রেলপথে সিলেট থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের দূরত্ব ৩০০ কিলোমিটার। সিলেট-ঢাকা-সিলেট পথে চলা একমাত্র মেইল ট্র্রেনটির নাম ‘সুরমা মেইল’। চলার পথে ট্রেনটি ৫০টির মতো স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়।
আজ রবিবার সিলেট থেকে ঢাকা অভিমুখী ট্রেনটিতে যাত্রীদের জন্য ছিল মাত্র দেড়টি বগি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনটি ১০ ঘণ্টার বেশি বিলম্বে পৌঁছায়। ঢাকা যেতে ট্রেনটির বিলম্ব আরো বাড়বে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে দেখা যায়, ট্রেনটির মোট ছয়টি বগির মধ্যে তিনটিই মালবাহী। একটিতে রেলওয়ে মেইল সার্ভিসের (আরএমএস) বিশেষ বগি।
একটির অর্ধেক বগিতে গার্ড ব্রেক ও মালামাল রাখার জায়গা। বাকি দেড় বগি যাত্রীদের বসার জন্য বরাদ্দ। যাতে সিট আছে ১০০টির মতো। বসে ও দাঁড়িয়ে মাত্র দুই থেকে আড়াই শ যাত্রী একসঙ্গে যাতায়ত করতে পারে ট্রেনটিতে।
৯ ঘণ্টার বেশি বিলম্বে ট্রেনটি দুপুর ২টা ৯ মিনিটে আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে প্রবেশ করে। লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) ঘুরিয়ে ট্রেনটি বিকেল ৩টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বেলা পৌনে ৪টায় ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ছাড়ে।
চলার পথে যাত্রীরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানান। একইসঙ্গে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের দাবিও করেন তারা।
এটিকে ভোগান্তির ট্রেন উল্লেখ করেন একাধিক যাত্রী। তারা ‘নিরাপদ বাহন’ হিসেবে পরিচিত ট্রেনকে আরো ভালো সার্ভিস দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। এত বেশি দূরত্বে চলাচলকারী একটি ট্রেনে মাত্র দেড় বগি যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ রাখার বিষয়টি তারা ‘হাস্যকর’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, একই ট্রেন, অর্থাৎ একটি রেক সিলেট-ঢাকা-সিলেট পথে চলাচল করে। যে কারণে প্রায়ই বেশ বিলম্ব হয়। ট্রেনটি প্রতিদিন ঢাকা ও সিলেট থেকে ছেড়ে যায়। সিলেট থেকে রাত ৮টা ২০ মিনিটে ও ঢাকা থেকে সোয়া ৯টায় ছাড়ে ট্রেনটি। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছার পর আবার ফিরতি পথে যায়। শনিবার দুপুরে সিলেট পৌঁছার কথা থাকলেও সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে পৌঁছায় ট্রেনটি। যে কারণে ফেরার নির্ধারিত সময় ৮টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি সিলেট থেকে ছাড়তে পারেনি।
আরো পড়ুন
সাশ্রয়ী দামে আধুনিক ফার্নিচার সরবরাহ করবে সরকার : রিজওয়ানা
ট্রেনযাত্রী মো. জামাল জানান, তিনি মাজার জিয়ারত করতে ঢাকা থেকে সিলেট যান। সুরমা মেইল ট্রেনটি শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা। সেই থেকে তিনি অপেক্ষা করছিলেন। শেষ পর্যন্ত ভোর ৪টায় ট্রেনটি সিলেট থেকে ছাড়ে। পথে বেশিরভাগ স্টেশনেই এটি যাত্রাবিরতি দেয় এবং অনেক স্টেশনেই দীর্ঘ সময় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এ কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। কখন ঢাকায় পৌঁছাবে তার কোনো ঠিক নেই।’
মো. জামির হোসেন নামে আরেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ট্রেনে খুব বিরক্ত লাগছে। এই রোজার মধ্যে খুব কষ্ট হচ্ছে। ট্রেন কখন ঢাকায় পৌঁছাবে এর কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। এভাবে চললে ট্রেনের প্রতি মানুষের ভরসা উঠে যাবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে কথা হয় ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) মো. ইমরান হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ট্রেনটি শনিবার নির্ধারিত সময় থেকে অনেক দেরিতে সিলেট পৌঁছায়। যে কারণে আসার পথেও দেরি হয়। আখাউড়া থেকে ভোর ৫টার আগে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি বিকেল ৩টায় ছাড়ে।’