নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা শহরে চলছে ১৪৪ ধারা। আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন। ১৪৪ ধারা চলাকালে আজ দুপুর পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানান, একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আহ্বানকে কেন্দ্র করে ওই উত্তেজনা দেখা দেয় জলঢাকা শহরে।
অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে উপজেলা প্রশাসন ওই ১৪৪ ধারা জারি করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
গরম নিয়ে দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অফিস
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জারিকরা পত্রে জানোনো হয়, ১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) জলঢাকা পেট্রল পাম্প এলাকা ও জলঢাকা সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক পক্ষ বিভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ আহ্বান করায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হলো।
উক্ত সময়ে এলাকায় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি যা দেশিয় কোনো অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যেকোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধের কথা জানানো হয় পত্রে।
একাধিক সূত্র জানায়, জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয়তাবাদী শক্তি ব্যানারে ঈদের দিন বিকেল থেকে পাঁচ দিনের ঈদ আনন্দ মেলার মেলার আয়োজন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ও তার সহযোগীরা।
মেলা আয়োজকদের অভিযোগ, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের নেতৃত্বে মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ও জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবু সাঈদ শাকিলসহ মেলা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের ওপর হামলা ও মেলায় ভাঙচুর চালানো হয়। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকাল ১০টায় থানার মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় মেলা আয়োজক কমিটি।
আরো পড়ুন
মালয়েশিয়ায় গ্যাস পাইপ ফেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
অপরদিকে জাতীয়তাবাদী শক্তি নাম ব্যবহার করে মেলার নামে চাঁদাবাজী ও অপকর্মের প্রতিবাদে একই সময়ে থানা মোড় সংলগ্ন সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা ও পৌর বিএনপি। উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আহ্বানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে শহরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গতকাল সোমবার রাতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করে বিবাদমান গ্রুপের কোনো পক্ষকে পাওয়া যায়নি। তবে জলঢাকা পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আহমেদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘জলঢাকা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচির আলমগীর হোসেন ও তার অনুসারীরা জাতীয়তাবাদী শক্তির ব্যানারে জলঢাকা সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাঁচ দিনের ঈদ আনন্দ মেলার আয়োজন করেন।
যা দলের উপজেলা ও জেলার নেতৃবৃন্দকে অবহিত না করেই করেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলামের নেতৃত্বে সোমবার রাতে ওই মেলার গেট ভেঙে দেওয়া হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।’
আরো পড়ুন
মায়ানমারে জরুরি ত্রাণের দ্বিতীয় চালান পাঠাল বাংলাদেশ
জলঢাকা থানার ওসি আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেন ১৪৪ ধারা জারি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’