বরগুনার তালতলীতে যৌতুকের জন্য শারমিন নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ শারমিন বর্তমানে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছে পরিবার।
সোমবার (২৪ মার্চ) উপজেলার কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝাড়াখালী গ্রামে শারমিনের শ্বশুরবাড়িতে ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
আহত গৃহবধূ শারমিন উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের তুলাতলী গ্রামের বাসিন্দা জাফর হাওলাদারের মেয়ে।
আহত শারমিন জানান, দক্ষিণ ঝাড়াখালী গ্রামের জাহাঙ্গীর আকনের ছেলে শাকিব আকনের সঙ্গে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর গত বছরের ২২ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করি।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য পুত্রবধূকে মানসিক নির্যাতন শুরু করেন শাশুড়ি ফাহিমা বেগম ও শ্বশুর জাহাঙ্গীর আকন। শুরুতে স্বামী শাকিব এর প্রতিবাদ করলেও এরপর তার বাবা-মা বলতে থাকেন তাদের ছেলেকে আবার বিয়ে করাবে।
প্রতিনিয়ত বিয়ের কথা বলার পর স্বামী শাকিব বরগুনায় জান্নাত নামের একটি মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
গত ২৪ মার্চ স্বামী শাকিব ব্যবসা করবে বলে আমাকে বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। যৌতুক এনে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় আমার ওপর শ্বশুর জাহাঙ্গীর আকন, শাশুড়ি ফাহিমা, জা শারমিন বেগম ও ভাসুর শাহীন আকন অমানুষিক নির্যাতন চালায়। মারধরে একপর্যায়ে আমি গুরুতর আহত হলে আমাকে চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে বাসায় বন্দি করে রাখেন।
বাবার বাড়িতে টাকা আনতে যাই বলে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) কৌশলে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে চলে আসি। রাতে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হলে পরিবারের লোকজন তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে ভর্তি করে দেন।
ভুক্তভোগীর বোন সাবিনা বলেন, আমার বোনকে যৌতুকের জন্য যারা নির্যাতন করেছে তাদের আমি শাস্তি চাই।
তবে যৌতুকের কথা অস্বীকার করলেও মারধরের কথা স্বীকার করে স্বামী শাকিব ও শাশুড়ি ফাহিমা বেগম বলেন, শারমিনকে কয়েকটি চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে, তাছাড়া আর কিছুই না।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ওই বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।