উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগী পৌর শহরের যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা। পৌর শহরের প্রবেশদ্বারে, বাস স্ট্যান্ডে, লঞ্চঘাট এলাকাসহ শহরের ২০-২৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ময়লা ফেলায় এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য হুমকিতে পড়েছে। দুর্গন্ধে মানুষ ও পথচারীরা অতিষ্ঠ।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, একাধিকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে বলার পড়েও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
বেতাগী পৌরসভা ১৯৯৯ সালের ১৮ মার্চ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালের ৩১ মে ‘খ’ শ্রেণি এবং ২০১৯ সালের ২ জুলাই ‘ক’ শ্রেণি বা প্রথম শ্রেণি পৌরসভায় উন্নতি হয় বেতাগী পৌরসভার আয়তন ৭ দশমিক ৭২ বর্গ কিলোমিটার। বেতাগী পৌরসভায় মোট জনসংখ্যা ১২ হাজার ৭৮৬ জন।
আধুনিক নাগরিক সুবিধা পেতে, ছেলে-মেয়েদের ভালো পড়ালেখা করাতে গ্রাম থেকে লোকজন বাসাবাড়ি ভাড়া নিয়ে শহরে অবস্থান করছেন। বর্তমানে শহরে ৩০ হাজারের বেশি লোকজন বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন
জুলাই বিপ্লবে শহীদ বাবুলের পরিবার পেল তারেক রহমানের ঈদ উপহার
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২৬ বছরেও গড়ে ওঠেনি আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান। নেই আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
পৌরসভার প্রবেশদ্বারে, বাস স্ট্যান্ডের পূর্বপাড় পল্লীবিদ্যুৎ আঞ্চলিক অফিসের সামনে, কালিবাড়ি এলাকার বিষখালী নদীর পাড়, লঞ্চঘাট এলাকা, হাসপাতাল গেট এলাকা, উপজেলা পরিষদ এলাকা, সবজিবাজার, মাছের বাজার, ভূমিসংলগ্ন এলাকাসহ শহরের ২০-২৫টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যানবাহনের চালক-যাত্রীরা দুর্গন্ধ সহ্য করতে না পেরে নাকে কাপড় চেপে যাচ্ছে। পথচারীরা এসব এলাকায় এক মিনিটের জন্যও দাঁড়ান না। ময়লার মধ্যে পড়ে আছে গরু ছাগলের মরদেহ। এর মধ্যেই টোকাইরা ময়লা থেকে তাদের কাঙ্ক্ষিত জিনিস খুঁজছে।
পৌর শহরেরঅটোরিকশাচালক কবির হোসেন বলেন, ‘আমি এ সড়কে গাড়ি চালাই। দুর্গন্ধে অবস্থা ভয়াবহ। যাত্রীরা উঠতে চান না।’
বেতাগী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হোসেন জানান, শহরে ঢোকার মূল রাস্তা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় এমন ভাগাড় সত্যি অশোভন।
আরো পড়ুন
জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়বেন প্রধান উপদেষ্টা
বাস স্ট্যান্ডের ময়লার ভাগাড়ের বিপরীত পাশে মুমি মনোহরি দোকানদার সুলতান আহমেদ বলেন, ‘ময়লার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ। এখানের অনেকেই শ্বাসকষ্টে ভুগছি। বারবার বলার পরেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ময়লা অপসরণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’
সুলতান আহমেদের মতো ময়লার ভাগাড়ের সামনের একাধিক দোকানদারের দাবি, পৌর অপসরণে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো জেরালো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ আমারুল বলেন, ‘খোলা ময়লা-আবর্জনা থেকে রোগ-জীবাণু বাতাসের মাধ্যমে মানুষ-পাখির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও ফুসফুসে বিভিন্ন জটিল রোগ হতে পারে।’
বেতাগী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজী বলেন, ‘পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই ময়লা অপসরণের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হবে।’
আরো পড়ুন
ঈদের জামাতে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা