টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) জটিলতায় ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পাচ্ছেন না বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার এমপিওভুক্ত সহস্রাধিক শিক্ষক কর্মচারী। এছাড়া গত চার মাস ধরে নিয়মিত বেতন-ভাতাও পাচ্ছেন না অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী।
ঈদুল ফিতরের আগে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) শেষ কর্মদিবস থাকলেও দুপুর ২টা পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে এসব শিক্ষক-কর্মচারীর ঈদ কাটবে হতাশায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, মির্জাপুর উপজেলায় ৫৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১০টি কলেজ এবং ১৪টি দাখিল মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ১ হাজার ৩৭০ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। এসব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা প্রাপ্তি সহজ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর সরাসরি ব্যাংকে ইএফটির মাধ্যমে দেওয়ার জন্য গত বছরের জুলাই মাস থেকে কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর নানা জটিলতায় তাদের বেতন আটকে যায়।
বিপাকে পড়েন শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রথম ধাপে কিছু শিক্ষক-কর্মচারী ডিসেম্বর মাসের বেতন পেলেও পরবর্তী সময়ে আবার তা আটকে যায়। কবে নাগাদ ইএফটি চালু হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
ইএফটি জটিলতায় জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের বেতন এবং ঈদুল ফিতরের বোনাস এখনও পাননি তারা।
ঈদের আগে ২৭ মার্চের শেষ কর্মদিবসে বেতন-বোনাস না পাওয়ায় এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষকদের মধ্যে আব্দুল কাদের খান, শিরিন আক্তার, ফরিদ হোসেন, কামরুল সঠিকভাবে তথ্য দেওয়ার পরও ইএফটি জটিলতার কারণ তাদের বোধগম্য নয়।
টাঙ্গাইল জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও রানাশাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিকুর রহমান বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সঠিক তথ্য দেওয়া হলেও ইএফটি জটিলতার কারণে উপজেলায় সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী গত চার মাস যাবত বেতন ও ঈদ বোনাস না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সারাদেশে চার লাখ শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে প্রথম ধাপে এক লাখ ৫৮ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী বেতন পেয়েছেন। ইএফটি জটিলতার কারণে মন্ত্রণালয় সব শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-বোনাস দিতে পারছেন না।
জটিলতা নিরসনে মন্ত্রণালয় কাজ করছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের এ সমস্যা সমাধান হবে। এছাড়া যাদের তথ্যে ভুল রয়েছে তাদের সংশোধন করতে হবে। তা সংশোধন করা না হলে তাদের বেতন ভাতা পেতে সময় লাগবে বলে তিনি জানান।