগ করেন।
ওই দিন রাত ১০টার দিকে এসআই মানিক ঘোষ অতি দ্রুত থানায় গিয়ে চাঁদার টাকা দিতে বলেন। একই সঙ্গে বাদীর করা আগের একটি মামলা থেকে হালিশহর থানার সাবেক ওসি প্রণব চৌধুরীর নাম বাদ দিতে বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় বাদীকে থানায় আটকে মারধর করা হয়। এ সময় শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা টিপে ধরা এবং সারা রাত নির্যাতন করায় বাদী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরদিন তাকে পাহাড়তলী থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া আসামিরা মামলার বাদীর ডিপো থেকে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টাকার ২০ হাজার টন পাথর, মাটি, স্কেলসহ অনেক মাল লুট করে নিয়ে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।