বিভিন্ন দেশে ঈদের দিন কিভাবে নির্ধারিত হয়

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিভিন্ন দেশে ঈদের দিন কিভাবে নির্ধারিত হয়
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ঈদুল ফিতর মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব, যা পবিত্র রমজান মাসের সমাপ্তির পর উদযাপিত হয়। তবে এই উৎসবের তারিখ নির্ধারণের প্রক্রিয়া অনেকের কাছে জটিল মনে হতে পারে, কারণ এটি নতুন চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। বিশ্বের ১৮০ কোটিরও বেশি মুসলমান ইসলামিক চন্দ্র বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করেন, যা সৌর বর্ষপঞ্জির চেয়ে ভিন্ন। ফলে বিভিন্ন দেশে ঈদ কখন উদযাপিত হবে তা নিয়ে পার্থক্য দেখা যায়।

ঈদের তারিখ নির্ধারণের পদ্ধতি
ইসলামিক ক্যালেন্ডার ১২ মাসের হলেও এটি চন্দ্রচক্র অনুসারে চলে, যা প্রতিবছর সৌর বর্ষপঞ্জির তুলনায় প্রায় ১১ দিন কম হয়। রমজান মাস শেষে শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখা গেলে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। তবে আবহাওয়া, ভৌগোলিক অবস্থান এবং চাঁদ দেখার বিভিন্ন পদ্ধতির কারণে ভিন্ন দেশে ঈদ ভিন্ন দিনে হতে পারে।

নতুন চাঁদ দেখা ও তার গুরুত্ব
ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণের প্রধান উপায় হলো নতুন চাঁদ দেখা।

কিছু দেশে চাঁদ খালি চোখে বা টেলিস্কোপের সাহায্যে দেখার ওপর নির্ভর করে। অন্য দেশগুলো জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক গণনার ভিত্তিতে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করে।

কিছু মুসলিম সম্প্রদায় সৌদি আরব বা অন্যান্য মুসলিম দেশের ঘোষণার ওপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন দেশে ঈদের তারিখ নির্ধারণের পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো—

সৌদি আরব
সৌদি আরব ইসলামিক বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ, যেখানে খালি চোখে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে চাঁদ দেখার সত্যতা যাচাই করে এবং সে অনুযায়ী ঈদের দিন ঘোষণা করে। সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত অনেক মুসলিম দেশ অনুসরণ করে।

ইরান
ইরান, যা শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ, সরকারিভাবে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করে। তারা চাঁদ দেখার পাশাপাশি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক হিসাবও বিবেচনায় নেয়।

ইরাক
ইরাকে শিয়া ও সুন্নি মুসলিমরা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে ঈদের তারিখ নির্ধারণ করেন।

শিয়াদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা গ্র্যান্ড আয়াতোল্লাহ আলি আল-সিসতানি ঈদের ঘোষণা দেন, আর সুন্নিরা তাদের ধর্মীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিয়া ও সুন্নিরা একসঙ্গে ঈদ পালন করছে।

তুরস্ক
তুরস্ক সরকারিভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। এখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানভিত্তিক গণনার মাধ্যমে ঈদের তারিখ আগেই ঘোষণা করা হয়। ফলে ঈদের নির্দিষ্ট দিন সম্পর্কে জনগণের পূর্বধারণা থাকে।

মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া
এই দেশগুলোর সরকার বিশেষ চাঁদ দেখা কমিটি গঠন করে। কমিটি নির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে চাঁদ দেখার পর সরকারিভাবে ঈদের তারিখ ঘোষণা করে।

পাকিস্তান
পাকিস্তান ও বাংলাদেশে চাঁদ দেখা কমিটি সারাদেশ থেকে চাঁদ দেখার তথ্য সংগ্রহ করে ঈদের ঘোষণা দেয়। তবে অনেক সময় অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন সিদ্ধান্ত দেখা যায়।

ইউরোপ ও আমেরিকা
পশ্চিমা দেশগুলোর মুসলিমরা সাধারণত তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করেন। অনেক অভিবাসী মুসলিম তাদের মাতৃভূমির সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেন, আবার অনেকে সৌদি আরব বা স্থানীয় ইসলামী সংগঠনের ঘোষণার ওপর নির্ভর করেন।

একই দিনে ঈদ উদযাপনের চ্যালেঞ্জ
বিশ্বের সব মুসলিম যদি একই দিনে ঈদ উদযাপন করতে চান, তাহলে একটি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তবে চাঁদ দেখার ভিন্নতা, স্থানীয় ধর্মীয় সিদ্ধান্ত, সাংস্কৃতিক পার্থক্য এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাবের ভিত্তিতে ঈদ উদযাপনের তারিখ বিভিন্ন দেশে আলাদা হতে পারে।

ঈদুল ফিতর ইসলামের অন্যতম আনন্দঘন উৎসব, যার তারিখ নির্ধারণের পদ্ধতি দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে। যদিও চাঁদ দেখা এর মূল ভিত্তি, তবে আধুনিক প্রযুক্তি ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের ব্যবহারে অনেক দেশ আগেভাগেই ঈদের তারিখ ঘোষণা করে। বিভিন্ন দেশের সিদ্ধান্তের পার্থক্যের ফলে ঈদ একই দিনে উদযাপিত না হলেও, এর মূল তাৎপর্য একই থাকে—এটি একটি ঐক্যের প্রতীক, যেখানে মুসলিমরা পরস্পরের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

২০০০ বছরের পুরনো কঙ্কালের ডিএনএ থেকে মিলল যত চমকপ্রদ তথ্য

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
২০০০ বছরের পুরনো কঙ্কালের ডিএনএ থেকে মিলল যত চমকপ্রদ তথ্য
ক্যামব্রিজশায়ারে পাওয়া দুই হাজার বছরের পুরনো কঙ্কাল। ছবি : মোলা হেডল্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার/বিবিসি

২০১৭ সালের কথা। যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ ও হান্টিংডনের মধ্যকার সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির সময় একটি প্রাচীন দেহাবশেষ পাওয়া যায়। শুরুতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা ভেবেছিলেন, এটি হয়তো স্থানীয় কোনো সাধারণ মানুষের মরদেহ, যা সময়ের আবর্তনে ফসিলে রূপান্তরিত হয়েছে। ওই দেহাবশেষের বয়স আন্দাজ করা যায়নি তখনো।

কিন্তু গবেষণায় দেখা গেল, ক্যামব্রিজশায়ারে পাওয়া কঙ্কালটি দুই হাজার বছরের পুরনো এবং এটি সারমাশিয়ান নামে এক যাযাবর জাতিগোষ্ঠীর পুরুষের কঙ্কাল। এ তথ্য তখন রীতিমতো দ্বিধায় ফেলে দেয় গবেষকদের। কারণ সারমাশিয়ানরা ছিল পারস্য ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী, যাদের বসবাস ছিল রোমান সাম্রাজ্যের আরেক প্রান্ত বর্তমান রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে। অশ্বারোহী ও যোদ্ধা হিসেবে খ্যাতি ছিল তাদের।

আজ থেকে দুই হাজার বছর আগে এখনকার রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে জন্ম নেওয়া এক যুবক কিভাবে দুই হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্ব পাড়ি দিয়ে এখনকার ইংল্যান্ডে পৌঁছেছিলেন, তা এক বিরাট প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছিল গবেষকদের সামনে। আর সে প্রশ্নের উত্তর তারা খুঁজেছেন দক্ষ গোয়েন্দাদের মতো।

সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজি জার্নালে তাদের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ নিয়ে চমকপ্রদ সব তথ্য। প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাদের আবিষ্কৃত কঙ্কালটির নাম দিয়েছেন অফোর্ড ক্লুনি ২০৩৬৪৫, যা মূলত ক্যামব্রিজশায়ারের ওই গ্রাম আর নমুনা সংখ্যার মিশেল।

কঙ্কালের জাতিগত পরিচয় জানা গেল যেভাবে
ক্যামব্রিজশায়ারে একটা নালার মতো জায়গায় পাওয়া গিয়েছিল দেহাবশেষটি। সঙ্গে এমন কিছু ছিল না, যা দিয়ে তার পরিচয় বা আবাস সম্পর্কে কোনো ধারণা পাওয়া যায়। পুরো কঙ্কালের মধ্যে সবচে সুরক্ষিত অবস্থায় ছিলো তার কানের ভেতরের দিকের হাড়। ওই হাড়েরই একটি ছোট টুকরা থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করেছিলেন লন্ডনের ফ্র্যান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের অ্যানসিয়েন্ট জেনোমিক ল্যাবরেটরির ড. মারিনা সিলভা।

ড. সিলভার ল্যাব থেকে পাওয়া বিশ্লেষণই প্রথম জানান দেয়, কঙ্কালের মানুষটি আসলে রোমান সাম্রাজ্যের দূরতম এক প্রান্ত থেকে এসেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘কোনো জীবিত মানুষের ডিএনএ টেস্ট করার মতো নয় ব্যাপারটা। কারণ এর ডিএনএ একরকম ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রথমই যেটা চোখে পড়ল, অন্য রোমানো-ব্রিটিশদের চেয়ে জিনগতভাবে অনেক আলাদা এই মানুষটি।’

আগে ঐতিহাসিক ঘটনা সম্পর্কে ধারণা পেতে দালিলিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণপত্রের ওপর নির্ভর করতে হতো, আর সেসবে মোটা দাগে আর্থিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালীদের কথাই থাকে। তবে হাল আমলে গবেষণার পদ্ধতিগত উৎকর্ষের কারণে ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমেই এখন সেসব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। বড় বড় ঐতিহাসিক ঘটনার নেপথ্যে থাকা সাধারণ মানুষের অজানা গল্পও বের করে আনা সম্ভব হয় এখন। যেমন হাড়ের ফসিলে লুকিয়ে থাকা হাজার বছরের পুরনো জেনেটিক কোড বলে দিতে পারে যে কারো নৃতাত্ত্বিক পরিচয়।

অফোর্ড ক্লুনিকে নিয়ে করা গবেষণাটিতে তো রীতিমতো গোয়েন্দা গল্পের আঁচ পাওয়া যায়, যেন এটি একটি ফরেনসিক তদন্তপ্রক্রিয়া। একজন সাধারণ মানুষ, যিনি ১২৬ থেকে ২২৮ সালের মধ্যকার কোনো সময়ে তার ২৫ বছরের জীবন কাটিয়েছেন। রোমানদের অধিকৃত ব্রিটেনের ক্যামব্রিজশায়ারে নালার মত কোনো এক জলাধারে যার কবর হয়েছিল। তার জীবন সম্পর্কে দুই হাজার বছর পরে এসে জানা যাচ্ছে এই গবেষণার বদৌলতে।

পিতৃভূমি থেকে এতটা দূরে যে এসেছিলেন, তা কিভাবে নিশ্চিত হওয়া গেল
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আরেকটি গবেষণা কৌশল ব্যবহার করেন। তারা ফসিল হয়ে যাওয়া মানুষটির দাঁত পরীক্ষা করেন, যাতে ওই ব্যক্তির গ্রহণ করা খাদ্যবস্তুর রাসায়নিক ছাপ পাওয়া যায়।

বিশ্লেষণে উঠে আসে, পাঁচ বছর বয়স থেকে পরবর্তী সময়ে তার খাদ্যাভ্যাস কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। গাছের কাণ্ডের চক্রাকার দাগ থেকে যেমন সেটি কী ধরনের পরিবেশ, আবহাওয়া আর সময়ের মধ্য দিয়ে এসেছে তা জানা যায়। একইভাবে মানুষের দাঁতের প্রতিটি স্তরেও সেটি কী ধরনের উপাদানের সংস্পর্শে এসেছে তার প্রভাব থেকে যায়। তার ফলে জানা যায় ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাসের ধরন।

ছয় বছর বয়স পর্যন্ত জোয়ার ও বাজরার মতো শস্যই ছিল অফোর্ডের প্রধান খাদ্য। তখনকার দিনে সারমাশিয়ান অধ্যুষিত অঞ্চলে এই ধরনের শস্য প্রচুর পরিমাণে জন্মাত। গবেষণা দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক জ্যানেট মন্টগোমারি বলেন, ‘কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার খাদ্য তালিকায় এসবের বদলে গমের আধিক্য দেখা দিয়েছিল, যা মূলত পশ্চিম ইউরোপের ফসল।’

অধ্যাপক জ্যানেট আরো বলেন, ‘এ থেকে আমরা জানতে পারি, তার গোষ্ঠীর মধ্যে হয়তো তিনিই প্রথম ব্রিটেনে এসেছিলেন। পরিণত বয়সে পশ্চিমের অভিবাসী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার খাদ্য তালিকা থেকে আগের শস্যগুলো বাদ পড়ে গিয়েছিল।’

আর ঐতিহাসিক নানা তথ্য-প্রমাণে জানা যায়, ওই সময়ে রোমান সেনাবাহিনীতে কর্মরত সারমাশিয়ানদের একটি দলকে ব্রিটেনে মোতায়েন করা হয়েছিল। এমন ঐতিহাসিক তথ্য থেকে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, অফোর্ড কোনো অশ্বারোহীর ছলে হতে পারেন। কিংবা দাসও হয়ে থাকতে পারেন।

খননকাজে নেতৃত্ব দেয়া মিউজিয়াম অব লন্ডনের আর্কিওলজি বিভাগের ড. অ্যালেক্স স্মিথের মতে, ডিএনএর সূত্রে এমন একটা ঘটনাপ্রবাহের ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত মেলে। তিনি বিবিসিকে বলেন, ‘এটাই প্রথম বায়োলজিক্যাল এভিডেন্স।’

ড. স্মিথ বলছিলেন, ‘ডিএনএ প্রাপ্তি ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের কৌশলের সুবাদে আমরা এখন অন্য বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে পারছি। জানতে পারছি রোমান শাসনামলে সমাজের গঠন, বিন্যাস ও বিবর্তনের ব্যাপারে। বোঝা যাচ্ছে, শুধু শহরগুলোতেই নয়, সে সময়ের গ্রামাঞ্চলেও ব্যাপক যাতায়াত ও স্থানান্তর ঘটত মানুষের।’

ক্রিক ইনস্টিটিউটের অ্যানসিয়েন্ট জেনোমিক ল্যাবরেটরির প্রধান ড. পন্টাস স্কগল্যান্ড বিবিসি নিউজকে বলেন, ‘নতুন প্রযুক্তি ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ায় রূপান্তর ঘটিয়ে চলেছে।’

ড. স্কগলান্ডের ভাষ্য, ‘প্রাচীন ডিএনএর হালনাগাদ বিশ্লেষণ প্রস্তর আর ব্রোঞ্জ যুগ সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা বাড়িয়েছে। আর এখন, উন্নত কলাকৌশলের কারণে রোমান ও পরবর্তী সময়টাও ক্রমশ স্পষ্টতর হয়ে ধরা দিচ্ছে আমাদের কাছে।’

মন্তব্য

গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিতে চায় ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা দখলে নিতে চায় ইসরায়েল
ছবিসূত্র : এএফপি

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজায় সামরিক অভিযানের একটি বড় সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি আজ বুধবার উপত্যকায় সামরিক অভিযান জোরদার করার ঘোষণা দিয়ে আরো বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ‘বিস্তীর্ণ এলাকা’ দখল করবে।

এক বিবৃতিতে কাটজ বলেছেন, যুদ্ধরত এলাকাগুলো থেকে ফিলিস্তিনি জনসংখ্যা স্থানান্তরিত করা হবে। যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র উপায় হামাসকে নির্মূল।

তিনি ইসরায়েলি জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য গাজাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, ইসরায়েল কতটুকু ভূখণ্ড দখল করতে চায়।

এদিকে গাজার উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় সকাল থেকে ১৫ জন নিহত হয়েছে। গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, আজ বুধবার যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দুটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে।

বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিকে বলেছেন, ‘দক্ষিণ গাজার মধ্য খান ইউনিসে বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী একটি বাড়িতে দখলদার বাহিনী (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) বোমা হামলা চালালে ভোরে শিশুসহ ১৩ জন শহীদ হয়। মধ্য গাজার নুসাইরাত ক্যাম্পের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় আরো দুজন নিহত হয়েছে।’

ইসরায়েল ইতিমধ্যেই গাজার অভ্যন্তরে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাফার জোন তৈরি করেছে। যুদ্ধের আগে ছিটমহলের প্রান্তের চারপাশে বিদ্যমান একটি এলাকা সম্প্রসারণ করেছে এবং গাজার মাঝখানে তথাকথিত নেটজারিম করিডরে একটি বৃহৎ নিরাপত্তা এলাকা যুক্ত করেছে।

একই সময়ে ইসরায়েলি নেতারা বলেছেন, তারা ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছায় প্রস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সামরিক চাপ প্রয়োগই বাকি ৫৯ জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার সর্বোত্তম উপায়।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

‘স্বাধীনতা দিবস’-এ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে প্রস্তুত ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘স্বাধীনতা দিবস’-এ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে প্রস্তুত ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : এএফপি

 মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বুধবার ‘স্বাধীনতা দিবস’-এর দিন নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে প্রস্তুত। তিনি এই বুধবারকে ‘লিবারেশন ডে’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন।  ট্রাম্প রিসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপে করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, এই শুল্কের ফলে সব দেশই প্রভাবিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প একের পর এক বিভিন্ন দেশের পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করেছেন। চীন থেকে শুরু করে কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের ঐতিহাসিক মিত্র দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ তীব্রতর হচ্ছে, তাই সবার দৃষ্টি বুধবারের দিকে। এ নিয়ে শেষ মুহূর্তে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।

এর ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যযুদ্ধ সূত্রপাত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ওয়াল স্ট্রিটের বাজার বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয় সময় বিকেল ৪টায় হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে  ট্রাম্প তার প্রস্তাবগুলো নিয়ে বৈঠক করবেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে অন্যায্য বিদেশি প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করবেন এবং মার্কিন শিল্পের একটি নতুন ‘স্বর্ণযুগ’ তৈরি করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ছোট-বড় সব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করবেন।

 অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বন্ধু ও শত্রু উভয়ের সঙ্গেই আমেরিকার বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা মোকাবেলায় এটিই একমাত্র হাতিয়ার। তিনি আরো যুক্তি দিয়েছেন, শুল্ক মার্কিন শিল্পগুলোকে অন্যায্য বিদেশি প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু অর্থনীতিবিদরা জোর দিয়ে বলেছেন, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত হারে বিস্তৃত শুল্ক বিপরীতমুখী হতে পারে।

সমালোচকরা বলছেন, আমদানিকারকরা এই খরচ বহন করলে শুধু মার্কিন ভোক্তাদের ওপরই এর প্রভাব পড়বে না, বরং তারা দেশে ও বিদেশে ক্ষতিকর মন্দার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ট্রাম্পের ঘোষণার কয়েক দিন আগে থেকেই বিশ্ববাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

অর্থনীতিবিদ সতর্ক করে দিয়েছেন, নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে যেতে পারে। মূল্যস্ফীতিও বাড়তে পারে। আবার বিভিন্ন দেশও পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে অন্য দেশগুলো যে ধরনের শুল্ক আরোপ করে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ শুল্ক আরোপিত হবে বলেই ট্রাম্প প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন।

এদিকে সময়সীমা ঘনিয়ে আসার  সঙ্গে সঙ্গেই মার্কিন মিডিয়া জানিয়েছে, ট্রাম্প ২০ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথাও বিবেচনা করছেন এবং কিছু দেশের ওপর অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। 

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে ঘোষণার প্রাক্কালে শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। তিনি আরো জানান, বুধবারের ঘোষণার পরে ‘অবিলম্বে’ শুল্ক কার্যকর হবে।  ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে বেশ কয়েকটি শুল্ক ঘোষণা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। তবে তার পরিকল্পনা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়েছে। 

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

ট্রেন থেকে ছোড়া পানির বোতল বুকে লেগে কিশোরের মৃত্যু

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রেন থেকে ছোড়া পানির বোতল বুকে লেগে কিশোরের মৃত্যু

চলন্ত ট্রেন থেকে ছোড়া পানিভর্তি বোতল লেগে বাদল সন্তোষভাই ঠাকুর (১৪) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের গুজরাটের রাজকোটের শাপার-ভেরাভাল এলাকায় সোমবার এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেলে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই দিন বাড়ির বাগানে বাদল ও তার এক বন্ধু খেলছিল।

এক পর্যায়ে তারা রেললাইনের কাছে চলে যায়। সেই সময় ওই লাইন দিয়ে ভেরাভাল থেকে বান্দ্রার দিকে একটি ট্রেন যাচ্ছিল। হঠাৎ দ্রুতগামী ট্রেনটির এক যাত্রী পানিভর্তি একটি বোতল জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলে। বোতলটি ছিটকে গিয়ে বাদলের বুকে লাগে।
এতে তাৎক্ষণিক অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, বাদল তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিল। মধ্য প্রদেশের বাসিন্দা হলেও ব্যবসার সূত্রে দুই বছর ধরে গুজরাটে বসবাস করছিলেন তারা।

এ ঘটনায় একটি মামলা করেছে শাপার পুলিশ। মামলাটি তদন্তাধীন। পুলিশ নিহতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজকোট সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ